কলকাতা 

১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকার দাবিতে সরব এবার বিজেপি বিধায়করা!

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে রাজ্য সরকারের বিবাদ যখন চরমে ঠিক তখনই বিজেপি বিধায়করা এই কাজের টাকা অবিলম্বে পশ্চিমবাংলার মানুষদের দেওয়ার জন্য আবেদন করলেন। আজ বিধানসভায় বিজেপির বিধায়কদের সঙ্গে বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি এদিন বিধানসভায় গিয়ে বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি আসন্ন অমিত শাহের সভা নিয়ে আলোচনা করেন।

আর এই আলোচনাতেই উঠে আসে ১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকার প্রসঙ্গটি। অধিকাংশ বিজেপি বিধায়ক সুকান্ত মজুমদারের কাছে অভিযোগ করেন যে এই টাকা নিয়ে কেন্দ্রে টালবাহানার ফলে রাজ্যের সাধারণ মানুষের কাছে বিজেপি কার্যত ভিলেনে পরিণত হচ্ছে। তাই অবিলম্বে বিজেপির পক্ষ থেকে উচিত এই টাকার দাবিতে সরব হওয়া। বিশেষ করে যে সব অঞ্চল থেকে বিজেপির বিধায়ক রয়েছে সেইসব অঞ্চলে এই সমস্যা তীব্র হচ্ছে।

Advertisement

বিধায়করা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় গেলে জনগণ এই প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করছে কোথাও কোথাও এ নিয়ে অসন্তোষও ব্যক্ত করছে।

বিজেপি সূত্রে খবর, সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে বিজেপি বিধায়কদের বৈঠকের মধ্যেই কয়েক জন বিধায়ক ১০০ দিনের টাকা কেন্দ্র আটকে রাখায় ভোটারদের মধ্যে খারাপ প্রভাব পড়বে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সুকান্ত জবাবে কেন টাকা আটকে রাখা হয়েছে তার ব্যাখ্যাও দেন। সূত্রের খবর, এর পরেও প্রশ্ন উঠলে সুকান্ত জানিয়ে দেন, এই বিষয়ে মানুষ কী বলছে তা বিধায়করা তাঁকে জানালে তিনি দিল্লিকে রিপোর্ট পাঠাবেন। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপির কেউ এই আলোচনার কথা স্বীকার করেননি। সুকান্ত বলেন, ‘‘এটা নিছকই সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। পুজোর পরে সকলের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়াই ছিল উদ্দেশ্য। তার পরে নানা বিষয়ে মত বিনিময় হয়েছে। এর বেশি কিছু নয়।’’

দলের অনেক বিধায়কই বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ যে রাজ্যে হচ্ছে না তা নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানেই এক বিধায়ক প্রশ্ন তোলেন, তৃণমূল যে ভাবে কেন্দ্র টাকা আটকে রেখেছে বলে প্রচার করছে, বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনেও মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, তার প্রভাব নির্বাচনে পড়বে না তো? এর জবাবে সুকান্ত বোঝানোর চেষ্টা করেন কেন কেন্দ্র টাকা আটকে রেখেছে। রাজ্যের বেনিয়মের কথা এবং হিসাব না দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের মোট টাকার একটি অংশ থাকে শ্রমিকদের মজুরি বাবদ এবং বাকিটা নির্মাণ সামগ্রীর। বিজেপি শিবিরের অনেকেই মনে করেন, নির্মাণ সামগ্রীর টাকা বেনিয়মের কারণে আটকে রাখা হলেও যাঁরা কাজ করেছেন সেই শ্রমিকদের প্রাপ্য টাকা ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। শুক্রবার বিধানসভায় সুকান্তের বৈঠকেও সেই বিষয়টি ওঠে বলে জানা গিয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত এক বিধায়ক জানান, সুকান্ত প্রথমে যে সব জব কার্ড বাতিল হয়েছে তার মাধ্যমে বিপুল টাকার দুর্নীতির কথা বলেন। এর পরেও প্রশ্ন উঠলে তিনি জানান, বিধায়কেরা যে হেতু মানুষের কাছাকাছি থাকেন, তাই তাঁরাই ভাল জানবেন মানুষ কী বলছে। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সে কথা জানার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, বিধায়কদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তিনি দিল্লিকে রিপোর্ট পাঠাবেন।

বিধানসভায় সুকান্ত পৌঁছানোর আগে আগেই ২৯ নভেম্বর দলের সমাবেশ ধর্মতলার ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে করার অনুমতি দিয়ে দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। তা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয় বলে সূত্রের খবর। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভায় বিজেপির ক্ষমতা দেখিয়ে দেওয়ার জন্য বিধায়কদের আহ্বান জানান সুকান্ত। একই সঙ্গে আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগে সাধারণ মানুষকে নিয়ে পথে নামারও নির্দেশ দেন। রাজ্যে কী ধরনের দুর্নীতি হয়েছে তার ব্যাখ্যা দেওয়ার সময়ে সুকান্তের পাশাপাশি বালুরঘাটের বিধায়ক অশোক লাহিড়ীও সরব ছিলেন বলেই বিজেপির পরিষদীয় দল সূত্রে জানা গিয়েছে।

যাইহোক, বিজেপি বিধায়করা ১০০ দিনের বকেয়া টাকা নিয়ে সরব হওয়ার ফলে অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপি।

 


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ