জেলা 

কৃমি সচেতনতা দিবসে চাষী ভাইদের সঙ্গে কৃষি বিজ্ঞানীরা

শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রতিবছরের মতো এবারও উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়িতে পালিত হল কৃমি সচেতনতা দিবস। গত ৭ জুলাই রবিবার জলপাইগুড়ি কৃষি ভবনে চাষী ভাইদের নিয়ে সমবেত হয়েছিলেন কৃষি বিজ্ঞানী সহ কৃষি আধিকারিকরা।

১৯তম এই কৃমি সচেতনতা দিবসে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর শান্তনু ঝা, সচিব, এ এ পি পি, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. শিবির কুমার লাহা, অধ্যাপক চম্পক কুমার কুন্ডু, অধ্যাপক মতিয়ার রহমান খান, অধ্যাপক কমল কুমার মন্ডল, ড.সুজিত কুমার রায়, মি. গোপাল সাহা, মি. সঞ্জীব দাস, ড. পাপিয়া ভট্টাচার্য, ড. মাহফুজ আহমেদ, ড. ভিক্টর ফানি, ড ইন্দ্রানী দানা, ড শামিমূল ইসলাম, ড মলয় কুমার ভৌমিক এবং আরো অনেকে। এই সচেতনতা দিবসের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল কৃমির পরিচিতি, মানুষ, গৃহপালিত পশু ও শস্যের কৃমি সংক্রমণ এবং তার প্রভাব নিয়ে আলোচনা । এই সচেতনতা দিবস ২০০৬ সাল থেকে প্রতি বছর পালিত হয়। এ বছর উত্তরবঙ্গের জেলা বিশেষ করে জলপাইগুড়ি জেলার কৃষকদের জন্য আয়োজন করা হয়। এই প্রশিক্ষন শিবিরে প্রায় ১৩০ জন কৃষক, চাষের সঙ্গে যুক্ত কৃষক সংগঠন, কৃষি সামগ্রী বিক্রেতা এবং স্থানীয় কৃষি আধিকারিক অংশগ্রহণ করেন। ড. মাহফুজ আহমেদ, কৃষি আধিকারিক এই প্রোগ্রামের স্থানীয় আহ্বাহক ছিলেন। মুখ্য বক্তব্য রাখেন প্রফেসর ঝা। তিনি জানান শস্য চাষের বহু সমস্যা আছে এবং তার কারণ ও সমস্যা চাষী ভাইদের যে ভাবে তুলে ধরা দরকার তা সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে হয় না। তাই এ এ পি পি সেই বিষয় গুলোর বিশেষ গুরুত্ত্ব দেওয়ার প্রচেষ্টা করে। যেমন কৃমি, সাদা মাছি, মাটি বাহিত রোগ সমস্যা এবং পরাগমিলন কারী পোকার সংরক্ষণ এবং তাদের কৃষি উৎপাদনে ভূমিকা। এই বিষয়গুলো নিয়ে এ এ পি পি (কল্যাণী) প্রতি বছর সচেতনতা দিবস পালনের মাধ্যমে চাষী এবং জনসাধারণের কাছে যোগাযোগ স্থাপন করতে চাই। তিনি তার বক্তব্যে পরিষ্কার ভাবে বলেন যে পরিষ্কার-পরিছন্ন চাষ করার সময় কৃষি জমির আসে পাশে যেন ঝোপ ঝাড় পরিষ্কার না করা হয়। এই ঝোপঝাড় গুলো পরাগমিলনকারী পোকার আশ্রয়স্থল। তাই তাদের আশয়স্থল সংরক্ষণের উপর নজর দেওয়া প্রয়োজন। ড. লাহা পাট চাষে কৃমির ভূমিকা ও তার প্রতিকার নিয়ে চাষীদের পরামর্শ দেন। ড ভিক্টর ফণী, উত্তরবঙ্গে বিভিন্ন্য শস্যে কৃমি সমস্যা নিয়ে আলোকপাত করেন। প্রফেসর খান তার বক্তব্যে মানুষের বিভিন্ন্য প্রকার কৃমির সংক্রমণ এবং তাদের লক্ষণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। বিশেষ করে কৃষক ভাইয়েরা মাঠে কাজ করার সময় অপরিশ্রুত পানি পানের মাধ্যমে ও মাটি বাহিত কৃমির দ্বারা আক্রান্ত হয়। মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণী বিভিন্নভাবে পরজীবী কৃমি দ্বারা সংক্রামিত হয়। যেমন অল্প সিদ্ধ মাংস খেলে, কাঁচা শাক-বজি (স্যালাড), ফল ইত্যাদি মাটি থেকে তুলে খেলে বা মলের সংস্পর্শে এলে, দূষিত পানি পান করলে কৃমি রোগ হতে পারে । তাই ভালো করে হাত ধুয়ে খাবার খাওয়া, সবজি, ফল ধুয়ে খাওয়া, খোলা আকাশে পায়খানা না করা, এবং বিশুদ্ধ পানি পান করা করার উপদেশ দেন। কিছু প্রজাতির কৃমি প্রাণীদের পেটে বাস করে এবং শরীর থেকে পুষ্টি শোষণ করে নেই। তাই মানুষ ও গবাদিপশুকে মাঝে মাঝে কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়ানো প্রয়োজন । তিনি সকলকে সাবধান করেন কৃমি যেন মানুষের শরীরে বাসা বাঁধতে না পারে।পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জীবনযাত্রা করতে উপদেশ দেন । এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন্য শস্যে কৃমির রোগ লক্ষণ ছবি সহ উপস্থাপন করেন এবং তাদের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বাতলে দেন। প্রশ্ন -উত্তর পর্বে কৃষকের শস্যের কৃমি ও রোগ-পোকা সম্পর্কে আলোচনা হয়। জেলার কৃষি আধিকারিকগণও তাদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। অবশেষে ড. মাহফুজ আহমেদ সকলকে ধন্যবাদ দেন এবং চাষী ভাইদের আগামীদিনে আরও এই ধরনের প্রোগ্রাম করার আশ্বাস দেন ।

Advertisement

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ