”যদি দুর্নীতি প্রমাণিত হয়, আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব” ঝাড়খন্ড বিধানসভায় আস্থা ভোটে অংশ নিয়ে বললেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন
বাংলার জনরব ডেস্ক : দেশের রাজনীতিতে বিরল ঘটনার সাক্ষী রইল ইডি হেফাজতে থাকাকালীন সময়ে ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখলেন। গত শুক্রবার রাঁচীর বিশেষ অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ) আদালত জেএমএম নেতাকে পাঁচ দিনের ইডি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিল। শনিবার হেমন্তের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাঁকে সোমবারের আস্থাভোটে অংশ নেওয়ার অনুমতি দেয় আদালত। তাঁর দলের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে এ দিন বিধানসভায় যান হেমন্ত। বিতর্কে অংশ নিয়ে গ্রেফতারির নেপথ্যে রাজভবনেরও হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন। দেশের রাজনীতির ইতিহাসে কোনও রাজনীতিক হেফাজতে থাকাকালীন আইনসভায় দাঁড়িয়ে বক্তব্য রেখেছেন, তা স্মরণ করতে পারছেন না রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কেউই।
সে দিক থেকে দেখতে গেলে সোমবার দুপুরে বিরল ঘটনার সাক্ষী থাকল কেবল ঝাড়খণ্ড নয়, গোটা দেশ। এ দিন রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণণের ভাষণ দিয়ে শুরু হয় বিধানসভার অধিবেশন। বক্তব্য রাখেন হেমন্তের গ্রেফতারির পর দল এবং সরকারের দায়িত্ব সামলানো ঝাড়খণ্ডের নতুন মুখ্যমন্ত্রী চম্পই সোরেন। তার পরই বক্তব্য রাখতে ওঠেন শিবু সোরেনের পুত্র। নিজের বক্তব্যে হেমন্ত এক দিকে যেমন ইডি এবং বিজেপিকে তোপ দেগেছেন, তেমনই আদিবাসী আবেগেও শান দিতে চেয়েছেন।
হেমন্ত বলেন, “৩১ জানুয়ারি রাতে দেশে প্রথম বার এক জন মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হল। তার পরই তাঁর সংযোজন, “আমি বিশ্বাস করি রাজভবন এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত।” সরাসরি নাম না করা হলেও মনে করা হচ্ছে, তাঁর গ্রেফতারির জন্য রাজ্যপালকেই দায়ী করলেন হেমন্ত। বিজেপিকে তোপ দেখে তিনি বলেন, “যদি তাদের সাহস থাকে, তবে যে জমিতে আমার নাম নথিভুক্ত হয়েছে, তার নথি দেখাক। যদি (দুর্নীতি) প্রমাণিত হয়, আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।”
তিনি আরো বলেন, “এরা ভাবে, আমাকে জেলে ভরে উদ্দেশ্য সফল হবে। এটা ঝাড়খণ্ড। দেশের এমন রাজ্য, যার প্রতি কোণে আদিবাসী, দলিতেরা আছেন। রক্তের বিনিময়ে তাঁরা লড়াই করেছেন। আদিবাসীদের জোর এত কম নয়। তিনি না কেঁদে কান্না জমিয়ে রাখছেন বলেও দাবি করেছেন হেমন্ত। তিনি বলেন, “এদের কাছে আদিবাসীদের চোখের জলের কোনও দাম নেই।”
ইডি হেফাজতে থাকাকালীন সময়ে সম্ভবত দেশের প্রথম একজন রাজনীতিবিদ যিনি আইনসভায় এসে নিজের বক্তব্য পেশ করলেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি যে ভাষায় মোদি সরকারকে নিশানা বানালেন তাতে যে ঝাড়খন্ডে বিজেপি বেকায়দায় পড়ে গেল তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। বিশেষ করে আদিবাসী সমাজে বিজেপি ব্রাত্য হয়ে যেতে পারে তা মনে করছে রাজনীতিক মহল।