অন্যান্য 

Rahul Gandhi: রাহুলের বাংলা সফরে উজ্জীবিত কংগ্রেস, সংখ্যালঘু ভোট ভাগের সম্ভাবনা, চাপে মমতা!

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সেখ ইবাদুল ইসলাম : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ঔদ্ধত্য নিয়ে এই রাজ্যে কংগ্রেসকে ব্রাত্য করেছিল তা যে ভুল ছিল প্রমাণ মিলছে রাহুলের বাংলা সফরে। প্রথম দফায় কোচবিহার থেকে উত্তর দিনাজপুরে সাধারণ মানুষের যে উচ্ছ্বাস রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রাকে ঘিরে দেখা দিয়েছিল তার চেয়েও অনেক বেশি উচ্ছ্বাস দেখা গেল মালদহ, মুর্শিদাবাদ এবং বীরভূমে।

অথচ এই জনজোয়ারে ইচ্ছা করলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অংশ নিতে পারতেন এবং নিজেকে প্রমাণ করতে পারতেন বিজেপি বিরোধিতা নিয়ে তার মধ্যে কোন খাদ নেই। দ্বিতীয় দফায় রাহুল গান্ধী বিহার থেকে যখন বাংলায় প্রবেশ করলেন সেই প্রবেশ পথকে ঘিরে যেভাবে মালদহ থেকে মুর্শিদাবাদ পর্যন্ত জনসমুদ্র এ পরিণত হলো তাতে এবার হয়তো তৃণমূল নেত্রী ভাবতে শুরু করেছেন, রাজনৈতিকভাবে রাহুল খেলাটাকে ঘুরিয়ে দিয়েছেন। এতদিন যে খেলা করার কথা তিনি বলেছেন । রাহুলের বঙ্গ সফরের সময় এটাই স্পষ্ট হয়েছে যে জনপ্রিয়তার নিরিখে এখনো রাহুল গান্ধী এগিয়ে রয়েছে। বিশেষ করে উত্তর দিনাজপুর থেকে শুরু করে মুর্শিদাবাদ পর্যন্ত সংখ্যালঘু সমাজের সাধারণ মানুষ যেভাবে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে তাতে খানিকটা চিন্তায় তো রাখবে তৃণমূলকে এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাতেই কথা বলছিলাম এই রাজ্যের বর্ষীয়ান বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে তাঁরা বললেন রাহুল গান্ধীর সভায় এবং যাত্রায় যেভাবে জনসমাগম হচ্ছে তা ইদানিংকালে এ বাংলার রাজনীতির অঙ্গনে কোন নেতার ক্ষেত্রে হয়নি। এমনকি সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুর্শিদাবাদ সফরে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি সভা করেছেন সেই সভাতে এত লোক দেখা যায়নি। ওই সাংবাদিকদের ভাষ্য অনুসারে যেভাবে সিপিএম রাহুল গান্ধীর এই সফর থেকে চাঙ্গা হল, এর ফলে পশ্চিমবাংলার রাজনীতিতে একটা অন্য সমীকরণ দেখা যাবে।

সেই সমীকরণটা কী হতে পারে তা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা হওয়াটা জরুরী তবে একথা ঠিক রাহুল গান্ধীর বঙ্গ সফর ঘিরে কংগ্রেস এবং সিপিএম অনেকটাই চাঙ্গা হল। বিশেষ করে মুর্শিদাবাদ জেলার তিনটে লোকসভা আসন মালদহের দুটি লোকসভা আসন এবং উত্তর দিনাজপুরের একটি লোকসভা আসনে এর ব্যাপক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই চত্বরের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্ক যদি ভাগ না হয়ে একতরফাভাবে কংগ্রেসের পক্ষে পড়ে যায় তাহলে এটা স্বীকার করতেই হবে এই অঞ্চলে ছটি লোকসভা আসনের মধ্যে ৬টি পেতে পারে বাম কংগ্রেস জোট।

আর উত্তরবঙ্গে কংগ্রেস সক্রিয় হলে দক্ষিণবঙ্গেও এর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণবঙ্গে বিশেষত নওশাদ সিদ্দিকীর দল আইএসএফ যথেষ্ট শক্তিশালী এবং জনপ্রিয়। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে রাহুল গান্ধী এবং কংগ্রেসকে তাচ্ছিল্য করেছে তার ফলে এই রাজ্যের সংখ্যালঘু জনগণ মনে করতে শুরু করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসলে বিজেপির সুবিধা করে দিতে চাইছে। এর ফলে দক্ষিণবঙ্গের একটা বড় অংশের সংখ্যালঘু সমাজ এবং তৃণমূল বিরোধী ভোট একসঙ্গে বামপন্থী এবং আইএসএফের পক্ষে যেতে পারে সেক্ষেত্রে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক আসন হেরে যেতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব না কোন বাধ্যবাধকতার কাছে আত্মসমর্পণ করে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে যেতে রাজি হননি তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে এটা ঠিক কথা কংগ্রেসকে যদি আটটি আসন ছেড়ে দিত সেক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রাজ্য থেকে বিজেপিকে গোহারা হারাতে পারতো। এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। দেশের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপি বিরোধীতা কে প্রমাণ করার জন্য আন্তরিকভাবে জোটে যাওয়া কারণ এই জোট হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অস্তিত্ব নিয়ে কোন সংকট দেখা দিতো না। বরং এই অনৈক্যের সুবিধা নিয়ে যদি বিজেপি এখানে ভালো ফল করতে পারে আর দিল্লিতে ক্ষমতায় যেতে পারে তাহলে সবার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেই আঘাত টা আসবে অন্য কারো কাছে নয়।

তাই শেষ বিচারে বলবো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো একজন প্রবীণ রাজনীতিবিদ গণ আন্দোলন থেকে উঠে আসা জনপ্রিয় নেত্রী যেভাবে কংগ্রেসকে তাচ্ছিল্য অপদস্ত করেছেন তাতে আগামী দিনে তৃণমূলের বিপদ তিনি নিজেই ডেকে আনছেন।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ