জয়নগরে তৃণমূল নেতা খুনে অভিযুক্তকে দশ দিনের পুলিশ হেফাজত, গুলি আমি চালাইনি নির্দেশ এসেছিল নাসিরের কাছ থেকে! দাবি ধৃত শাহারুল শেখের, কে এই নাসির?
বাংলার জনরব ডেস্ক : জয়নগরে তৃণমূল নেতা সাইফুদ্দিন লস্করের খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল শাহারুল শেখকে। তাকে আজ বারুইপুর আদালতে তোলা হলে আদালত ১০ দিনের পুলিশ সেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে যদিও পুলিশ এই অভিযুক্তকে ১৪ দিনের হেফাজতে চেয়েছিল কিন্তু আদালত মাত্র দশ দিন পুলিশ হেফাজত দিয়েছে।
বারুইপুর আদালত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় শাহরুল শেখ সাংবাদিকদের বলেন, তিনি গুলি চালাননি, গুলি চালিয়েছে গণপিটুনিতে মৃত শাহাবুদ্দিন। আর নির্দেশ এসেছিল নাসির বলে এক ব্যক্তির কাছ থেকে। কে এই নাসির ? এই প্রশ্ন সাংবাদিকরা করায় তার উত্তরের শাহারুল বলেন তিনি বড় ভাই।
২৪ নভেম্বর তাঁকে আবার আদালতে হাজির করানো হবে। পাশাপাশি, আদালত সঠিক সময়ে অভিযুক্তের মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর নির্দেশও দিয়েছে। কোর্ট লকআপে তাঁর উপর যাতে কোনও অত্যাচার না হয়, সেই নির্দেশও দিয়েছেন বিচারক।
সোমবার শাহরুলকে গ্রেফতারের পর জেরা শুরু করে পুলিশ। তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, জেরায় অনেক নতুন নতুন তথ্য উঠে এসেছে। মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়। আদালত থেকে বার হওয়ার শাহরুল বলেন, ‘‘নাসির খুন করার অর্ডার দিয়েছিলেন।’’ কে সেই নাসির? শাহরুল শুধু বলেন, ‘‘বড়ভাই।’’ কার বড়ভাই, তা অবশ্য প্রকাশ করেননি। শুধু বার বার দাবি করেছেন, ‘‘গুলি আমি চালাইনি, চালিয়েছে সাহাবুদ্দিন।’’ তৃণমূল নেতা খুনের পর এই সাহাবুদ্দিনকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে।
শাহরুলকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, সইফুদ্দিন কখন, কোথায় যান, তাঁর গতিবিধির উপর নজর রাখতে তৃণমূল নেতার বাড়ির পাশেই একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন শাহরুল। জয়নগরের বামনগাছির যে জায়গায় সইফুদ্দিনের প্রাসাদোপম বাড়ি আছে, তার একটু দূরেই কয়েক দিন ধরে থাকছিলেন তিনি। শাহরুল আদতে ডায়মন্ড হারবারের নেতড়ার বাসিন্দা।
পুলিশ সূত্রে খবর, বছর তেইশের শাহরুল চুরি-ছিনতাইয়ের সঙ্গে যুক্ত। পুলিশের খাতায় আগেও তাঁর নাম উঠেছে। পাশাপাশি, দর্জির কাজও করতেন তিনি। পুলিশি জেরায় শাহরুল জানিয়েছেন, তিনি ‘নতুন কাজের বরাত’ পান কিছু দিন আগে। তাঁকে বলা হয়, একটি ‘চুরির কাজ’ আছে। তাই একটি বাড়িতে নজর রাখতে হবে। রাজি হয়ে যান ওই যুবক। তার পর তিনি চলে আসেন বামনগাছি এলাকায়। সোমবার তৃণমূল নেতাকে গুলি করে খুনের সময় তিনিও ছিলেন। পুলিশের দাবি, শাহরুলই খবর দিতেন যে, কখন নমাজ পড়তে মসজিদে যান সইফুদ্দিন। তাঁর কথা মতোই ‘অপারেশন’-এর সময় ঠিক করে নেন।