আর জি করের সেমিনার হল এখনই কেন ভাঙার উদ্যোগ নেওয়া হল! হলফ নামা দিয়ে রাজ্য সরকারকে জানাতে বলল কলকাতা হাইকোর্ট
বিশেষ প্রতিনিধি : আরজি করে ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার তদন্তে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্য তড়িঘড়ি সেমিনার হল ভাঙার কাজ শুরু করার অভিযোগ উঠেছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে এবার রাজ্যের কাছে হলফনামা চাইল কলকাতা হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে বুধবার মধ্যরাতের হামলার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও এদিন বড় প্রশ্ন তুলেছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চ। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘‘পুলিশ নিজেকে রক্ষা করতে পারছে না। জনতাকে ঠেকাতে পারছে না। আইনশৃঙ্খলা কী ভাবে রক্ষা করবে?’’
আরজি করে ডাক্তারি ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুন ও ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার মধ্যরাতের হামলা নিয়ে একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। ওই মামলাতেই এদিন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, মামলায় তদন্তের স্বার্থে সিবিআই যা যা মনে করবে তাই করতে পারে। আন্দোলনকারীদেরও পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
একই সঙ্গে আদালত এও জানিয়েছে, সিবিআই ডাকলে তাদের ওখানে গিয়ে হাজিরা দিতে হবে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে। বুধবার মামলার পরবর্তী শুনানি। সেদিন আরজি করের সেমিনার হল ভাঙা নিয়ে রাজ্য এবং মামলার আবেদনকারীদের হলফনামা জমা দিতে বলেছে আদালত।
একই সঙ্গে বুধবার মধ্যরাতের ঘটনা সামলাতে পুলিশ যেভাবে ব্যর্থ হয়েছে তাতে আগামীদিনে এমন ঘটনা নিয়ন্ত্রণে কলকা্তা পুলিশ কী পদক্ষেপ করবে তাও লিখিত আকারে জানতে চেয়েছে আদালত। এদিন মামললার শুনানিতে আদালত রাজ্যের গোয়েন্দা বিভাগের ব্যর্থতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে। জানতে চাওয়া হয়, “এভাবে হামলা হতে পারে, সে খবর কেন ছিল না গোয়েন্দা দফতরের কাছে? এত মানুষ জমায়েত হল, অথচ পুলিশ আগে থেকে তৈরি ছিল না? এটা বিশ্বাস করা কঠিন।”
সেমিনার হল ভাঙা নিয়ে এদিন আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। রাজ্যের তরফে অবশ্য এদিন আদালতে দাবি করা হয়েছে, চারতলার সেমিনার হলের যে জায়গা থেকে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল, সেই স্থান সুরক্ষিত রয়েছে। চিকিৎসকদের দাবি মেনে তার পাশে একটি রেস্ট রুম তৈরি করা হচ্ছিল বলে জানান রাজ্যের আইনজীবী। যা শুনে তীব্র ভর্ৎসনা করে বিচারপতি বলেন, “এখনই করতে হল? কী কারণে এত তাড়াহুড়ো?”