আন্তর্জাতিক 

বাংলাদেশের জেনোসাইডকে স্বীকৃতির জন্য আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

ফারুক আহমেদ : ‘১৯৭১ সালের বাংলাদেশের জেনোসাইড ছিল একটি ভয়াবহ। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্য আমরা সংগ্রাম করে যাব।’ জাতীয় গণহত্যা স্মরণ দিবস উপলক্ষে গতকাল রোববার বিকেলে চারটায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সংগঠক ‘মুক্ত আসর’ ও ‘বাংলাদেশ ইতিহাস অলিম্পিয়াড’ আয়োজনে আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদ বব ল্যান্সিয়া এ কথা বলেন। ‘আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের জেনেসাইডকে স্বীকৃতি দেওয়া’ শীর্ষ শিরোনামে এই ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়। অংশ নেন বিশ্বের খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, গবেষক, সমাজকর্মী ও লেখকেরা।

ওয়েবিনার শুরুতে সঞ্চালক যুক্তরাজ্যের লেখক প্রিয়জিৎ দেবসরকার তুলে ধরেন বাংলাদেশের গণহত্যার তথ্যচিত্র তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে মুক্ত আসর ও বাংলাদেশ ইতিহাস অলিম্পয়াডের উদ্যোগে জেনোসাইট নিয়ে নানা কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ্য করেন। ৬৪ জেলার তথ্যসংগ্রহ, জেনোসাইড পরিবারের সাক্ষাৎকার, ম্যাগাজিন প্রকাশ, আলোচনা অনুষ্ঠান, আর্ন্তজাতিক সেমিনারসহ নানা উদ্যোগ।

Advertisement

বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও আইসিটি মহাপরিচালক সৈয়দ মুনতাসির মামুন প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা গণহত্যার দেশ হিসেবে বিচার চাই, দাবি করি। ১৯৭১ সালে সারা বাংলাদেশে গণহত্যাগুলো ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে। এই ভয়াবহ গণহত্যাগুলো দেখার জন্য বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের আমরা আমন্ত্রণ জানাই, তারা তা তদন্ত করুক। এজন্য আমার সম্পূর্ণভাবে উন্মুক্ত করে রেখেছি। এ দেশের প্রতিটি গ্রাম, শহরে গেলে দেখতে পারবেন গণহত্যার সন্ধ্যান।’ তিনি তাঁর বক্তব্যে ১৯৭১ সালের ভারতের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সুইজারল্যান্ডের ইন্টারফেইথ ইন্টারন্যাশনাল সেক্রেটারি বিরো দিওয়ারা বলেন, ‘বাংলাদেশের জেনোসাইডের ২৫ মার্চ দিনটি পৃথিবীর ইতিহাসে কাল অধ্যায়। জেনেভা মানবাধিকারের কেন্দ্রে আমরা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের সম্মেলনে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করব। রুয়ান্ডায় জেনোসাইডটি যেভাবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশের জেনোসাইডকে স্বীকৃতি দেওয়া খুবই জরুরি। আমরা কখনোই একাত্তরের নির্যাতিতদের ভুলতে পারি না।’

ফ্রান্সের আইডিয়াল ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট স্টিফেন মিচট বলেন, ‘আমরা ওয়েবিনারে এসেছি কারণ বাংলাদেশ জেনোসাইডকে এখনো আন্তর্জাতিক স্বীকৃত দেওয়া হয়নি। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের জেনোসাইডের স্বীকৃতির জন্য প্রচারের কাজ করব।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ইতিহাস অলিম্পিয়াড জাতীয় কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ কে এম শাহনাওয়াজ বলেন, ‘বাংলাদেশের নৃশংস গণহত্যা একটি অন্ধকার অধ্যায়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং সহচরদের দ্বারা নির্যাতন, ধর্ষণের অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে। এসব গণহত্যার তুলে ধরতে হবে। আসুন আমরা বাংলাদেশের গণহত্যার আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতির জন্য জোর প্রচেষ্টা করি।’

ভিডিও বার্তায় যুক্তরাজ্যের ইউরোপ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পরিচালক ক্রিস্টোফার ব্ল্যাকবার্ন বলেন, ‘আজকে এই ওয়েবিনারে স্মরণ করি, ১৯৭১ সালের গণহত্যার কথা। এটি আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতি হিসেবে এখনো অপূর্ণ রয়ে গেছে।’

বাংলাদেশ ইতিহাস অলিম্পিয়াড জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘বিশ্বের বড় গণহত্যাগুলো মধ্যে বাংলাদেশের গণহত্যা অন্যতম। ৫৩ বছরও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি মেলেনি। আমরা এই ওয়েবিনার মাধ্যমে বাংলাদেশের গণহত্যা সম্পর্কে বৈশ্বিকভাবে তুলে ধরা। সেই সঙ্গে আমরা জেনোসাইড ৭১ নামে একটি ওয়েবসাইট চালু করতে যাচ্ছি। সেখানে বিভিন্ন ভাষায় বাংলাদেশের গণহত্যা সম্পর্কে নানা তথ্য, সাক্ষাৎকার, প্রতিবেদন, ছবি, ভিডিও প্রকাশ করা হবে।’

ওয়েবিনারটির বাংলাদেশ ইতিহাস অলিম্পিয়াড ও মুক্ত আসর ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি প্রচারিত হয়। ওয়েবিনারের সঙ্গে যুক্ত আছে স্বপ্ন ’৭১ প্রকাশন, বইবিষয়ক পত্রিকা বইচারিতা, জার্মানের বাংলা নিউজ পোর্টাল শুদ্ধস্বর ডটকম, ভারতের উদার আকাশ, যুক্তরাজ্যের এনএল২৪।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ