জেলা 

রাহুল গান্ধীর মধ্যাহ্ন ভোজের জন্য মালদহে বাংলো দিল না প্রশাসন, ক্ষোভ প্রকাশ কংগ্রেসের

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : অসমের বিজেপি সরকারের সঙ্গে পশ্চিমবাংলার তৃণমূল সরকারের খুব বেশি যে তফাৎ নেই তার প্রমাণ পাওয়া গেল রাহুল গান্ধীকে সরকারি বাংলো না দেওয়ার সিদ্ধান্তে।আগামী ৩১ জানুয়ারি কংগ্রেস নেতার ‘ন্যায় যাত্রা’ মালদহ জেলায় প্রবেশ করার কথা। সেই মতো প্রস্তুতি নিতে গিয়ে দলীয় নেতারা রতুয়া থানার ভালুকার সেচ দফতরের অতিথিশালায় রাহুলের মধ্যাহ্নভোজের ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলেন। তার জন্য জেলা কংগ্রেসের তরফে প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদনও করা হয়। কিন্তু জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সেই অনুমতি দেওয়া হয়নি। প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই দিন মালদহ সফরে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই জেলার কোনও সরকারি অতিথিশালায় এখন থাকা-খাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না কাউকেই। উল্লেখ্য এই অতিথি শালাটা নির্মাণের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন মালদা জেলার উন্নয়নের অন্যতম কারিগর এ বি এ গণি খান চৌধুরী। যিনি ছিলেন শেষ জীবন পর্যন্ত মালদহের কংগ্রেসের সাংসদ।

শিলিগুড়িতে রাহুলের ‘ন্যায় যাত্রা’য় সভা এবং পদযাত্রায় পুলিশের অনুমতি নিয়ে একপ্রস্ত বিতর্কের পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর জেলা মুর্শিদাবাদেও ‘প্রশাসনিক বাধা’ এসেছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি বহরমপুরে রাহুলের যাত্রা থাকার কথা। সেই মতো কংগ্রেস নেতাদের রাত্রিবাসের জন্য বহরমপুর স্টেডিয়াম চাওয়া হয়েছিল। প্রশাসন সেই অনুমতি বাতিল করে দিয়েছে। কংগ্রেসের একটি সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক বৃহস্পতিবার তাদের জানিয়ে দিয়েছে, বহরমপুর স্টেডিয়াম দেওয়া যাবে না। বিকল্প হিসাবে নিকটবর্তী এফইউসি মাঠ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে প্রশাসন। সেই জট এখনও কাটেনি। তার মধ্যেই সরকারি অতিথিশালায় রাহুলকে মধ্যাহ্নভোজের অনুমতি না দেওয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

Advertisement

জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা প্রাক্তন বিধায়ক ভূপেন্দ্রনাথ হালদার অভিযোগ করেন, সরকারি আধিকারিকেরা যদি এই অতিথিশালা কংগ্রেসকে ব্যবহার করতে দেন, তা হলে মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভে পড়তে পারেন। তাই কংগ্রেসের আবেদন নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। ভূপেন্দ্রর দাবি, ‘‘সরকারি নিয়ম মেনেই অতিথিশালায় রাহুল গান্ধীর মধ্যাহ্নভোজের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু তা দেওয়া হল না।’’ পাল্টা জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি দুলালচন্দ্র সরকার বলেন, ‘‘সারা বছর ঘুমিয়ে থাকে কংগ্রেস। ভোট আসলে জেগে ওঠে। অভিযোগ করা ছাড়া কংগ্রেসের কোনও কাজ নেই। এই জানুয়ারি মাসে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের নানান প্রকল্পের মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাই সরকারি গেস্ট হাউসগুলি বুকিং করা হয়, যাতে বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরা থাকতে পারেন। হঠাৎ করে কংগ্রেস নেতা এলে তাঁকে অতিথিশালা দেওয়া সম্ভব নয়। এই রাজনীতি মালদহে চলে না।’’

রাহুল গান্ধীকে পশ্চিমবাংলায় বারবার বাধা দিয়ে রাজ্যের সাধারণ মানুষের কাছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মানবিক মুখকে বিনষ্ট করার চেষ্টা করছে এক শ্রেণীর আমলা বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। আর রাহুল গান্ধীকে বাধা দেওয়ার ফলে এই রাজ্যের সাধারণ মানুষ প্রশাসনের প্রতি বিরক্ত বলেও জানা যাচ্ছে। বিজেপি বিরোধী যে কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং সাধারন মানুষ বিষয়টিকে খুব ভালো চোখে দেখছে না।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ