কলকাতা 

মহিলা বন আধিকারিকের উদ্দেশ্যে কু কথার জেরে মন্ত্রিত্ব হারালেন অখিল গিরি

শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিনিধি : কারামন্ত্রী অখিল গিরিকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। আজ রবিবার সকালের টেলিফোনে সুব্রত বক্সী অখিলগিরি কে নির্দেশ পাঠিয়েছেন যে মহিলাকে তিনি অপমান করেছিলেন তাঁর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং দলের কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দিতে হবে। গতকাল শনিবার এক মহিলা বন আধিকারিক কে মন্ত্রী অখিল গিরি অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন এবং তাকে প্রহার করা হবে বলেও জানিয়েছিলেন। সেই ঘটনার ভিডিও সংবাদমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই প্রচণ্ড অস্বস্তিতে পড়ে যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই অবশ্য কারামন্ত্রী অশীল গিরি প্রকাশ্যে ক্ষমা চান দলের নির্দেশে। খুব কড়া ভাষায় বলা হয়েছিল ওই মহিলা আধিকারিক এর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে অখিল গিরিকে আর না হলে মন্তিত্ব থেকে ইস্তফা দিতে হবে।

এই নির্দেশের পরে অখিল সে দিনের ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন। যদিও ঘটনার দায় তিনি চাপান বন আধিকারিকের উপরেই। দুঃখপ্রকাশ করলেও অখিল কিন্তু ক্ষমা চাননি। আর তাতেই অখুশি দল মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিতে বলেছে অখিলকে।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার সকালেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেন। এর পরেই অখিলকে ক্ষমা চাইতে বলা হয়। কিন্তু ক্ষমা চাওয়ার পরিবর্তে ওই মহিলার ঘাড়ে দায় চাপিয়ে শুধুই দুঃখপ্রকাশ করায় আরও কড়া সিদ্ধান্ত নেন মমতা। এর পরেই সুব্রত অখিলকে ইস্তফার নির্দেশ দিয়ে দেন।

শনিবার কাঁথির মহিলা বন আধিকারিককে প্রকাশ্যে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন অখিল। ‘জানোয়ার’, ‘বেয়াদব’ জাতীয় শব্দও তাঁর উদ্দেশে ব্যবহার করতে শোনা গিয়েছিল কারামন্ত্রীকে। ওই ঘটনার পর তিনি জানিয়েছিলেন, এ হেন আচরণের জন্য তিনি বিন্দুমাত্রও অনুতপ্ত নন। এর পরেই অখিলের বক্তব্য নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়। পাশে থাকেনি তাঁর দলও। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ অখিলের আচরণের সমালোচনা করে বিবৃতি দেন। এমনকি, ঘনিষ্ঠ মহলে বিরক্তি প্রকাশ করেন মমতাও।

রবিবার সাংবাদিকদের কাছে অখিল জানিয়েছেন, মন্ত্রী হিসাবে মহিলা বন আধিকারিককে ওই ধরনের কথা বলা তাঁর উচিত হয়নি। নিজের আচরণের জন্য পরে তাঁর ‘দুঃখ’ হয়েছে বলেও জানিয়েছেন। অখিল বলেন, ‘‘তাজপুরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। মন্ত্রী হিসাবে আমি আলোচনা করতে বলেছিলাম। নিজেও উত্তেজিত হয়ে পড়ি। বন আধিকারিককে আমি যে কথা বলেছি, তা অনুচিত। মন্ত্রিসভার দায়িত্বশীল সদস্য হিসাবে ওই কথা আমার বলা ঠিক হয়নি। পরবর্তী কালে তার জন্য আমি দুঃখও পেয়েছি। আমি এই কথা বলার জন্য অনুতপ্ত।’’

এর পর যদিও ঘটনার দায় ওই আধিকারিকের উপরে চাপিয়ে অখিল বলেছেন, ‘‘রেঞ্জার মনীষা সাউ কারও কথা শোনেননি। তাঁর জন্যই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সে দিন আমি ওখানে গিয়ে সামাল না দিলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যেত। গ্রামবাসীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল। এই রেঞ্জারকে জেলা প্রশাসনের কেউ পছন্দ করেন না। ঘটনার জন্য তিনিই দায়ী।’’ অখিলের এই বক্তব্যে সন্তুষ্ট হতে পারেনি দল। তার পরেই তাঁকে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ