কলকাতা 

বিধানসভায় মরহুম ইদ্রিস আলীকে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর, কয়েক হাজার মানুষের চোখের জলে গোবরায় দাফন!

শেয়ার করুন

ইসরাফিল বৈদ্য ও ইবাদুল ইসলাম : প্রয়াত প্রাক্তন সাংসদ, বর্তমান বিধায়ক ইদ্রিস আলি। দীর্ঘ দিন ধরেই ক্যানসার এবং বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন তিনি। ভর্তি ছিলেন একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টো ২০ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তৃণমূল শিবিরে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের বিধায়কের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে প্রয়াত বিধায়কের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন। বলাবাহুল্য ইদ্রিস আলী মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন।কোভিডে আক্রান্ত হওয়ায় ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে তাঁকে সে ভাবে প্রচারে দেখা যায়নি। তা সত্ত্বেও অবশ্য এক লক্ষেরও বেশি ব্যবধানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীকে হারিয়ে জয়ী হয়েছিলেন তিনি।কোভিড পরবর্তী তাঁর শরীর ভাঙতে শুরু করে। চলাফেরার ক্ষেত্রেও তাঁর সমস্যা হচ্ছিল। রাজ্যের বাজেট অধিবেশনে এক দিনের জন্যও বিধানসভায় যেতে পারেননি তিনি।

Advertisement

ইদ্রিসের রাজনৈতিক জীবন শুরু কংগ্রেসে। কংগ্রেসের অন্দরে সোমেন মিত্রের ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসাবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। সোমেনের হাত ধরেই কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে আসেন তিনি। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদের জলঙ্গী আসনে তাঁকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। তবে সে বার জয়ের মুখ দেখেননি তিনি। ২০১৪ সালে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করে রাজ্যের শাসকদল। বিপুল ব্যবধানে জয়ী হন ইদ্রিস। তবে ২০১৯ সালে তাঁকে আর টিকিট দেয়নি দল। তবে উলুবেড়িয়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী করা হয়। জিতে বিধানসভায় যান ইদ্রিস। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে তাঁকে ভগবানগোলা আসন থেকে প্রার্থী করে তৃণমূল।

রাজনীতিক ছাড়াও পেশাগত জীবনে কলকাতা হাই কোর্টে আইনজীবী হিসাবেও সুনাম অর্জন করেছিলেন ইদ্রিস। তা ছাড়া পারিবারিক সূত্রে বেকারির ব্যবসা ছিল তাঁর। ইদ্রিসের পরিবারে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং এক ছেলে।

শুক্রবার ইদ্রিস আলীর মরদেহ পঃবঃ বিধানসভায় আনা হয় বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে। সেখানে বিধায়কের শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন অধ্যক্ষ বিমান ব্যানার্জী,রাজ্যের পৌর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী তাজমুল হোসেন, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, রথীন ঘোষ, শশী পাঁজা,অখিল গিরি,বীরবাহা হাসদা,সহ দলীয় মন্ত্রী, বিধায়ক সহ বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা। শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়ায় শরিক হন সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ হাসান ইমরান, উঃ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের বন ও ভূমি স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ একেএম ফারহাদ, বিধায়ক শ্রী তাপস চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।

এদিন বিকেল চারটে পনেরো নাগাদ তার জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। গোবরা এক নম্বর কবরস্থানে মরহুম ইদ্রিস আলীকে সমাহিত করা হয়। কবরস্থানে এই জনপ্রিয় সংখ্যালঘু নেতা কে কবর দেওয়ার জন্য কয়েক হাজার মানুষ সমবেত হন। কবর সমাধান হওয়ার পরেও বিভিন্ন গাড়িতে করে মানুষ আসতে থাকেন মাগরিবের নামাজের পরও দেখা যায় গোবরা কবর স্থানে মানুষের ভিড়। গোবরা কবরস্থানে মরহুম ইদ্রিস আলী কে সমাহিত করতে আসেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা বিশিষ্ট আলেম মাওলানা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট আইনজীবী একরামুল বারি, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, সউদ আলম, ইশতিয়াক আহমেদ রাজু, সিয়ামত আলী জাহাঙ্গীর আলী আব্দুস সামাদ এছাড়াও পার্ক সার্কাস, রিপন স্ট্রিট সহ আরামবাগ মহকুমার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসেছিলেন এই কবরস্থানে। এছাড়া তার একমাত্র সন্তান ইমরান জামাতা সহ পরিবারের আত্মীয়-স্বজনরাও উপস্থিত ছিলেন।কার্যত গোবরা এলাকায় প্রচুর মানুষের সমাগম হয়েছিল।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ