ইডির হাতে গ্রেফতার মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হৃদযন্ত্রের ত্রুটি ধরার জন্য ‘হলটার মনিটরিং’ পরীক্ষা হবে জানালো বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ
বাংলার জনরব ডেস্ক : শুক্রবার ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ গ্রেফতার হন রাজ্যের বনমন্ত্রী তথা প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাকে তোলা হয় ব্যাংকশাল আদালতে। এই আদালতে শুনানি চলাকালীন সময়ে মন্ত্রী মাথা ঘুরে পড়ে যান এবং সেখানে বমিও করেন। পরবর্তীতে আদালতে নির্দেশে তাকে বাইপাসের ধারে অ্যাপেলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এখন তিনি সেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শনিবার হাসপাতাল সূত্রে জানা গেল, মন্ত্রীর শারীরিক পরিস্থিতি বর্তমানে স্থিতিশীল। প্রাতরাশও দেওয়া হয়েছে তাঁকে। পাশাপাশি বেশ কিছু শারীরিক পরীক্ষা করা হচ্ছে মন্ত্রীর। তার মধ্যে রয়েছে ‘হল্টার মনিটরিং’।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা রয়েছে জ্যোতিপ্রিয়ের। তার মধ্যে শুক্রবার তাঁর শরীরে শর্করার মাত্রা আচমকা বেড়ে গিয়েছিল। পালস রেট, হার্ট রেটও কম ছিল। এই কারণে ‘হল্টার মনিটরিং’ করা হবে বলে ঠিক করেন চিকিৎসকেরা। উল্লেখ্য, হৃদস্পন্দন কোন মাত্রায় রয়েছে, তা পরীক্ষার জন্য ‘হল্টার মনিটরিং’ হয়। তা ছাড়া মন্ত্রীর ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেশি ছিল। কিডনির অসুখ রয়েছে। এই সব কারণে আরও বেশ কিছু পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ডাক্তারবাবুরা।
শুক্রবার হাসপাতালে ভর্তির পর জ্যোতিপ্রিয়ের হৃদযন্ত্রে কিছু দুর্বলতা ধরা পড়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তা ছাড়াও, কিছু রুটিন পরীক্ষার জন্য রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। মন্ত্রী চিকিৎসাধীন থাকায় সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রেশন দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার জ্যোতিপ্রিয়কে সারা দিন টানা জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডির আধিকারিকরা। তাঁর বাড়িতে ইডি হানার কথা শুনেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় সংস্থা এবং বিজেপিকে হুঁশিয়ারি দেন। তিনি জানান, মন্ত্রী সুগারের রোগী। তাঁকে হেনস্থা করা হচ্ছে। যদিও শুক্রবার ভোর সাড়ে তিনটেয় রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী গ্রেফতার হন। শুক্রবার তাঁকে তোলা হয় আদালতে। তাঁকে হেফাজতে নেওয়া কেন জরুরি, আদালতকে সে কথা জানাচ্ছিল ইডি। সেই সময় নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়। উত্তেজিত মন্ত্রী তাঁর বসার আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়ান হঠাৎ। আচমকাই দেখা যায় তিনি টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যাচ্ছেন। কোনও রকমে বসে পাশের চেয়ারে বসে পড়েন। কোর্ট রুমের অন্য প্রান্তে তখন দাঁড়িয়েছিলেন মন্ত্রী-কন্যা। তিনি প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন বাবার কাছে।
অসুস্থ হয়ে লুটিয়ে পড়া মন্ত্রীকে পুলিশ চেয়ারে বসা অবস্থাতেই বাইরে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে একটি বেঞ্চে বসানো হয়। মন্ত্রী-কন্যাকে দেখা যায় বাবার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে। বমিও করেন জ্যোতিপ্রিয়। ইতিমধ্যে জ্যোতিপ্রিয়কে দেখা যায় বমি করতে। পরে তাঁকে বাইপাসের ধারে একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই মন্ত্রীর শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা করে তাঁকে হাসপাতালের ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মেডিক্যাল বুলেটিন প্রকাশ করে জানানো হয়, জ্যোতিপ্রিয়ের সুগারের সমস্যা বেড়েছে। মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব, শারীরিক দুর্বলতা রয়েছে। পরীক্ষা করে শারীরিক অন্যান্য জটিলতাও ধরা পড়েছে।