আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের ফের বৈঠকের উদ্যোগকে স্বাগত জানালেন নির্যাতিতার বাবা!
বিশেষ প্রতিনিধি : সোমবার বিকেলে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যে বৈঠক ডাকা হয়েছে তাকে অভিনন্দন জানালেন নির্যাতিতার বাবা-মা। আরজিকর হাসপাতালে অভ্যন্তরে কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত দোষীদের শাস্তি এবং রাজ্যের সব চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবিতে ৩৫ দিন ধরে কর্মবিরতি করে চলেছেন জুনিয়র চিকিৎসকদের সংগঠন। এই অবস্থায় গত এক সপ্তাহ ধরে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছে জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ। এ বিক্ষোভ কর্মসূচির ফলে রাজ্য সরকার অনেকটাই ব্যাকফুটে চলে গেছে হাসপাতালগুলোর পরিষেবা লাটে উঠেছে বলে অভিযোগ।
এই অবস্থায় প্রথমে নবান্নে দ্বিতীয় বার কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠকে বসার প্রচেষ্টা হয়েছিল কিন্তু জুনিয়র চিকিৎসকদের লাইভ স্ট্রিমের দাবি এবং ভিডিওগ্রাফির দাবি কাছে রাজ্য সরকার নতি স্বীকার না করার ফলে দুটি বৈঠক ব্যর্থ হয়। এ দুটি বৈঠক না হওয়ার পরেই জুনিয়র চিকিৎসকরা সুপ্রিম কোর্টে দেশের অন্যতম সেরা আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংকে নিয়োগ করেন। এরপরই আবার নড়ে চড়ে বসে রাজ্য সরকার। গত দুদিন আগে কালীঘাটের বাড়িতে যে বৈঠকের হওয়ার কথা ছিল জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে সেখানেই প্রথমে লাইভ স্ট্রিম এবং ভিডিওগ্রাফির দাবিতে অনর থাকলেও শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে বিনা শর্তেই আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছিলেন জুনিয়ার চিকিৎসকরা। কিন্তু স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের প্রতিক্রিয়ার পর জুনিয়র চিকিৎসকরা কার্যত হতাশ হয়ে সেদিন বাড়ি ফিরে এসেছিল।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আর জি কর মেডিকেল কলেজের অভ্যন্তরে যে চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল তার বাবা-মা মনে করছে এবার অচল অবস্থা কাটার প্রয়োজন হয়েছে।
সোমবার সংবাদমাধ্যমকে নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘আমরা চাই দু’পক্ষেরই শুভবুদ্ধির উদয় হোক। সরকার এবং ডাক্তারদের মধ্যে এই স্নায়ুযুদ্ধ শেষ হোক। যারা আন্দোলন করছে, তারা আমার ছেলেমেয়ের মতো। আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে ওরা। আমরা চাইছি, এই সমস্যার কিছু একটা সমাধান বেরিয়ে আসুক। মুখ্যমন্ত্রী স্বচ্ছতার সঙ্গে আলোচনায় বসে সমস্যার সমাধান করুন। ডাক্তারদের দাবিদাওয়া মেনে নেওয়া হোক। আমরা এটাই চাই।’’
এর আগে শনিবারই আরজি কর-কাণ্ডে টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই। গ্রেফতার করা হয়েছে হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে। এ প্রসঙ্গে নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘আমরা প্রথম থেকেই পুলিশকে বার বার বলেছিলাম, এখনই দেহ দাহ করতে চাই না। সংরক্ষণ করতে চাই। কিন্তু পুলিশ আমাদের কথা শোনেনি। আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছিল। ৩০০ পুলিশের সঙ্গে আমরা বাড়ির দু’-তিন জন লোক কী করে পেরে উঠব? এখন টালা থানার ওসিকে সিবিআই গ্রেফতার করেছে। নিশ্চয়ই তারা কোনও প্রমাণ পেয়েছে, তাই এই গ্রেফতার।’’
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি কর মামলার শুনানি রয়েছে। নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের উপর আমাদের ১০০ শতাংশ ভরসা আছে। সিবিআইয়ের উপরেও ভরসা আছে। আশা করছি ন্যায়বিচার পাব।’’