কলকাতা 

রাজ্যের যুক্তিকে বোগাস বলেও রাজ্য সরকারের নির্ধারিত সময়েই হবে পরীক্ষা জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ফালতু যুক্তি দেখিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় পরিবর্তন করেছে এগুলো কোন ভাবেই টেকে না তবে পরীক্ষার্থীদের সুবিধার কথা ভেবে সময় পরিবর্তন করা হচ্ছে না বলে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।

আদালতের মতে ,সময়সূচি পরিবর্তনের ভার রাজ্যের মধ্যশিক্ষা পর্ষদের উপরেই ছাড়লেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। আদালতের যুক্তি, যেহেতু মাধ্যমিক পরীক্ষার আর কয়েকদিন বাকি এই মুহূর্তে সময়সূচি বদল করলে প্রশাসনিক ক্ষেত্রে নানা অসুবিধা হতে পারে। তবে সময় পরিবর্তন নিয়ে রাজ্যের যুক্তিতে বৃহস্পতিবার খুশি হতে পারল না বলে জানিয়েছে আদালত।

Advertisement

বিচারপতি বলেন, “পৌনে ১২টার সময় পরিবর্তন করে পৌনে ১০টা হওয়ার সঠিক কারণ জানানো হয়নি। প্রশাসনিক কারণে করার কথা বলা হয়েছে। এই সময় পরিবর্তন যেমন যুক্তিযুক্ত নয়, তেমন এখন এবার এটা পরিবর্তন করতে বললে, সেটা নতুন করে সমস্যার সৃষ্টি করবে। তাতে আরও বিভ্রান্তি বাড়তে পারে পরীক্ষার্থীদের।”

কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থীর কথা মাথায় রেখে এদিন রাজ্যকে এক গুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। সেই পদক্ষেপ গুলি নিশ্চিত করে আগামী ৩১ জানুয়ারি আদালতকে রিপোর্ট জমা দেবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও রাজ্য সরকার। আদালত জানিয়েছে, প্রতিটি মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী যাতে পরীক্ষাকেন্দ্রে সঠিক সময় পৌঁছতে পারেন সে বিষয়ে রাজ্যকে সুনিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, প্রতিটি থানা এলাকায় মাইকিং করতে হবে যাতে পরীক্ষার্থীরা অসুবিধায় পড়লে পুলিশ-প্রশাসন তাদের সঠিক সময় পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেবে। পরীক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য পর্ষদকে একাধিক হেল্পলাইন নম্বর চালু করতে হবে। হেল্পলাইন নম্বর-সহ পরীক্ষার্থীরা অসুবিধায় পড়লে স্থানীয়ভাবে কোথায় যোগাযোগ করবেন তার যাবতীয় তথ্য দিয়ে বিজ্ঞপ্তি ও বিজ্ঞাপন প্রকাশ করতে হবে পর্ষদকে। এছাড়াও পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের পৌঁছনোর জন্য রাজ্যকে প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত পরিবহণ ব্যবস্থা সচল রাখতে হবে। কোনও পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে পড়লে বা পরীক্ষা কেন্দ্রে অসুস্থ হলে তার জন্য কী কী উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা আদালতকে রিপোর্টে জানাতে হবে পর্ষদকে।

মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় এগিয়ে নিয়ে আসার বিরোধিতায় একটি মামলা দায়ের হয়েছিল হাই কোর্টে। মামলায় রাজ্য জানায়, নতুন করে ৩০ জানুয়ারি থেকে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হবে। এখন প্রতি জেলায় ডিএম, এসডিও ও এসআই অফিসে কন্ট্রোল রুম খোলা আছে। পরীক্ষার্থীদের কোনও অসুবিধা হবে না বলেও নিশ্চিত করে রাজ্য। তার প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশ, কন্ট্রোল রুমের ব্যাপারটা বিজ্ঞাপন করে জানাতে হবে।

বিচারপতি জানতে চান, হটাৎ পরীক্ষা শুরুর ১৫ দিন আগে কেন এই সময় পরিবর্তন? রাজ্য জানায়, রাস্তার যানজট সমস্যার জন্যে করা হয়েছে। তাই শুনে বিচারপতির মন্তব্য, “বোগাস যুক্তি। হঠাৎ এই বছর এই সময়ে আপনাদের এটা মনে পরল কেন? আমি এই সময় পড়ুয়াদের কোনও বিড়ম্বনায় পড়ুক চাইব না। এইসব ফালতু যুক্তি দিয়ে আপনাদের কর্তারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।”


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ