কলকাতা 

জ্যোতিপ্রিয়র লেখা এক চিঠির সূত্রে গ্রেফতার শংকর আঢ্য! টাকার বিবরণ ছাড়াও কোন কোন নেতার নাম রয়েছে চিঠিতে?

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশে এস এস কে এম এ ভর্তি থাকা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কেবিনে সিসিটিভি বসে ছিল। তারপরেই সিঙ্গেল বেঞ্চের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আইনজীবীরা। ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের রায় বাতিল করে জানিয়ে দেয় হাসপাতালের কেবিনে সিসিটিভি থাকবে না প্রয়োজন হলে কেবিনের বাইরে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে। দিনটা ছিল ১৬ ডিসেম্বর। আর আদালতের নির্দেশেই যখন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কেবিন থেকে সিসিটিভি খোলা হচ্ছিল ঠিক সেই সময়। রাজ্যের বনমন্ত্রী তার মেয়েকে একটি চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু সিসিটিভি খোলার সময় যে ছবি ওঠে সেটা হয়তো জানা ছিল না জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মেয়ের তাই এই ছবি র দৃশ্য দেখতে পান ইডির আধিকারিকরা। তারপরে কেবিন থেকে বেরোনোর পরে মোতায়ন কেন্দ্রীয় বাহিনী এই চিঠিটি বাজেয়াপ্ত করে।

সেই চিঠিতে কি ছিল তা জানা না গেলেও এটাই স্পষ্ট হয়েছে ঐ চিঠি দেখিয়ে বনগাঁর তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতে ঈদের আইনজীবী বলেছেন ওই চিঠিতে নাকি? টাকা কোথায় পাঠানো হয়েছে তার বিবরণ দেওয়ার পাশাপাশি, কেস চালানোর জন্য অর্থের কথা বলা হয়েছে এবং ওই চিঠিতে নাকি বেশ কয়েকজন নেতার নাম রয়েছে।

Advertisement

 

ইডির হাতে গ্রেফতারের পর এখন এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি জ্যোতিপ্রিয়। শনিবার ইডি দাবি করেছে, হাসপাতালে চিঠির মাধ্যমে জ্যোতিপ্রিয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। সেই চিঠি তাদের হাতে এসেছে। বাংলা এবং ইংরেজি মিশিয়ে লেখা ছিল সেই চিঠি। ১৯ ডিসেম্বর জ্যোতিপ্রিয়কে জেরা করা হয় যখন, তখন তিনি সেই চিঠির কথা স্বীকার করেন। ওই চিঠিতে টাকা পাচারের কথা লেখা রয়েছে। তাতে একাধিক জনের নাম উল্লেখ রয়েছে বলেও দাবি ইডির। ইডি আরও দাবি করেছে, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ১৬ ডিসেম্বর জ্যোতিপ্রিয়ের ঘর থেকে সিসি ক্যামেরা খোলা হচ্ছিল। সেই সময় ওই চিঠি মেয়েকে দিচ্ছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। ইডির আরও দাবি, বাবা-মেয়ের মধ্যে এই চিঠি বিনিময় হয়েছিল। সেই চিঠি ধরে ফেলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যেরা। হাসপাতালে জ্যোতিপ্রিয়ের নিরাপত্তায় বহাল ছিলেন সিআরপিএফ জওয়ানেরা। তাঁদের মাধ্যমেই ইডির হাতে চিঠিটি এসেছে বলে দাবি।

শুক্রবার রাতে শঙ্করের গ্রেফতারির পর তাঁর স্ত্রী জ্যোৎস্না জানিয়েছিলেন, জ্যোতিপ্রিয়ের সূত্র ধরেই তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘শুক্রবার রাত ১২টা ১৫ মিনিটে এক জন অফিসার এলেন। এসে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কাগজ দেখালেন। বললেন, জ্যোতিপ্রিয় আপনার নাম বলেছে। বা কেউ বলেছে। তার জন্য গ্রেফতার করল।’’ এর পরেই জ্যোৎস্না জানিয়েছেন, সারা দিন শঙ্করের সঙ্গে ব্যবসার বিষয়ে ইডি অফিসারেরা কথা বললেও জ্যোতিপ্রিয় নিয়ে কোনও কথা বলেননি। সব রকম সহযোগিতার পরেও রাত সাড়ে ১২টার সময় গ্রেফতার করা হয় তাঁর স্বামীকে। জ্যোৎস্না বলেন, ‘‘জ্যোতিপ্রিয় জেলার সভাপতি ছিলেন। সকলের কাছেই আসতেন। আমরাও যেতাম। এখন দেখছি নাটক। সারা দিন সহযোগিতা করলাম। শেষে এক জন অফিসার ব্যাগ থেকে কাগজ বার করে দেখালেন এবং বললেন জ্যোতিপ্রিয়ের জন্য গ্রেফতার করলাম।’’

শুক্রবার গ্রেফতারির পর বনগাঁয় শঙ্করের বাড়ির সামনে থেকে যখন তাঁকে গাড়িতে তোলা হচ্ছিল, আশপাশে অনেকে জড়ো হন। মহিলারাও ছিলেন সেই দলে। তাঁরা ইডির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ইডির তরফে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা বিক্ষোভকারীদের আটকাতে লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যান। রাস্তা ফাঁকা করার পরেই এগোয় শঙ্করের গাড়ি।


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ