আরজিকর মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের শিক্ষক দেবাশীষ সোম গুরুতর অসুস্থ হয়ে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি! গ্রেফতারি এড়াতেই কি?
বাংলার জনরব ডেস্ক : আর জি কর হাসপাতালের দুর্নীতি কাণ্ডের অন্যতম সন্দেহজন ব্যক্তি এবং ওই মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের শিক্ষক দেবাশীষ সোম গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাকে বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে সেখানে তার চিকিৎসা চলছে।সূত্রের খবর, আইসিইউতে রাখা হয়েছে দেবাশিসকে। রক্তের শর্করার মাত্রার হেরফের ঘটেছে। ডায়াবেটিক রোগী তিনি।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে আর্থিক অনিয়ম মামলার তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেই তদন্তেই সিবিআইয়ের আতশকাচের নীচে ছিলেন দেবাশিস। গত ২৬ অগস্ট তাঁর কেষ্টপুরের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত টানা তল্লাশি অভিযান শেষে তাঁকে নিয়ে নিজ়াম প্যালেসে গিয়েছিল সিবিআই। রাত পর্যন্ত সেখানেই ছিলেন তিনি। তার পরের দিন আবারও নিজ়াম প্যালেসে হাজিরা দেন দেবাশিস। সেই একই দিনে আরজি করের জোড়া মামলায় জেরা করা হয় তাঁকে। নিজ়াম প্যালেস থেকে বেরিয়ে তিনি সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরেও হাজিরা দেন। সেই দফতর থেকেই সিবিআই আরজি করের মহিলা চিকিৎসক ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার তদন্ত করছে। আর্থিক অনিয়ম মামলার পাশাপাশি চিকিৎসক-খুনের মামলাতেও জেরা করা হয় তাঁকে।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার আরজি কর-কাণ্ডের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। দাবি করা হয়, মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর সেমিনার হলের মধ্যে ভিড় করেছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সেই ভিড়ে দেখা গিয়েছে দেবাশিসকে (যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। সেই ভিডিয়োর সূত্র ধরেই তাঁকে সিজিও কমপ্লেক্সে ডাকা হয়েছিল।
দেবাশিস আরজি করের ফরেন্সিক বিভাগের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে যুক্ত। ওই বিভাগের ‘ডেমনস্ট্রেটর’ পদে রয়েছেন তিনি। এ ছাড়া, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের কাউন্সিলেরও সদস্য তিনি। রয়েছেন কলেজের ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের (এনএমসি) কমিটিতেও। আরজি কর হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত অনেকের দাবি, দেবাশিস আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ অত্যন্ত ‘ঘনিষ্ঠ’। হাসপাতালে তাঁর নিজের বিভাগের ঘরে নাকি তিনি বসতেন না! সন্দীপের ঘরের পাশে একটি ঘর তাঁর জন্য বরাদ্দ ছিল। সেখানে বসেই কাজ চালাতেন। ফরেন্সিক মেডিসিন বিভাগ তিনি ‘নিয়ন্ত্রণ’-এর চেষ্টা করতেন বলেও দাবি করছেন কেউ কেউ।
অনেকেই মনে করছেন গ্রেফতারি এড়াতে তিনি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু এই গ্রেফতারি কী তিনি এড়াতে পারবেন? সেটাই এখন কোটি টাকার প্রশ্ন।