কলকাতা 

নির্যাতিতার মৃত্যুর দিন আর জি কর কর্তাদের বিদেশি সিম থেকে বেশ কয়েকবার ফোন কেন? খতিয়ে দেখছে সিবিআই

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : আরজিকর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার পর বিদেশি সিমের মোবাইল থেকে বেশ কয়েকবার হাসপাতালের কর্তা ব্যক্তিদের ফোন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে।

সিবিআই সূত্রে দাবি, ৯ অগস্ট সকাল ১০টার পর থেকে আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ চিকিৎসক এবং আর জি করের আধিকারিকদের অনেকের সঙ্গেই ওই বিদেশি নম্বর থেকে কেউ কথা বলেন। সারা দিনই ওই নম্বর থেকে এমন ফোনালাপ হয় বলে সিবিআই সূত্রের খবর। অপরাধের পরে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা বা চিকিৎসকের শেষকৃত্য তড়িঘড়ি করার নেপথ্যে সেই নম্বর ব্যবহারকারীর ভূমিকা আছে কি না, তা এখন দেখছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।

Advertisement

তবে মুশকিল হচ্ছে বিদেশি সিম ব্যবহার করলে সাধারণত গ্রাহকের নাম-ঠিকানা পাওয়া সম্ভব হয় না। কারণ, বিদেশের সার্ভিস প্রোভাইডার গ্রাহকের তথ্য প্রকাশ করে না। সিবিআইয়ের এক কর্তা সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, “বিদেশে গিয়ে মোবাইল ফোনের হ্যান্ডসেটে প্রিপেড সিম ভরা হয়। এবং তা এ দেশে এনে ব্যবহার করা হয়। এ দেশে বিভিন্ন তদন্তে এমন ভিন্‌দেশি সিম কাজে লাগানোর কৌশল দেখা গিয়েছে।”

ওই কর্তার কথায়, ‘‘আর জি কর হাসপাতালের ক্ষেত্রে বিদেশি সিমটি দুবাই বা বাংলাদেশ থেকে নিয়ে আসা হতে পারে। ওই সিমের নম্বরটি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পাঠানো হয়েছে। কার নামে সিমটি কোথা থেকে নেওয়া হয়েছিল, তা বোঝার চেষ্টা করা হচ্ছে। ভিনদেশি প্রিপেড সিমে সাধারণত এককালীন মোটা টাকা ভরা হয়। তা ফুরিয়ে গেলে, ফের ব্যবহারের জন্য বিদেশে গিয়েই সিম রিচার্জ করতে হয়। কোনও অপরাধের পর সিমটাই হাপিস করে দেওয়া হয়েছে বলে এর আগে দেখা গিয়েছে।”

মনে করা হচ্ছে এই বিদেশীর সিম রহস্য গোয়েন্দারা বের করতে পারলেই তদন্তে দ্রুত গতি আসবে। কোন ব্যক্তি বিদেশি সিম ব্যবহার করে ঐদিন ফোন করেছিলেন বা আরজি কর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছিলেন তা বের করতে পারলে রহস্যের সমাধান হবে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।

 

তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ থেকে তদন্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ থেকে শেষকৃত্য— অনেক কিছু নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। বহু ক্ষেত্রে ঠিক পদ্ধতি মানা হয়নি বলে অভিযোগ। তদন্তে বাধা সৃষ্টির মতলব ছিল কি না, তা-ও সিবিআই খতিয়ে দেখছে। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘প্রাথমিক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল, তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে কিছু ভুলত্রুটি হয়েছিল। এখন মনে হচ্ছে, গুলিয়ে দেওয়ার খেলায় কোনও পাকা মাথার অস্তিত্ব কষ্টকল্পিত নয়।”

তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, এই সিম-ব্যবহারকারী এক জন ‘প্রভাবশালী’ হতেই পারেন। সরাসরি তদন্তে যুক্ত নন এমন কোনও পুলিশকর্তার ছায়াও ঘটনাক্রমের মধ্যে থাকতে পারে বলে তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি করা হচ্ছে।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ