Israel Iran Conflict : হিংসার পথ ত্যাগ করে কূটনৈতিক পথ ধরুক ইরান ও ইসরাইল আহ্বান ভারতের
বাংলার জনরব ডেস্ক : ফিলিস্তিনের উপরে একক ভাবে হামলা চালাচ্ছিল ইসরাইল তা নিয়ে বিশ্ববাসীকে বারবার সতর্ক করছিল ইরান। কিন্তু কোন পক্ষেই হেলদোল ছিল না এতদিন। ইসরাইলের আগ্রাসানের বিরুদ্ধে সেভাবে বড় ভূমিকা নিতে পারেনি রাষ্ট্র সংঘ। আর এর ফলে ইসরাইলের সাহস দিন দিন বেড়ে যায় শেষ পর্যন্ত সিরিয়াতে অবস্থিত ইরানি দূতাবাসের উপরে হামলা করে বসে ইসরাইল। এর ফলে দুজন ব্রিগেডিয়ার সহ সাতজন ইরানি সামরিক বাহিনী সদস্য মারা যায়।
আর এরই বদলা নিতে শনিবার রাতে অতর্কিতে ইসরাইলের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে ইরান। 300 ড্রোন হামলা চালায় ইসরাইলের উপর। যদিও ইসরাইল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে অধিকাংশ ড্রোন নাকি আকাশেই ফেটে গেছে। কিন্তু নির্ভরযোগ্য সূত্রে খবর যে বেশ কিছু ড্রোন ইসরাইলে আছে পড়েছে এর ফলে বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইসরাইলের সামরিক ঘাঁটিগুলি। এদিকে ইসরাইল ইরানের এই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত সরকার।
রবিবার বিদেশমন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘ইসরাইল এবং ইরানের মধ্যে শত্রুতা যেভাবে বেড়ে চলেছে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন আমরা। এতে গোটা অঞ্চলের শান্তি এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকি বাড়ছে। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানাচ্ছি আমরা। দু’পক্ষই সংযত হোক, হিংসার রাস্তা থেকে সরে গিয়ে কূটনৈতিক পথ ধরুক’। (Israel Iran Conflict)
বিদেশ মন্ত্রক আরও জানায়, ইরান এবং ইসরাইলে যে ভারতীয়রা রয়েছেন, তাঁদের নিরাপত্তার দিকটি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। সেখানে ভারতীয় দূতাবাস সকলের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।- ওই অঞ্চলের নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। এর আগে, রবিবার বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সঙ্গেও ইরান-ইসরাইল সংঘাত নিয়ে কথা বলেন।
ভারতীয়দের জন্য আলাদা করে নির্দেশিকাও জারি করেছে বিদেশমন্ত্রক, তাতে বলা হয়েছে, ‘পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ইরান বা ইসরাইলে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে ভারতীয়দের। যে সমস্ত ভারতীয় এই মুহূর্তে ওই দুই দেশে রয়েছেন. দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে নাম নথিভুক্ত করান। নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন হোন। খুব প্রয়োজন না পড়লে বাইরে অযথা ঘোরাফেরা না করাই শ্রেয়’।
ইরান এবং ইসরাইলের যুদ্ধ পরিস্থিতির তীব্র নিন্দা করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতারেস। তিনি বলেন, “বর্তমানে পরিস্থিতি যে ধ্বংসাত্মক আকার ধারণ করেছে, তাতে গোটা অঞ্চল জুড়ে কী বিপদ নেমে আসতে পারে ভেবে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন আমি। দুই পক্ষকেই বলছি, সংযত হন। অন্যথায় পশ্চিম এশিয়া জুড়ে বেনজির সামরিক সংঘাত দেখা দিতে পারে। আরও একটি যুদ্ধ সওয়ার ক্ষমতা নেই পৃথিবীর।”
সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে ইসরাইল হামলা চালানোর পর থেকেই মধ্যস্থতার চেষ্টা করছিল আমেরিকা। ইরান যখন পাল্টা আক্রমণের হুঁশিয়ারি দেয়, সেই সময়ও দীর্ধদিনের সহযোগী দেশ ইসরাইলের পাশে থাকার কথাই জানিয়েছিল তারা। এদিন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, ইরান যে হামলা চালিয়েছে, সেই নিয়ে G-7 দেশগুলির (কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, ব্রিটেন, আমেরিকা) রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। কূটনৈতিক ভাবে সমস্যা সমাধানের রাস্তা বের করতে চেষ্টা করবেন, যাতে দুই দেশের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।