ডাক্তারি পড়ুয়া ছাত্রীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য ক্ষমা চাইলেন তৃণমূল সাংসদ!
বিশেষ প্রতিনিধি : ডাক্তারি পড়ুয়া ছাত্রীদের বিরুদ্ধে অশালীন মন্তব্য করার দায়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন বারাসাতের মহিলা সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তিনি গত শুক্রবার এবিপি আনন্দের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘‘ছাত্রীদের কোলে বসিয়ে পাশ করিয়ে দেওয়ার একটা চল শুরু হয়েছিল। যার আমি তীব্র নিন্দা করি, ঘৃণা করি। আমার ছেলেরা নিন্দা করেছিল বলে তাদের কম নম্বর দেওয়া হয়েছিল। তারা আজ প্রথিতযশা চিকিৎসক। কিন্তু কোলে বসিয়ে পাশ করিয়ে দেওয়ার চলটা যে এখানে এসে দাঁড়াবে, উৎকোচ নিয়ে পাশ করানো হবে, কিংবা কেউ মুখ খোলার সাহস দেখালে যে তার থিসিস আটকে দেওয়া হবে, এমনটা আমি ভাবতে পারিনি।’’ প্রসঙ্গত, কাকলি নিজেও পড়াশোনা করেছেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ থেকেই।
তাঁর এই মন্তব্যের পরে ই চিকিৎসক মহলে তীব্র ক্ষোভ দেখা যায়। অবিলম্বে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন থেকে কাকলি ঘোষ দস্তিদার কে বহিষ্কার করতে হবে এ নিয়েও সরব হতে দেখা যায় কোন কোন চিকিৎসক সংগঠনকে। শনিবারই ইন্ডিয়ান সাইকিয়াট্রিক সোসাইটির চিকিৎসকেরা বিবৃতি দিয়ে জানান, কাকলির ওই মন্তব্য অসম্মানজনক এবং নিন্দনীয়। এই মন্তব্য মহিলা চিকিৎসকদের যোগ্যতা ও পরিশ্রমকে প্রশ্নচিহ্নের মুখে ফেলে দেয়। তাঁকে অবিলম্বে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন থেকে বহিষ্কারের দাবিও তোলেন তাঁরা।
একই সুরে কাকলির ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে সরব হয় ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফেডারেশনও। সংগঠনের তরফে সঞ্জয় হোম চৌধুরী এবং কৌশিক চাকী লিখিত বিবৃতি দিয়ে জানান, তাঁর এই মন্তব্য গোটা দেশের মহিলা চিকিৎসকদের জন্য অসম্মানজনক। লেখেন, ‘‘মন্তব্য প্রত্যাহার করার পাশাপাশি অবিলম্বে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে কাকলিকে।’’
এরপরই বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইছি। যদি ওই মন্তব্যে কারও আঘাত লেগে থাকে, তা হলে তার জন্য আমি দুঃখিত। আমি আমার মন্তব্য প্রত্যাহার করছি। আমি সব সময়েই মেয়েদের সুরক্ষা এবং অধিকার রক্ষার পক্ষেই কথা বলি।’’