ADR Report : নারী নিগ্রহে অভিযুক্ত ১৫১ জনপ্রতিনিধি, তালিকায় শীর্ষে পশ্চিমবঙ্গ ও বিজেপি
বাংলার জনরব ডেস্ক : নারী নির্যাতনের ন্যায়বিচার কোথায় চাইবে সারা দেশ, যখন আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের দায়িত্বে থাকা জনপ্রতিনিধিরাই এই অপরাধে অভিযুক্ত? ২১ আগস্ট, বুধবার অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস (এডিআর) প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৫১ জন জনপ্রতিনিধি নারী নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন বিজেপির সাংসদ ও বিধায়করা। দেশের ২৮টি রাজ্য ও ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জনপ্রতিনিধিরা এই সমীক্ষার আওতায় ছিলেন। রিপোর্ট অনুযায়ী, বিজেপির ৫৪ জন সাংসদ ও বিধায়কের বিরুদ্ধে মহিলাদের উপর নানা অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, যা তাঁরা নির্বাচন কমিশনের কাছে পেশ করা হলফনামায় স্বীকার করেছেন।
সংখ্যার বিচারে বিজেপির জনপ্রতিনিধিরা শীর্ষে থাকলেও, রাজ্য হিসাবে প্রথম স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যের ৪২ জন সাংসদ ও ২৯৪ জন বিধায়কের মধ্যে ২৫ জনের বিরুদ্ধে মহিলাদের হেনস্তার অভিযোগ রয়েছে। এদের মধ্যে ৪ জন সাংসদ ও ২১ জন বিধায়ক। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার, সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, শান্তনু ঠাকুর, খগেন মুর্মু এবং বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা, অগ্নিমিত্রা পল ও সুব্রত ঠাকুর। গুরুতর অসুস্থ মুকুল রায়ের নামও রয়েছে তালিকায়।
অভিযুক্ত তৃণমূল কংগ্রেসের জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে রয়েছেন চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমান, কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়, সামশেরগঞ্জের বিধায়ক আমিরুল ইসলাম, এবং পূর্বস্থলী উত্তরের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়। ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া ৭৫৫ জন সাংসদ ও ৩,৯৩৮ জন বিধায়কের হলফনামার ভিত্তিতে এই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।
রাজ্য ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গের পরেই রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ (২১) এবং ওডিশা (১৭)। নারী নিগ্রহে অভিযুক্ত ১৫১ জনের মধ্যে ১৬ জন সাংসদ ও ১৩৫ জন বিধায়ক রয়েছেন। আবার, রাজনৈতিক দল হিসাবে বিজেপির পরে কংগ্রেসের ২৩ জন সাংসদ ও বিধায়ক, তেলুগু দেশমের ১৭ জন, আপের ১৩ জন এবং তৃণমূলের ১০ জন বিধায়ক এই তালিকায় আছেন। মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের মধ্যে রয়েছে ধর্ষণ, খুন, অ্যাসিড হামলা, শ্লীলতাহানি, যৌন হেনস্তা, পিছুধাওয়া, এবং পণের দাবিতে খুন। রিপোর্ট অনুযায়ী, সরাসরি ধর্ষণে অভিযুক্ত ১৬ জনের মধ্যে রয়েছে ১৪ জন বিধায়ক ও ২ জন সাংসদ। ধর্ষণে অভিযুক্তদের মধ্যে মধ্যপ্রদেশের ২ জন বিধায়ক এবং পশ্চিমবঙ্গের ১ জন সাংসদ ও ১ জন বিধায়ক রয়েছেন। এছাড়া, বিজেপির ৩ জন বিধায়ক ও ২ জন সাংসদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে।
নিচে এডিআর (অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস) রিপোর্ট অনুযায়ী নারী নিগ্রহে অভিযুক্ত কিছু উল্লেখযোগ্য জনপ্রতিনিধিদের তালিকা দেওয়া হল:
• বিজেপির জনপ্রতিনিধিরা:
1. সুকান্ত মজুমদার- কেন্দ্রীয় মন্ত্রী
2. সৌমিত্র খাঁ- সাংসদ
3. শান্তনু ঠাকুর – সাংসদ
4. খগেন মুর্মু – সাংসদ
5. বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা- বিধায়ক, কার্সিয়াং
6. অগ্নিমিত্রা পল – বিধায়ক, আসানসোল দক্ষিণ
7. সুব্রত ঠাকুর – বিধায়ক, গাইঘাটা
8. মুকুল রায় – গুরুতর অসুস্থ, তবুও তালিকায় রয়েছে নাম
• তৃণমূল কংগ্রেসের জনপ্রতিনিধিরা:
1. হামিদুল রহমান- বিধায়ক, চোপড়া
2. সৌমেন রায় – বিধায়ক, কালিয়াগঞ্জ
3. আমিরুল ইসলাম – বিধায়ক, সামশেরগঞ্জ
4. তপন চট্টোপাধ্যায় – বিধায়ক, পূর্বস্থলী উত্তর