কলকাতা 

বাঁকুড়ার নিট উত্তীর্ণ কৃতি ছাত্র মারুক খানকে ভর্তি না নিয়ে ফিরিয়ে দিলেন এসএসকেএমের ডিন, অবিলম্বে ভর্তি নিতে হবে দাবী বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির

শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিনিধি : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতই নিজেকে নিরপেক্ষ বলে দাবি করুক না কেন তার প্রশাসনের একটা অংশ কিন্তু এর রাজ্যের সংখ্যালঘুর সম্প্রদায় কে বঞ্চনা করে চলেছে এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই । মুখ্যমন্ত্রী নিজস্ব ভোট ব্যাংক বলে পরিচিত এই অংশের মানুষদের বঞ্চনার মধ্য দিয়ে তিনি এবং তার প্রশাসন কি বার্তা দিতে চাইছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সম্প্রতি মারুক খান নামে নিট উত্তীর্ণ এক ছাত্র কলকাতা এসএসকেএম এ কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে সুযোগ পেয়েছিলেন। পিছিয়ে পড়া জেলা হিসাবে পরিচিত বাঁকুড়ার সন্তান মারুফ খান। তিনি নিট পরীক্ষায় ৬৭০ নাম্বার পেয়েছেন। আর এই নম্বরের ভিত্তিতেই ওই কৃতি ছাত্রকে প্রথম কাউন্সিলিংয়ে অ্যালটমেন্ট লেটার দেওয়ার পরেও কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই ছাত্রকে ভর্তি না নিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। অবিলম্বে মারুফ খানকে এসএসকেএম হাসপাতালে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ দেওয়ার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী।

পশ্চিমবঙ্গের মেডিকেল কলেজ সহ বহু কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যাচ্ছে যে ভর্তির ক্ষেত্রে ওবিসি তালিকাভুক্ত ছেলেমেয়েরা বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের নন ক্রিমি লেয়ার সার্টিফিকেট পুনর্নবিকরণ করছে না বিভিন্ন সরকারী আধিকারিকেরা। তারা প্রায়ই হেনস্থার শিকার হচ্ছেন।

Advertisement

আমরা দেখছি একটি বিশেষ রাজনৈতিক মদতপুষ্ট গ্রুপ, যারা সংরক্ষণের বিরোধিতায় সরব, তারা চায় না সংখ্যালঘু পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় শিক্ষার সুযোগ পাক। অন্যদিকে, রাজ্য সরকার দীর্ঘদিন ধরে এই বিষয় নিয়ে টালবাহানা করেছে। মামলা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে অবগত করেনি। হাইকোর্টে উত্থাপন হবার পর সকলের নজরে আসে বিষয়টি। এখন সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। কিন্তু ১২-১৩ বছর সরকারে থাকার পরেও এই সরকার কোন সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। কোন কমিটি বা কমিশন তৈরি করে অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ওপর সমীক্ষা চালিয়ে রিপোর্ট জমা দেয়নি। এখন সুপ্রিম কোর্টে লড়তে গেলে তো সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে লড়তে হবে।

আমরা দাবি করছি যে মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় বা ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস ডিপার্টমেন্ট থেকে অবিলম্বে সমস্ত জেলাশাসক দপ্তর থেকে শুরু করে এসডিও দপ্তর, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হোক যে যারা ওবিসি সার্টিফিকেট পুনর্নবিকরণের জন্য নিয়ে আসছে, তাদের নন ক্রিমি লেয়ার সার্টিফিকেট দিয়ে দিতে হবে।

পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে রাজনীতি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। বিজেপির জুজু দেখিয়ে তিনি আসল বিষয় থেকে মানুষের নজর সরিয়ে দিচ্ছেন। আমরা চাই ওবিসি সংরক্ষণ বাড়ুক। সারা ভারতে যেখানে ২৭ শতাংশ সংরক্ষণ, এই রাজ্যে আছে ১৭ শতাংশ সংরক্ষণ। অনেক দেরিতে সংরক্ষণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। এই সংরক্ষণ অবিলম্বে বাড়িয়ে ২৭ শতাংশে নিয়ে যাওয়া দরকার। আর ওবিসি নিয়ে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে চেয়ারম্যান করে একটি কমিশন তৈরি হোক। সেই কমিশনের সদস্য থাকবে বিশেষজ্ঞরা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদ ইত্যাদি। সেই কমিশন ভালো করে বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিক। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের পক্ষে মামলাটি ভালোভাবে লড়া হোক।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ