দেশ 

“সরকারের যে কোনও সিদ্ধান্তের সমালোচনা, সরকারের সিদ্ধান্তে অখুশি— এই কথা বলা নাগরিকের অধিকারের মধ্যে পড়ে’’ : সুপ্রিম কোর্ট

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : জম্মু-কাশ্মীরের উপর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে কাশ্মীরের বাসিন্দা অধ্যাপক জাভেদ আহমেদ হাজাম নিজের হোয়াটসঅ্যাপ ডিপি কালো করে দিয়েছিলেন। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হয় ওই অধ্যাপক এর বিরুদ্ধে। জাভেদ মহারাষ্ট্রের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। একই সঙ্গে তিনি পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস ১৪ই আগস্ট উদযাপন করেছিলেন বলেও শীর্ষ আদালতে অভিযোগ করে মামলা দায়ের করা হয়।

এই মামলা খারিজ করে গতকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট বলেছে, সরকারের যে কোন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করার অধিকার দেশের প্রতিটি নাগরিকের রয়েছে। তাই ৩৭০ ধারার বিরোধিতা করে জাভেদ আহমেদ হাজাম যদি হোয়াটসঅ্যাপ ডিপি কালো করে দেয় সেটা কোন অপরাধ নয়। একইসঙ্গে শীর্ষ আদালত বলেছে, পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস ১৪ই আগস্ট প্রসঙ্গে যে অভিযোগ করা হয়েছে জাভেদের বিরুদ্ধে তা আসলে সৌজন্য ছাড়া আর কিছুই নয়।দেশের শীর্ষ আদালতের মতে, প্রতিটি সমালোচনাই অপরাধ নয়। বাক্‌স্বাধীনতা নিয়ে পুলিশকেও আরও সচেতন হতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত।

Advertisement

জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপ এবং অনুচ্ছেদ ৩৭০-এর অবলুপ্তি সংক্রান্ত সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে মন্তব্য করেছিলেন কাশ্মীরের এক অধ্যাপক। কর্মসূত্রে তিনি মহারাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান। কিন্তু জাভেদ আহমেদ হাজ়াম নামের ওই অধ্যাপকের নামে ফৌজদারি মামলা রুজু হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এই যে, তিনি ৫ অগস্ট (২০১৯ সালে যে দিন অনুচ্ছেদ ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছিল) হোয়াটস্অ্যাপের ডিপি কালো করে দিয়ে লিখেছিলেন, “জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য কালো দিন।” এর পাশাপাশি অভিযোগ এই যে, তিনি ১৪ অগস্ট পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস ‘উদ্‌যাপন’ করেছিলেন। বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে। অধ্যাপকের বিরুদ্ধে রুজু হওয়া মামলা খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত।

বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুয়ানের বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, “ভারতের সংবিধান দেশের নাগরিকদের মতপ্রকাশের অধিকার এবং বাক্‌স্বাধীনতা দিয়েছে। এই সুরক্ষার বলে যে কোনও নাগরিক অনুচ্ছেদ ৩৭০-এর অবলুপ্তি-সহ সরকারের যে কোনও সিদ্ধান্তের সমালোচনা করতে পারেন। সরকারের সিদ্ধান্তে অখুশি— এই কথা বলা নাগরিকের অধিকারের মধ্যে পড়ে।’’

মামলার প্রসঙ্গে আদালত জানায়, কোনও নির্দিষ্ট দিনকে ‘কালো দিন’ বলে অভিহিত করা ‘প্রতিবাদ এবং যন্ত্রণার বহিঃপ্রকাশ’। পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস উদ‌্‌যাপনের অভিযোগ প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘এটা সৌজন্য’।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ