জনমোহিনী নাকি কুর্সি বাঁচানোর বাজেট! প্রশ্নের মুখে তৃতীয় মোদি সরকারের প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট/ অর্পণ বন্দ্যোপাধ্যায়
অর্পণ বন্দ্যোপাধ্যায় : এ বারের বাজেট এই কথাই প্রমাণ করলো যে মোদি সরকার প্রবল নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে প্রতি মুহূর্তেই তাদেরকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর ভয়, যার ফলস্বরূপ গতকাল বিহারকে বিশেষ আর্থিক মর্যাদা সম্পন্ন রাজ্য হিসেবে ঘোষণা না করলেও, আজকে বাজেটের প্রতিটি পরতে পরতে দেখা গেল বিহার ও অন্ধ্রপ্রদেশের প্রতি বিশেষ সুবিধার কথা।
একথা সকলেই জানে যে নীতিশ কুমার ও চন্দ্রবাবু নাইডুর সমর্থনেই গড়ে উঠেছে তৃতীয় মোদি সরকার এবং তাদেরকে তুষ্ট রাখতেই যে এই বাজেট তা বলার অপেক্ষা রাখে না। নরেন্দ্র মোদী যতই দাবি করুন যে এই বাজেট সমাজে সব শ্রেনীকে শক্তিশালী করবে কিন্তু আখেরে এই বাজেট নিরপেক্ষ নয়। বাজেটে মধ্যবিত্তের জন্য কোন নতুন উদ্যোগ নেই বললেই চলে, কর্মসংস্থান, আদিবাসী উন্নয়ন, অনগ্রসর তথা সংখ্যালঘু শ্রেণীর উন্নয়নের বিষয় বাজেট থেকে একেবারেই ব্রাত্য।
প্রায় প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে এই সরকার পশ্চিম বাংলাকে বাজেটের সুযোগ সুবিধা থেকে একেবারেই বঞ্চিত করে রেখেছে বাংলা থেকে বিজেপির ১২ জন সাংসদ থাকলেও তারা বাংলার জন্য কোন নতুন দাবি দেওয়া আদায় করে উঠতে পারেনি। পশ্চিমবঙ্গর জন্য কোন নতুন আর্থিক প্যাকেজ, নতুন ট্রেন রেল লাইন সম্প্রসারণ, শিল্প স্থাপন, রাস্তা সম্প্রসারণ যা সুবিধা প্রভৃতি রাজ্যকে দেয়া হয়েছে বাংলা তার থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত, তৃণমূল কংগ্রেস এই বাজেটকে চরম বিরোধিতা করে বলেছে যে নরেন্দ্র মোদি সরকার শুধুমাত্র সরকার বাঁচানোর লক্ষ্যে এই বাজেট পেশ করেছে, এটি সাধারণ মানুষ বা ভারতবর্ষের বাজেট নয়, বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ড.সুকান্ত মজুমদারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন যে পার্শ্ববর্তী রাজ্যের উন্নয়ন হলেই পশ্চিমবাংলার আর্থিক তথা শিল্পের বিকাশ হবে, যা শুনে অর্থনীতিবিদেরা যথেষ্টই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে বাংলা তরফ থেকে একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়ে এইরকম হাস্যসকর মন্তব্য আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গের অগ্রসরকে ব্যাহত করবে, তবে একথা ঠিক বা রাজনৈতিকভাবে একথা সত্য যে স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী নির্বাচনের আগে সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বিজেপি সর্বাধিক আসন পাবে এবং পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সর্বাপেক্ষা ভালো ফল করবে অন্যান্য রাজ্যগুলি থেকে। ৪ জুনের পর ‘তাসের ঘরের’ মতো ভেঙে যাওয়ায় যথেষ্টই বিস্মিত হয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব এবং তার ফলস্বরূপ ই কেন্দ্রীয় বাজেটের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকলো পশ্চিমবঙ্গ যা রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।