জেলা 

হারিয়ে যাচ্ছে ভারতবর্ষের জীব বৈচিত্রের সম্পদ – আন্তর্জাতিক আলোচনা চক্রে বললেন বিজ্ঞানীরা

শেয়ার করুন

নায়ীমুল হক : যদিও ২৮শে ফেব্রুয়ারি পেরিয়েছে ক্যালেন্ডারের পাতায় তবুও বিজ্ঞান দিবসের আবেশ রয়ে গেছে এখনো। ২৯ শে ফেব্রুয়ারি প্রত্যেক চার বছর পর পর আসে। তাই এই দিনটিকে স্মরণ করে রাখবার জন্য অভিনব উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এক আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান আলোচনা চক্র। ফ্রন্টিয়ার ইন সায়েন্স – ২০২৪। অনুষ্ঠিত হলো ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজে। ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজ এবং মহিষাদল রাজ কলেজের যৌথ ব্যবস্থাপনায় এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচ্চ শিক্ষা দফতরের আর্থিক আনুকুল্যে এই একদিনের আন্তর্জাতিক আলোচনা সভা ।

২০২৪ সালে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে সঙ্গী করে বিজ্ঞান পঠন পাঠন এবং বিজ্ঞান গবেষণা কোন দিকে এগোবে তার রূপরেখা তৈরি হল আজকের এই আলোচনা চক্রে।

Advertisement

ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজের অধ্যক্ষ ডক্টর দেবনারায়ণ রায়ের স্বাগত ভাষণের পর অনুষ্ঠানের সুর বেঁধে দিলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য সুশান্ত কুমার চক্রবর্তী মহাশয়। তিনি গতানুগতিক বিষয়ে অনুশীলনের সঙ্গে সঙ্গে টাইম এবং স্পেস এর ওপর জোর দিলেন। আধুনিক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, আর্ট অফ লিভিং এগুলোকে ও নিলে তবেই জীববৈচিত্র বাঁচবে – তাঁর বিশ্বাস ।

এরপর আলোচনা চক্রের প্রথম বক্তা কানাডার সৈকত কুমার বসু। আলোচনার বিষয় “মৌমাছি এবং পরাগ সংযোগ – প্রসঙ্গ বিশ্বের উৎপাদনশীলতা।

বিদেশে কিভাবে মৌমাছির মড়ক লাগছে , কৃষি উৎপাদনশীলতা কি করে কমছে এবং ভবিষ্যতে পৃথিবী কোন দিকে যাচ্ছে বিশদে উল্লেখ করেন। সঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন ” ভারতবর্ষে এখনো পর্যন্ত কোন মৌমাছির বাজেট বা অডিট বা কোন রকম গবেষণার হাত দেয়া হয়নি। এরই ফাঁকে হারিয়ে যাচ্ছে ভারতবর্ষের জীব বৈচিত্রের সম্পদ। ”

মহিষাদল রাজ কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শুভময় দাস বলেন,” প্রজাপতি মৌমাছি এবং বাদুড় পরাগ সংযোগকারী এই ত্রয়ী না থাকলে পৃথিবী বন্ধ্যা হয়ে যাবে। ইনফরমেশন, নলেজ এবং উইসডম পর্যন্ত পৌঁছলে তবেই পৃথিবী বাঁচবে। কেবলমাত্র তথ্যে পৃথিবী বাঁচবে না। এই আলোচনা চক্রের বিষয়গুলিকে প্রয়োগমূলক করতে না পারলে এই আলোচনা চক্র বৃথা। ভবিষ্যতে পলিনেশন বায়োলজি কেন্দ্র খুলবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অর্জি জানান।

এরপরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক প্রফেসর এন্টনি গোমস,” সাপের বিষ এবং সম্ভাবনা” বিষয়ক বক্তব্য রাখেন। সাপের বিষ কী এবং তার প্রকৃতি এবং সেখান থেকে এন্টিভেনাম তৈরির পদ্ধতি এবং ভবিষ্যতের গবেষণা উল্লেখ করেন।

সবশেষে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক শংকর কুমার রায় বর্তমান গবেষণায় গণিতের ভূমিকা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন ,”গণিত ছাড়া বর্তমান বায়োলজি অচল । বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা একসঙ্গে মিলিত না হলে আগামী ভবিষ্যতে পৃথিবীর কোন সমস্যার সমাধান অসম্ভব।

অন্যতম আয়োজক অধ্যাপক শুভময় দাস বলেন,সংবেদনশীল মন এবং আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি ছাড়া বর্তমান বিজ্ঞান সামনের দিকে এগোতেই পারবে না। এখনো শুরু করলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাঁচানোর যথেষ্ট সুযোগ আছে যদি একটা মাত্র নীল পৃথিবীতে বাঁচানো যায় ।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ