চলে গেলেন বিশিষ্ট ছড়াকার ও গল্পকার প্রদীপ মুখোপাধ্যায়
চলে গেলেন বিশিষ্ট ছড়াকার, ছোটগল্পের অসাধারণ স্রষ্টা প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। গত রাতে আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় সব বয়সীদের ‘ প্রদীপ দা’ র। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল চুয়াত্তর বছর। ১৯৫০ সালে বারুইপুরের সাউথগরিয়া গ্রামে এক উদার বর্ধিষ্ঞু সাংস্কৃতিক পরিবারে তাঁর জন্ম হয়।
সাহিত্য সংস্কৃতির আন্দোলনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে পড়েন সত্তরের দশকের ঝোড়ো রাজনৈতিক আন্দোলনের সময়ে। বারুইপুরের সাহিত্য সংস্কৃতির আন্দোলনের অবিলম্বে তিনি
” মুখ ” হয়ে ওঠেন। কোনও রাজনৈতিক দলে তিনি নাম লেখাননি। সুতরাং নিজের জন্য কোনও উমেদারি করতে হয়নি তাঁকে। এরফলে আর্থিক দিক থেকে সারাজীবন খুবই দারিদ্র্য পীড়িত যাপন করেছেন কবি প্রদীপ মুখোপাধ্যায়। এর পাশাপাশি খ্যাতিমান হওয়ার জন্য কোনোদিন ইঁদুর দৌড়েও নামেননি। বামমার্গীয় রাজনৈতিক গোত্রের সংগে আদর্শগত কারণেও দূরত্বে থাকতেন তিনি।
” দক্ষিণী আসর ” নামে একটি সাংস্কৃতিক সংস্থার জন্মলগ্ন থেকে গভীরভাবে জড়িয়ে পড়েন। সাহিত্য সংস্কৃতির আন্দোলনে
নির্বিবাদী ও স্পষ্ট অবস্থান ছিল প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের। তাঁর দুটি ছড়ার বই
” দুই কারিগর ” ও ” তিন ফর্মার ছড়া ” বইদুটি খুবই জনপ্রিয় হয়। সেই অর্থে তিনি উচ্চ শিক্ষিত হয়েও কোনও নিদিষ্ট পেশায় না থাকার কারণে দারিদ্র্য তাঁর নিত্য সঙ্গী ছিল।
তাঁর মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে বারুইপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় গভীরভাবে শোকের ছায়া নেমে আসে।
বহু গুণমুগ্ধ মানুষ শোকসন্তপ্ত
পরিবারের পাশে এসে দাঁড়ান।
তাঁর মৃত্যুর সংবাদ শুনে সাংবাদিক কবি গালিব ইসলাম বলেন তাঁকে নিয়ে প্রদীপ মুখোপাধ্যায় একটা ছড়া বেঁধেছিলেন :
” বেতবেড়িয়া-ঘোলায় নেমে তোর বাড়িতে যাবো/ গালিব, বাড়ি আছিস, তোর বাড়ি ভাত খাবো ” যা একদা পাঠকের মুখে মুখে ফিরতো।
আর্দ্র কণ্ঠে গালিব বলেন,
” এ সপ্তাহে তার বাড়িতে আসার কথা ছিল, তা আর কোনওদিন হবেনা! ”
ছোটগল্পকার অংশুদেব, তালপুকুর পত্রিকার সম্পাদক
শম্ভু মন্ডলরা প্রদীপ মুখোপাধ্যায় সম্পর্কে স্মৃতিচারণা করে এই প্রতিবেদকের কাছে মন্তব্য করেন। প্রদীপ মুখোপাধ্যায়
মৃত্যুকালে তাঁর স্ত্রী ও এক পুত্র রেখে গেলেন।