মহান সুফি সাধক ‘বড় হুযুর পাক’-এর বার্ষিক উরস পাক
বিশেষ প্রতিনিধি : আজ ৩০ শে শ্রাবণ ১৪৩১(১৫ ই আগস্ট ২০২৪), বৃহস্পতিবার ‘বড় হুযুর পাক’ – নামে খ্যাত মহান সুফি সাধক হযরত সৈয়দ শাহ রশীদ আলী আল-কাদেরী আল-বাগদাদী-র তৃতীয় বার্ষিক উরস পালিত হচ্ছে মেদিনীপুর শহরের জোড়া মসজিদে তাঁর মাযার শরীফে ও পার্শ্ববর্তী দায়রা পাকে।
তিনি সুফি কাদেরিয়া তরিকার প্রতিষ্ঠাতা ‘বড় পীর সাহেব’ হযরত আব্দুল কাদির জিলানী-র ২২ তম বংশধর।
বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ৩০শে শ্রাবণ ১৪২৮, ইংরেজি ১৬ই আগস্ট ২০২৪(৬ ই মুহাররম) তাঁর ‘বেসালে হক'(দেহান্তর) হয়েছিল কলকাতার ৪ নং হাজী মুহাম্মদ মহসিন স্কোয়ারের দরবার পাকে। তাঁর মাযার শরীফ নির্মিত হয়েছে মেদিনীপুরে জোড়া মসজিদে তাঁদের পারিবারিক মাযার শরীফ প্রাঙ্গণে।
তাঁর বর্তমান স্থলাভিষিক্ত উত্তরাধিকারী সাজ্জাদানশীন হযরত সৈয়দ শাহ ইয়াসূব আলী আল-কাদেরী আল-বাগদাদী-র পরিচালনায় এই উরস পালিত হচ্ছে।
‘বড় হুযুর পাক’ এর ভক্ত ও শিষ্য সারা বিশ্বেই রয়েছেন। তাঁর প্রপিতামহ ‘মওলা পাক’ এর ৪ ই ফাল্গুনের উরসে একটি স্পেশ্যাল ট্রেন প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে সরাসরি মেদিনীপুরে আসে যা দুই দেশের শান্তি ও সম্প্রীতিকে তুলে ধরে।
‘বড় হুযুর পাক’ এর এই উরসেও বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশ থেকে ও পশ্চিম বঙ্গের প্রায় সমস্ত জেলা থেকে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে মানুষের ঢল নেমেছে।
আজ থেকে প্রায় আড়াইশো বছর আগে (১৭৬৬) তাঁর পূর্ব পুরুষ বাগদাদ শরীফ থেকে ভারতে তশরিফ আনেন এবং এখানে কাদেরিয়া তরিকার প্রসার ঘটে।
‘বড় হুযুর পাক’ এর জন্ম হয়েছিল ১৯৩৮ সালের ১২ই রমযান। তাঁর আব্বাজান ‘সানী মওলা পাক’ ছিলেন যমানার শ্রেষ্ঠ আলেম। পিতার কঠোর তত্ত্বাবধানে তাঁর শিক্ষা ও সাধনা চলে। কঠোর আত্মসংযম ও কৃচ্ছসাধনায় তিনি সমগ্র জীবন অতিবাহিত করেন। দুনিয়ায় থেকেও তিনি দুনিয়ার প্রতি সম্পূর্ণ উদাসীন ছিলেন। যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেম হয়েও তিনি অত্যন্ত সাধারণ জীবন যাপন করতেন ও নিজেকে সমস্ত রকমের প্রচার থেকে দূরে রাখতে পছন্দ করতেন। জাতি-ধর্ম- বর্ণ নির্বিশেষে ভক্তবৃন্দ ও বিপদ গ্রস্ত মানুষ তাঁর দরবারে ছুটে আসতেন। কাদেরিয়া তরিকার মহান ঐতিহ্য অনুসারে তাঁর দরবারে উচ্চ-নীচ, ধনী -দরিদ্র কোন ভেদাভেদ ছিলনা।
মেদিনীপুর ছাড়াও বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটে, বিহারের পূর্ণিয়া জেলার হযরত রওশনগঞ্জে এবং ভারত ও বাংলাদেশের সমস্ত কাদেরিয়া খানকাশরীফ ও মসজিদে এই উরস পাক যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।