মাড়গ্রাম খানকাহে কাদেরিয়ায় ‘মসজিদুল গওসিল আযম’ পাকের শুভ উদ্বোধন
বিশেষ প্রতিনিধি : ৭ই ফেব্রুয়ারি বুধবার দিবাগত রাত অর্থাৎ ২৭শে রজব পবিত্র শবে মেরাজ পাকের রাতে মাড়গ্রাম খানকাহে কাদেরিয়ায় নির্মিত ‘মসজিদুল গওসিল আযম’ পাকের শুভ উদ্বোধন সম্পন্ন হল।
সুফি কাদেরিয়া তরিকার প্রতিষ্ঠাতা ‘বড় পীর সাহেব’ গওসুল আযম দাস্তগীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (আঃ) এর নাম পাকের সঙ্গে সম্পৃক্ত এই মসজিদের উদ্বোধন করলেন তাঁর ই ২৩ তম বংশধর এবং একইসঙ্গে ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মুহাম্মদ(সঃ)এর ৩৬ তম বংশধর – সিলসিলা এ কাদেরিয়া-র বর্তমান সাজ্জাদানশীন হুযুর পাক হযরত সৈয়দ শাহ ইয়াসূব আলী আল কাদেরী।
২০১৫ সালের ৪ই আগস্ট এই মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন সাজ্জাদানশীন ‘বড় হুযুর পাক’ হযরত সৈয়দ শাহ রশীদ আলী আল কাদেরী(আঃ)। অসাধারণ স্থাপত্য শৈলী এবং উৎকৃষ্ট মার্বেলের সুন্দর নকশা খচিত এই মসজিদ পাকের গম্বুজটি ইরাকের বাগদাদে অবস্থিত ‘গওসুল আযম’ হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (আঃ)এর মাযার শরীফ সংলগ্ন মসজিদ পাকের গম্বুজের আদলে তৈরি।
প্রসঙ্গত আজ থেকে প্রায় আড়াইশো বছর আগে (১৭৬৬) হযরত মুহাম্মদ (সঃ) পাকের ২৮ তম এবং বড় পীর সাহেব আব্দুল কাদের জিলানী(আঃ) এর ১৫ তম বংশধর হযরত সৈয়দ শাহ আব্দুল্লাহ আল জিলী আল বাগদাদী ইরাকের বাগদাদ শরীফ হয়ে হিন্দুস্তানে আসেন এবং বাংলার বুকে কাদেরিয়া তরিকার প্রসার ঘটে। এই বংশের অন্যতম উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক ‘মওলা পাক’ হযরত সৈয়দ শাহ মুরশেদ আলী আলকাদেরী(আঃ)। প্রতিবছর ৪ই ফাল্গুন মেদিনীপুরে যাঁর উরসে বাংলাদেশ থেকে স্পেশাল ট্রেন আসে।
এই মাড়গ্রাম পশ্চিমবঙ্গ তথা অবিভক্ত বাংলার সর্ববৃহৎ গ্রাম। এই গ্রামের মানুষজন প্রথম থেকেই সুফি কাদেরিয়া তরিকার অনুসারী থেকেছেন। মেদিনীপুরের ‘মওলা পাক’, তাঁর আব্বাজান ‘আলা হুযুর পাক’ এবং পরবর্তী সাজ্জদানশীনগণ প্রত্যেকেই এই মাড়্গ্রামে তশরিফ এনেছেন। পরবর্তীকালে ‘বড় হুযুর পাক’ হযরত সৈয়দ শাহ রশীদ আলী আলকাদেরী(আঃ)এর আমলে ২০০১ সালের ৩রা নভেম্বর এই নাড়গ্রাম কাদেরিয়া খানকা শরীফের উদ্বোধন হয় এবং আশেপাশের এক বিশাল অঞ্চলের মানুষের হেদায়েত ও সুফি কাদেরিয়া তরিকার প্রাণকেন্দ্র হয়ে ওঠে। এই পবিত্র মসজিদের উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে মিলাদ মাহফিল ও সারারাত ব্যাপী ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সমস্ত জেলা থেকে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে অগণিত ভক্ত এই অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। খানকা শরীফের তরফ থেকে তাদের থাকার জন্য ক্যাম্প এবং খাবার ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়।