রাজ্যসভার প্রার্থী তালিকায় তৃণমূল নেত্রীর চমক সাগরিকা ঘোষ! কে এই সাগরিকা ঘোষ? কী তার পরিচয়!
সেখ ইবাদুল ইসলাম : ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবাংলার পাঁচটি রাজ্যসভার আসনে নির্বাচন হতে চলেছে ফেব্রুয়ারি মাসের ২৯ তারিখে। রবিবার দুপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের ওয়েবসাইটে দেখা গেল তৃণমূলের পক্ষ থেকে চারজনকে এবারের রাজ্যসভার প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য পশ্চিমবাংলায় বিধানসভার সদস্য পদের নিরিখে এই রাজ্য থেকে পাঁচটি রাজ্যসভার সাংসদ পদ শূন্য হলেও এবার চারটিতে সরাসরি জিততে পারবে তৃণমূল কংগ্রেস একটি জিতবে বিজেপি।
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবারের রাজ্যসভার নির্বাচনটিকে খানিকটা মসৃণ করতে চেয়েছেন। তাই কংগ্রেস বা বামেরা যখন বিরোধী দলের আসনে ছিল সেসময় যেভাবে কংগ্রেস ভাঙ্গিয়ে রাজ্যসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীকে জেতানো হয়েছিল এবার কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেটা চাইছেন না বলেই আমাদের মনে হয়েছে। তাই রাজ্যসভার নির্বাচনে তিনি পাঁচটি প্রার্থী দিতেই পারতেন তা না করে তার দলের জন্য বরাদ্দ চারটি আসনেই তিনি প্রার্থী ঘোষণা করেছেন।
এই চার প্রার্থীর মধ্যে নতুন করে প্রার্থী হয়েছেন তিনজন বর্তমান রাজ্যসভার সাংসদ নাদিমুল হককে পুনরায় প্রার্থী করা হয়েছে বাকি তিনজন নতুন। এই তিনজন হলেন বনগাঁর প্রাক্তন সাংসদ মমতা বালা ঠাকুর, অসমের প্রাক্তন সাংসদ ও সন্তোষ মোহন দেবের মেয়ে সুস্মিতা দেব এবং সাংবাদিক সাগরিকা ঘোষ।
প্রশ্ন উঠেছে কে এই সাগরিকা,তিনি কি পশ্চিমবাংলায় থাকেন? না তিনি পশ্চিমবাংলায় থাকেন না! সাগরিকা ঘোষ প্রাক্তন আমলা ভাস্কর ঘোষের মেয়ে এবং ইন্ডিয়া টুডের সাংবাদিক রাজদীপ সারদেশাইয়ের স্ত্রী। তিনিও একজন সাংবাদিক লেখক এবং টিভি চ্যানেলের অ্যাঙ্কার ছিলেন। আপনাদের হয়তো মনে আছে বেশ কয়েক বছর আগে কলকাতার টাউনহলে এক লাইভ টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠান ছেড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেরিয়ে গিয়েছিলেন। এক ছাত্রীর অপ্রিয় প্রশ্ন শুনে তিনি অনুষ্ঠান ত্যাগ করেছিলেন সেই অনুষ্ঠানের যিনি সঞ্চালনা করেছিলেন তিনি হলেন সাগরিকা ঘোষ।
সাগরিকা ঘোষ লেখক হিসাবে খুবই জনপ্রিয়। তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর উপর একটি বই লিখেছিলেন যা সেই সময় খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। পরবর্তীকালে অটল বিহারী বাজপেয়ীকে নিয়েও তিনি বই লিখেছেন। বঙ্গসন্তান হলেও দিল্লির রাজনীতিতে সাগরিকা ঘোষ এবং তার স্বামী রাজদীপ সারদেশাইয়ের প্রভাব প্রতিপত্তি নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। মনে করা হচ্ছে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যসভাতে এমন একজন ব্যক্তিকে পাঠাতে চাইছেন যিনি ইংরেজি এবং হিন্দি ভাষায় দক্ষ হবেন ভালো বক্তা হবেন। সেই দিক থেকে সাংবাদিক সাগরিকা ঘোষকে বেছে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত দূরদর্শী রাজনৈতিক চাল চেলেছেন বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছেন।