আর জি কর হাসপাতালের সমস্ত দুর্নীতির তদন্ত করবে সিবিআই নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
বাংলার জনরব ডেস্ক : আর জি কর হাসপাতালের সব রকম দুর্নীতির তদন্ত করবে সিবিআই আজ শুক্রবার এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।এই সংক্রান্ত সমস্ত নথি আগামী কাল সকাল দশটার মধ্যে সিবিআইকে হস্তান্তর করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে রাজ্যকে। বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ নির্দেশ দেন, আগামী ৩ সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত সংক্রান্ত স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দিতে হবে সিবিআইকে।
এর ফলে, আরও বিপাকে পড়লেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ, এমনটাই মনে করছেন অনেকে। আরজি কর হাসপাতালে তরুণী পড়ুয়া-চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পরে একাধিক অভিযোগ উঠতে থাকে এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে। সব অভিযোগেরই কেন্দ্রে ছিলেন প্রাক্তন প্রিন্সিপাল ডক্টর সন্দীপ ঘোষ। তিনিই নানা বিষয়ে হাসপাতালকে দুর্নীতির আঁতুড়ঘরে পরিণত করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল।
এই অভিযোগের পরেই রাজ্যের তরফে গঠন করা বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট। এই সিট কেন আরও আগে গঠন হয়নি, সেই প্রশ্নও আগেই তুলেছিল আদালত। আজ সেই সিটকে কার্যত খারিজই করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। জানিয়ে দিল, তদন্ত করবে সিবিআই এবং তাদের হাতেই রাজ্য যেন সব নথি তুলে দেয়।
প্রসঙ্গত, ৯ অগস্ট হাসপাতালে মর্মান্তিক খুনের পরেই কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ১৪ তারিখ থেকে আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। এই পরিস্থিতিতে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে ইডি-কে তদন্তভার দেওয়ার আবেদন করা হয় হাইকোর্টে। কিন্তু একাধিক সংস্থা তদন্ত করলে বিষয়টি জটিল হয়ে যেতে পারে, সময়ও বেশি লাগতে পারে বলে জানিয়েছে আদালত। সেই কারণে, খুনের ঘটনার সঙ্গে হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির তদন্তও সিবিআই করবে বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের নজরদারিতেই সিবিআই তদন্ত হবে।
আরজি করে আর্থিক দুর্নীতি, দেহ লোপাট সহ একাধিক অভিযোগে ইডির তদন্ত চেয়ে সন্দীপ ঘোষের মামলা দায়ের করেন আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি। তাঁর অভিযোগ, প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ নিয়ে টালা থানায় গেলে পুলিশ এফআইআর নেয়নি। শুধুমাত্র লিখিত অভিযোগ দিয়ে এসেছিলেন তিনি। তারপরেও অবশ্য কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। এরপর থেকেই তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান। তিনি বলেন, “আদালতের শরণাপন্ন হয়ে বিচার চাইছি।”
আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার বলেন, “প্রথমদিন থেকে ওঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। একসময় ছাত্ররা ওঁর বিরুদ্ধে ভুক হরতালও করেছিল। টাকা নিয়ে উনি পাশ করাতেন। টাকা না দিলে খারাপ কেসে ফাঁসিয়ে দিতেন। হুমকি দিতেন। ওঁকে সাসপেন্ড করে দ্রুত হেফাজতে নেওয়া দরকার।” সেই মামলারই শুনানি ছিল শুক্রবার।
আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ছাত্রীকে খুন ও ধর্ষণের ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে যাওয়ার পরেই প্রাক্তন অধ্যক্ষ ডাক্তার সন্দীপ ঘোষকে লাগাতার জেরা শুরু করেন কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সির গোয়েন্দারা। আজ নিয়ে টানা অষ্টম দিন তিনি হাজিরা দিয়েছেন সিজিও কমপ্লেক্সে। প্রতিদিনই ১২-১৩ ঘণ্টা করে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ।
এর মধ্যেই সামনে এসেছে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ। আর্থিক তছরুপ, ওষুধ, মেডিক্যাল সরঞ্জামের কালোবাজারির মতো গুরুতর অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। সেই সমস্ত তদন্তই এবার করতে চলেছে সিবিআই।