জেলা 

সম্প্রীতির অনন্য নজির বাংলায় ! মঞ্জুশ্রীর শেষ যাত্রায় রহমানেরা

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক :  গ্রামের একমাত্র হিন্দু পরিবার। সেই পরিবারেরই বৃদ্ধা মঞ্জুশ্রী মন্ডল গত শুক্রবার হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ রমজান মাসের সময় গ্রামের সমস্ত মুসলিম সম্প্রদায় মঞ্জুশ্রী মন্ডলকে নিয়ে ছুটে যায় হাসপাতালে। আর শনিবার সকালে মঞ্জুশ্রী মৃত্যু হয়। তার এই মৃত্যু সংবাদ ঘোষণা করা হয় মসজিদ থেকে। যা এক কথায় অভিনব উদ্যোগ বলে যায়। আর এই ঘটনাটি ঘটেছে আমাদের গর্বের পশ্চিমবাংলার নদীয়ার থানার পাড়া এলাকার শুভ রাজপুর গ্রামে।

এই গ্রামের বাসিন্দা সনৎ মণ্ডল এবং মঞ্জুশ্রী মণ্ডল। শনিবার সকালে মঞ্জুশ্রীর মৃত্যু হয়েছে বয়সজনিত অসুস্থতায়। তাঁর মৃত্যুসংবাদ ঘোষণা করা হয় গ্রামের মসজিদের মাইকে। গ্রামবাসীরাই শেষকৃত্যের আয়োজন করেন। মঞ্জুশ্রীর মৃত্যুতে চোখের জল ফেলেন শাহানারা, মেহেরুন্নিসা, রাজিয়ারা।

Advertisement

শুক্রবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন মঞ্জুশ্রী (৬৭)। প্রতিবেশীদের সাহায্যে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসা চলাকালীন বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। এই খবর গ্রামে এসে পৌঁছয় ভোরবেলায়। রমজান মাসে সেহরীর খাওয়াদাওয়া শেষের পরেই মসজিদের মাইকে মঞ্জুশ্রীর মৃত্যুসংবাদ ঘোষণা করা হয়।

মঞ্জুশ্রীর স্বামী সনৎ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘‘দেশভাগের পর ১৯৬৪ সালে পূর্ববঙ্গের কুষ্টিয়া জেলা থেকে এই গ্রামে চলে এসেছিলাম। তখন আমার বয়স ১০-১২ বছর। দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে এই গ্রামের লোকজনই আমার আত্মীয়। কখনও মনে হয়নি আমি অন্য ধর্মের। ওঁরা আমাকে বুক দিয়ে আগলে রেখেছেন। ওঁদের ঋণ কোনও দিন শোধ করতে পারব না।’’

মঞ্জুশ্রীর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন রেহেনা বেওয়া। বলেন, ‘‘প্রায় একই সময়ে আমরা বিয়ে হয়ে এই গ্রামে এসেছিলাম। অন্য ধর্মের হলেও আমরা দুই বোনের মতো থাকতাম। বড় বোন চলে গেলে ছোট বোনের কী হয়, তা বুঝতে পারছি।’’

 


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ