সুপ্রিম কোর্টে যেতেই পাল্টে গেল সুর! আয়কর দফতর জানিয়ে দিল এখনই জরিমানার টাকা পরিশোধ করতে হবে না কংগ্রেসকে, ২৪ শে জুলাই পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নয় জানিয়ে দিল শীর্ষ আদালত
বাংলার জনরব ডেস্ক : সুপ্রিম কোর্টে যেতেই আয়কর দফতর পাল্টি খেয়ে গেল। কংগ্রেসকে আপতত ৩৫৬৭ কোটি টাকা দিতে হবে না আয়কর দফতরকে। আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্টে দাঁড়িয়ে এ কথা জানিয়ে দিল আয়কর দফতরের আইনজীবি ও কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। এদিকে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে আগামী ২৪ শে জুলাই পর্যন্ত আয়কর দফতর এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে না। ঐদিন সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। অর্থাৎ নির্বাচনের আগে এই বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আর সওয়াল জবাবের মধ্যে গেল না কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। কারণ এই মুহূর্তে সুপ্রিম কোর্টে এই ধরনের মামলার চাপানো উতোর শুরু হলে তাতে জনতার কাছে বিজেপিকে চাপে পড়তে হবে। কারণ রাজনৈতিক দলগুলোর অনুদান বা চাঁদা সব সময়ই আয়কর মুক্ত থাকে কিভাবে কংগ্রেসের চাঁদা গুলো আয় করে যুক্ত হল তা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
তাই এদিন শুনানি শুরুতেই কেন্দ্রের আইনজীবী পরিষ্কার বলে দেন এখনই জরিমানার টাকা কংগ্রেসকে পরিশোধ করতে হবে না ভোটের পর যা হবার হবে। তখন বিচারপতি বলেন যে আগামী ২৪ শে জুলাই পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ আয়কর দফতর করতে পারবে না। ফলে অনেকটাই স্বস্তি ফিরে এলো কংগ্রেস দলে। কারণ যেভাবে একের পর এক নোটিশ পাঠিয়ে কংগ্রেসকে আর্থিক দিক দিয়ে দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল তাতে সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করতেই সমস্ত বিষয়টি যেন জলের মতো সরল হয়ে গেল। একইসঙ্গে আয়কর দফতর একদিন ছাড়া ছাড়া নোটিশ পাঠানো শুরু করলেও সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে যেন মিউ মিউ করতে শুরু করে দিল।
‘বকেয়া আয়কর’ বাবদ ৩৫৬৭ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে, এমনটা জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কংগ্রেস। কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির বিরুদ্ধে ‘কর সন্ত্রাস’ চালানোর অভিযোগ তুলেছিল বিরোধী কংগ্রেস। কংগ্রেসের আরও অভিযোগ ছিল যে, ভোটের আগে প্রচারে বাধা দেওয়ার জন্যই অর্থনৈতিক ভাবে তাদের দুর্বল করার চেষ্টা হচ্ছে। নির্বাচনের আগে সব দলের জন্য সমান সুযোগসুবিধার বিষয়টি নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনেরও দ্বারস্থ হয়েছিল তারা।
সোমবার শুনানির জন্য বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিভি নাগরত্নের বেঞ্চে ওঠে। কংগ্রেসের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। তিনি শীর্ষ আদালতে সওয়াল করে জানান, কেন্দ্র ইতিমধ্যেই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে বকেয়া কর বাবদ ১৩৫ কোটি টাকা নিয়েছে। তার পরেই তিনি বলেন, “আমরা কোনও লাভজনক সংস্থা নই। আমরা একটি রাজনৈতিক দল।” লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশ হচ্ছে ৪ জুন। আর এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২৪ জুলাই। অর্থাৎ, তত দিন পর্যন্ত স্বস্তিতে থাকল কংগ্রেসও।
শুক্রবারই ১৮০০ কোটি টাকা চেয়ে আয়কর দফতর নোটিস পাঠিয়েছিল রাহুল গান্ধী-মল্লিকার্জুন খড়্গের দলকে। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই কংগ্রেস আরও দু’টি নোটিস পায়। অন্তত এমনই দাবি করেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। শুক্রবার বকেয়া কর, তার সুদ এবং জরিমানার অঙ্ক মিলিয়ে ১,৮২৩ কোটি টাকা কংগ্রেসের থেকে চাওয়া হয় বলে জানা যায়। আয়কর আইনের ১৩(১) ধারা লঙ্ঘনের প্রমাণ মেলার পরেই পদক্ষেপ করা হয়। গত ১৩ মার্চ আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনালের নির্দেশের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের আবেদন দিল্লি হাই কোর্ট খারিজ করার পরে ধারাবাহিক ভাবে পদক্ষেপ শুরু করে আয়কর দফতর।
আয়কর দফতরের চূড়ান্ত পাগলামি শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে শেষ হয়ে গেল। আগামী দিনেও এই মামলা যখন সুপ্রিম কোর্টে উঠবে তখনো এই মামলা যে কংগ্রেসের পক্ষেই যাবে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।