কলকাতা 

আর জি কর কাণ্ডে সিবিআই তদন্তে নির্দেশ হাইকোর্টের, কলকাতা পুলিশের তদন্তে অসন্তুষ্ট প্রধান বিচারপতি

শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিনিধি : শেষ পর্যন্ত আর জি কর মেডিকেল কলেজের সেমিনার হলে তরুণী চিকিৎসকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম মামলার কেস ডায়েরি খতিয়ে দেখেই এই নির্দেশ দিলেন। একই সঙ্গে হাই কোর্ট জানায়, রাজ্যের হাতে থাকা সব তথ্য এবং নথি সিবিআইকে দিতে হবে। শুধু তা-ই নয়, যে সব সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছিল পুলিশ, তা-ও সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে হবে।

আরজি কর-কাণ্ডে পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। মঙ্গলবার এক সঙ্গে আরজি কর-কাণ্ডে দায়ের হওয়া পাঁচটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি হয়। সেখানেই একাধিক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। রাজ্যের থেকে কেস ডায়েরি তলব করা হয়েছিল মঙ্গলবারের শুনানিতে। দুপুর ১টার মধ্যে সেই কেস ডায়েরি আদালতে জমা দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই রিপোর্টকে সামনে রেখে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন প্রধান বিচারপতি।

Advertisement

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগের চার তলায় রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় মহিলা চিকিৎসকের দেহ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্যে। খুন এবং ধর্ষণের অভিযোগ তুলে আন্দোলনে শামিল হন আরজি করের জুনিয়র চিকিৎসকেরা। পরে সেই আন্দোলনে যোগ দেন অন্যান্য চিকিৎসকেরা। তবে সেই আন্দোলন শুধু আরজি করের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। এই ঘটনায় দোষী বা দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে আন্দোলন ছড়িয়ে প়ড়ে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে। এমনকি, দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকেরাও বিক্ষোভ কর্মসূচি দেখান।

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই বেশ কিছু তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। সেই সব তথ্য থেকে স্পষ্ট, যুবতীকে নৃশংস ভাবে অত্যাচার করে খুন করা হয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় এক জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনায় আর কেউ জড়িত রয়েছে কি না তার প্রমাণ মেলেনি। শনিবার অভিযুক্তকে শিয়ালদহ আদালতে হাজির করানো হলে, বিচারক ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। অন্য দিকে, আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে হাই কোর্টে বেশ কয়েকটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। মঙ্গলবার সেই মামলারই শুনানি ছিল প্রধান বিচারপতির এজলাসে।

প্রসঙ্গত, জনস্বার্থ মামলায় মূলত তিনটি আবেদন করা হয়েছিল হাই কোর্টে। তার মধ্যে প্রধান হল নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে এই ঘটনার তদন্ত করানো। আবেদনকারীদের বক্তব্য, সিবিআই বা অন্য কোনও নিরপেক্ষ সংস্থাকে এই ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হোক। যে সংস্থার উপর রাজ্যের প্রভাব থাকবে না। এ ছাড়াও ওই ঘটনায় কে বা কারা জড়িত, অবিলম্বে তদন্ত করে তা প্রকাশ্যে আনার আবেদন জানিয়েছেন মামলাকারীরা। তাঁরা চান, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিক আদালত। সমস্ত সরকারি হাসপাতালে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর আবেদনও জানানো হয়েছে। মামলাকারীদের বক্তব্য, হাসপাতালের প্রতিটি তলার মূল প্রবেশপথে যাতে সিসিটিভি থাকে, তা নিশ্চিত করা হোক।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ