কলকাতা 

রাত পোহালেই হাই মাদ্রাসা আলিম ও ফাজিল পরীক্ষা শেষ মুহূর্তে পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মাদ্রাসা পর্ষদের সভাপতি ড. আবু তাহের কামরুদ্দিনের পরামর্শ

শেয়ার করুন

রাত পোহালেই হাই মাদ্রাসা আলিম ও ফাজিল পরীক্ষা

মতিয়ার রহমান : পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিগত বছর গুলির ন্যায় এ বছরও রাজ্যে আসন্ন মাধ্যমিক হাই মাদ্রাসা, আলিম ও ফাজিল পরীক্ষা যাতে সর্বাঙ্গিন ভাবে সাফল্যের সাথে সমাপ্ত হয় তার জন্য বহু আগেই গোটা পরীক্ষা ব্যবস্থার সাথে যুক্ত সেকেন্ডারি বোর্ড অফ এডুকেশন ,মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ থেকে শুরু করে প্রশাসনের বিভিন্ন মহলকে সজাগ ও সচেতন হয়ে অত্যন্ত তৎপরতার সাথে যাবতীয় দায়-দায়িত্ব ও কর্তব্য কর্ম সুচারুভাবে সুসম্পন্ন করার নির্দেশ ও সু পরামর্শ দিয়েছেন। যেহেতু মুখ্যমন্ত্রীর অধীনস্থ সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা, তাই হাই মাদ্রাসা আলিম ও ফাজিল পরীক্ষায় যাতে সামান্যতম ঘাটতি ও ত্রুটি না থাকে সেই বিষয়টি মাথায় রেখে মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ডক্টর আবু তাহের কামরুদ্দীন নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধে অবিচল থেকে বিগত বছরগুলিতে পরীক্ষা ব্যবস্থা যেভাবে দক্ষতার সাথে পরিচালনা করেছেন ঠিক সেভাবেই এ বছরও পরীক্ষা প্রস্তুতির সব রকম বন্দোবস্ত ইতিমধ্যেই সুনিশ্চিত করে ফেলেছেন। তিনি রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে ওই নির্দিষ্ট জেলার ডিস্ট্রিক্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অর্থাৎ ডি এম ,এডিএম, ডোমা ,বিদ্যালয় পরিদর্শক ,সরকারি আধিকারিক যারা সেন্টার সুপারেনটেনডেন্টের দায়িত্ব পালন করে থাকেন প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা ,মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের সদস্য এবং পর্ষদের মনোনীত ডিস্ট্রিক্ট লেভেল এডভাইজরি কমিটির সদস্য এবং সাথে স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ এবং পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন আধিকারিকদের নিয়ে পরীক্ষা প্রস্তুতির বৈঠক করেছেন।

তিনি প্রায় প্রতিটি বৈঠকেই সকলকে উদ্দেশ্য করেই বলেছেন যে পরীক্ষাটা হল একটা টিম ওয়ার্ক। পরীক্ষা পদ্ধতিকে যাতে আরো সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে করা যায় এবং পরস্পর পরস্পরের মধ্যে একটা সমন্বয়ের সেতু গড়ে তুলে সমাবেত প্রচেষ্টার মাধ্যমে গোটা পরীক্ষা প্রক্রিয়ার কাজটা সুসম্পন্ন করা যায় তারই মূল্যায়ন ও পর্যালোচনার জন্যই এই বৈঠক। উপস্থিত সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন আগামী ১ লা ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পরীক্ষা চলবে। তবে এবছর পরীক্ষার সময় একটু এগিয়ে এসেছে। বিগত দিনে পরীক্ষা শুরু হতো ১১ঃ৪৫ আর শেষ হতো ৩ টায়। এবছর পরীক্ষা শুরু হবে ৯: ৪৫ মিনিট আর শেষ হবে ১ টায়।

Advertisement

উল্লেখ্য,এবছর হাই মাদ্রাসা আলিম এবং ফাজিল পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায়৭০ হাজার এবং ২০৪ টি পরীক্ষা কেন্দ্রে এই সত্তর হাজার ছাত্রছাত্রীর পরীক্ষা নেওয়া হবে। তবে একটি ভালো দিক হলো এ বছরে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা আগের বারের তুলনায় অনেক বেশি।

পর্ষদ সভাপতি আরও বলেন,এই সময়ের বিষয়টা যাতে প্রত্যেক পরীক্ষার্থী অবগত হয় সেটার দায়িত্ব সকলকে বিশেষ করে প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকাদের নিতে হবে। পারলে পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে স্টুডেন্ট গাইডলাইনসহ পরীক্ষার সময় উল্লেখ করে ব্যানার অথবা ফ্লেক্স টাঙিয়ে দিতে পারেন। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীরা অবশ্যই এই কথাগুলি জানাবেন যে পরীক্ষা কেন্দ্রে অবশ্যই কোন অভিভাবক এবং বাড়ির লোকজনদের নিয়ে প্রবেশ করব না।এডমিট কার্ড এবং রেজিস্ট্রেশনের আসল কপি নিয়ে পরীক্ষা কক্ষে ঢুকবে ।কোন অবস্থাতেই এডমিট কার্ড এবং রেজিস্ট্রেশনের জেরক্স কপি গ্রহণযোগ্য হবে না। পরীক্ষার্থীরা মোবাইল ফোন এবং কোন ধরনের ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র সঙ্গে রাখবে না। প্রতিটি পরীক্ষায় তারা এটেনডেন্ট সিটে সই করবে। পরীক্ষার পুরো সময় শেষ করার পরেই তারা প্রশ্নপত্র নিয়ে পরীক্ষা কক্ষের বাইরে বেরোবে। পরীক্ষা চলাকালীন কোনরকম অসৎ উপায় অবলম্বন করবে না। কোন ধরনের বিভ্রান্তি এবং গুজবে কান না দিয়ে বরং কোন সমস্যা দেখা দিলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তার সমাধান করবে।

তিনি বলেন, কোন পরীক্ষার্থী যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং সাথে করে রাইটার নিয়ে আসে তাহলে এক্সাম সেন্টার কর্তৃপক্ষ অবশ্যই তার অসুস্থতার বিষয়টি আগে যাচাই করবেন। তবে ওই রাইটারকে ওই সংশ্লিষ্ট মাদ্রাসার বোনাফাইড স্টুডেন্ট হতে হবে।রাইটারের যোগ্যতা সবসময় পরীক্ষার্থীর চেয়ে কম হবে অর্থাৎ মাদ্রাসা এবং আলিম পরীক্ষার জন্য রাইটারের যোগ্যতা হবে নাইন পাস এবং ফাজিলের জন্য হবে একাদশ পাস। তবে একদিন রাইটার নিয়ে পরীক্ষায় বসার পরই বোর্ডকে জানিয়ে অবশ্যই তার সার্টিফিকেট নিতে হবে। অন্যথা দ্বিতীয় দিন ওই রাইটার নিয়ে পরীক্ষায় বসতে পারবে না।

ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, হাই মাদ্রাসা কিংবা আলিম জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা। একদম চাপমুক্তভাবে যে যেটুকু পেরেছো অর্থাৎ যে যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছো সেভাবেই পরীক্ষাটা দেবার চেষ্টা করবে। কোন অসৎ উপায় কিংবা চাপ নিয়ে কিছুই লাভ হবে না কারণ পরীক্ষা এমন একটা বিষয় যদি তোমার মানসিক টেনশন থাকে তাহলে অনেক জানা জিনিসও ভুলে যাবে। অনেক সহজ জিনিসও তোমার কাছে কঠিন মনে হবে। আরো বলেন নতুন করে আর কিছু প্রস্তুতি করতে না গিয়ে যেভাবে তৈরি হয়েছো যেভাবে তোমরা মনে করছ তোমাদের পরীক্ষাটা ভালো হবে তোমাদের প্রস্তুতির নিরিখে সেভাবেই তোমরা পরীক্ষা দেবে।

তবে পরীক্ষার দিনগুলিতে সতর্ক ও সচেতন ভাবে থাকবে এবং স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখবে। তোমাদের সকলের পরীক্ষা ভালো হোক। তোমাদের প্রত্যেকের সাফল্য কামনা করছি কারণ তোমরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ ।তোমাদের ভালো মন্দের সাথে জাতির এবং সভ্যতার ভালো মন্দ জড়িয়ে রয়েছে।

সাক্ষাৎকার ভিত্তিক এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন আকরা হাই মাদ্রাসার শিক্ষক মতিয়ার রহমান।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ