ব্যতিক্রমী রাশিদ খান……… / অর্পণ বন্দ্যোপাধ্যায়
ব্যতিক্রমী রাশিদ খান………
স্মৃতিচারণা করেছেন অর্পণ বন্দ্যোপাধ্যায়
“চিরস্থির কবে নীর
হায় রে জীবন নদে”
দূরে বসে প্ৰিয়জনের মৃত্যু সংবাদ পাওয়াটা কতটা কষ্টের অনুভূতি তা আজ বুঝতে পারছি। ১৯৯৭ সালে নাকতলায় উস্তাদজির বাড়ির ঠিক বিপরীতে আমরা বাসিন্দা হয়ে আসি তখনও উস্তাদজির বাড়ি পুরোটা তৈরী হয়নি এবং আমি নিতান্তই বালক, আমার বাবা ও মায়ের নাকতলায় বাসা কেনার প্রধান উদ্দেশ্যই ছিলেন রাশিদ জি।
শিশুর মত সরল এক মানুষ যাকে কোনোদিনও উঁচু গলায় কথা বলতে দেখিনি উপরন্তু দেখেছি সাধারণ পোশাকে বাগানে হেঁটে বেড়াতে, গাছ, ফুলের পরিচর্যা করতে,পোষ্য সারমেয়র সাথে খেলা করতে, আসলে একজন প্রকৃত শিল্পী ই এতটা সাধারণ জীবন যাপন করতে পারে।কত বার বাগানে ফুলের পরিচর্যা করতে করতে আমার মায়ের অনুরোধে গান শুনিয়েছেন আবার আমি যখন ওনার বড় কন্যার সাথে খেলতে গেছি তখন সস্নেহে আমার সাথে শিশুর মত মিশে গেছেন, চকোলেট নিয়ে আমার সাথে খেলেছেন লুকোচুরি।
কত বড় বড় শিল্পীর অনুষ্ঠান তালাত আজিজ, পন্ডিত ভীমসেন জোশি, জগজিৎ সিং এর অনুষ্ঠান আমরা উস্তাদজির আমন্ত্রণে ওনার বাড়িতে বসে দেখেছি আবার আমার বাড়ির লক্ষ্মীপুজোয় উনি এসে তৃপ্তি করে ভোগ খেয়েছেন, পাড়ার বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে সক্রিয় ভাবে উপস্থিত থেকে তদারকি করেছেন আবার বাড়ির কোন অনুষ্ঠানে সস্নেহে নিমন্ত্রণ করে তাদের খাওয়ার তদারকি করেছেন। খুব পান খেতে ভালোবাসতেন। ভালোবাসতেন বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি তাই পদ্মভূষণ পুরস্কার পেয়ে তা উৎসর্গ করেছিলেন বাংলার মানুষকে। হঠাৎ চলে যাওয়া মেনে নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে উস্তাদজি সুরলোকে ভালো থাকবেন শিল্পী।
লেখক অধ্যক্ষ, ব্রিলিয়ান্ট ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। মধুবন, বিহার।