Jamiat Ulama E Hind: দেশের সংবিধানকে সুরক্ষিত এবং জাতীয় সংহতি সম্প্রীতির রক্ষার স্বার্থে জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের বিশেষ সমাবেশ নেতাজি ইন্ডোরে
সেখ ইবাদুল ইসলাম: দেশের সংবিধানকে সুরক্ষিত রাখা, জাতীয় সংহতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি দেশ জুড়ে অক্ষুন্ন রাখার লক্ষ্যে আগামী ২০ জানুয়ারি শনিবার কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে বিশেষ সমাবেশের আয়োজন করেছে দেশের সবচেয়ে প্রাচীন মুসলিম সংগঠন জমিয়ত উলামায়ে হিন্দ। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় ১৮ থেকে ২০ হাজার মানুষ এই সমাবেশে যোগ দেবেন বলে আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করবেন পশ্চিমবঙ্গ জমিয়ত উলামায়ে হিন্দের রাজ্য সভাপতি এবং রাজ্যের গ্রন্থাগার ও জনশিক্ষা দফতরের মন্ত্রী মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। এক টেলিফোনিক সাক্ষাৎকারে রাজ্যের মন্ত্রী মাওলানা সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী জানিয়েছেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের সকলকে উদ্বেগের মধ্যে রেখেছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ এক সহনশীল এবং বহুত্ববাদীর দেশ ভারত বর্ষকে অক্ষুন্ন রাখতে বদ্ধপরিকর। জমিয়ত উলামায়ে হিন্দ দেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে যেভাবে আত্মনিয়োগ করেছিল আজ দেশের এই সংকটকালে আমরা আমাদের দায়িত্ব থেকে পিছিয়ে আসতে পারি না। সেই দায়িত্বকে যথাযথভাবে পালন করার লক্ষ্যে আগামী ২০ জানুয়ারি শনিবার বেলা দশটা থেকে কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এক বিশেষ সভার আয়োজন করা হয়েছে।
রাজ্যের এই প্রবীণ মুসলিম নেতা বলেন, মূলত চারটি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে এবং তা কার্যকর করার জন্য আগামী দিনে কি পরিকল্পনা হবে তা নিয়ে এই সভাতে আলোচনা হবে।
এক, দেশের সংবিধানকে সুরক্ষিত করা এবং সংবিধান বাঁচানোর জন্য সার্বিকভাবে উদ্যোগ নেওয়া। হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়কে সম্মিলিতভাবে এই আন্দোলনে যুক্ত করা।
দুই, সমগ্র দেশ জুড়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে অটুট রাখা এবং জাতীয় সংহতিকে দৃঢ় করার লক্ষ্যে পরিকল্পনা তৈরি করা।
তিন, এন আর সি ও সি এ এ কে কিভাবে আটকানো যাবে এবং এর বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে তা নিয়ে আলোচনা হবে।
চার, ওয়াকফ সম্পত্তি উদ্ধার করা এবং তাকে সুরক্ষিত করার জন্য কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে আলোচনা হবে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়েছে জমিয়েতের সদস্য বাদে এই রাজ্যের অন্যান্য মুসলিম সংগঠনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে জনাব সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী জানিয়েছেন, এই রাজ্যে জমিয়তের মোট সদস্য সংখ্যা প্রায় চার লক্ষ। আর এই সভাতে যোগ দেবেন শুধুমাত্র প্রতিনিধিরা বা ডেলিগেটরা। রাজ্যের ৫০০ টি শাখা সংগঠন এবং ১০০০ মাদ্রাসার শিক্ষক শিক্ষার্থীরাও এই সভাতে যোগ দেবেন। জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত জমিয়ত নেতাদের কাছ থেকে ডেলিগেট কার্ড পাওয়া যাবে বলে, সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
দেশের এই সংকটকালীন পরিস্থিতির মুখে রাম মন্দিরের উদ্বোধনের আগে জমিয়েত উলামায়ে হিন্দের এই সমাবেশকে ঘিরে রাজ্যজুড়ে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। রাম মন্দির উদ্বোধনের পর দেশ জুড়ে যে হিন্দুত্বের বাতাবরণ তৈরি হবে তাকে মোকাবিলা করার জন্য দেশের ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শকে রক্ষা করার জন্য এবং দেশের সংবিধানকে বাঁচানোর জন্য জমিয়েত উলামায়ের কর্মীরা এবং সচেতন নাগরিকরা যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাকে কুর্নিশ জানাচ্ছে রাজ্যের শান্তিপ্রিয় মানুষেরা।