অন্যান্য আন্তর্জাতিক 

হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনির উপর অমানবিক নৃশংস হামলা চালানোর পর শান্তি ফিরিয়ে আনতে ইসরাইল সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট, মধ্যপ্রাচ্যে কি আদৌ শান্তি ফিরবে?

শেয়ার করুন

সেখ ইবাদুল ইসলাম: আজ বুধবার ১৮ই অক্টোবর গাজায় শান্তি ফেরাতে উদ্যোগী হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বুধবার সকালেই ইসরাইলে পৌঁছে গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছেন, কিংবা পৌঁছে যাবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের ইসরাইল সফরের সময় আজ সকালে অর্থাৎ বুধবার সকালে গাজায় এক হাসপাতালে হামলা চালায় ইসরাইল। যা এক কথায় অমানবিক এবং যুদ্ধ অপরাধ। এই হামলায় কমপক্ষে ৫০০ জন মানুষ মারা গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন ,ফ্রান্স, জার্মানির মধ্যে ইসরাইল যে ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছে তা এক কথায় অমানবিক ও নৃশংস আচরণ। কিন্তু দুঃখের হলেও সত্য ইসরাইলের উপরে হামাস যে আক্রমণ করেছে তাতে ইসরায়েলি নাগরিকরা মারা গেছে । তেমনি প্রতিশোধ নেওয়ার নাম করে যেভাবে নিরীহ নাগরিকের উপরে বোমা ফেলছে আক্রমণ চালাচ্ছে তা এক কথায় সব রকম শিষ্টাচারকে অমান্য করে চলেছে। উল্টোদিকে যেভাবে একতরফা বিষয়টিকে না বুঝতে পেরে মানবাধিকারের স্বঘোষিত অভিভাবক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের পাশে দাঁড়াল তা কি মানবাধিকারের বিরোধী নয়!

Advertisement

সমগ্র বিশ্বকে শান্তি পৌঁছে দেওয়ার যে লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট যাত্রা শুরু করেছিলেন তার একটা মাত্র ভুল সিদ্ধান্ত সমস্তটায় গুলিয়ে যেতে চলেছে। শেষে যখন তিনি বুঝতে পেরেছেন বিষয়টি খুব একটা ভালো হয়নি তখন অনেক পরামর্শ দেয়া সত্ত্বেও ইসরাইল তার অমানবিক আচরণ করে চলেছে। আর এর ফলে মধ্যপ্রাচ্য যে আবার নতুন করে অশান্তি বিরাজ করতে চলেছে তার বলার অপেক্ষা রাখে না।

আমাদের সকলের মনে রাখা উচিত ফিলিস্তিন ভূখণ্ড এমন একটা জায়গা যেটা তিনটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের কাছে পবিত্র। তাই  এই ভূমির পবিত্রতা রক্ষা করার দায়িত্ব যেমন ইসরাইলের রয়েছে একইভাবে খ্রিস্টান ধর্মের একজন অনুসারী হিসাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রয়েছে একইভাবে ফিলিস্তিনের জনতার রয়েছে। কিন্তু যেভাবে ইসরাইল কোনরকম শান্তির বার্তায় পা না দিয়ে আক্রমণ চালাচ্ছে তাতে সংকট আরো ঘনীভূত হচ্ছে। হামাস যে কাজটি করেছে গত ৭ আগস্ট তা অবশ্যই নিন্দনীয়। কিন্তু তা বলে নিরীহ নাগরিককে মারা, কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। পরিস্থিতি যেদিকে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে যদি মুসলিম রাষ্ট্রগুলো এক হয়ে যায় অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে জো বাইডেনের ইসরাইল সফর নিঃসন্দেহে আশার আলো জাগাচ্ছে।

কিন্তু ইসরাইল যে আগুন গাজাসহ মধ্যপ্রাচ্যে ধরিয়ে দিল তা কি সহজে নিভে যাবে? এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। মনে রাখতে হবে hams ইসরাইলের যে যে শহর দখল করেছে সেই সব শহরকে এখনো ইসরাইলি সেনারা মুক্ত করতে পারেনি। বরং পন বন্দির সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এবং একটি শহর থেকে দেড় লক্ষ ইহুদি সম্প্রদায়কে অন্যত্র সরিয়ে দিতে হয়েছে। ফলে এই যুদ্ধ কিন্তু একতরফা হচ্ছে না।

এটা ঠিক গাজা ভূখণ্ডের পানীয় জল বন্ধ করে বিদ্যুৎ বন্ধ করে যে নারকীয় ঐতিহাসিক নৃশংস অত্যাচার চালাচ্ছে ইসরাইল তাতে আর যাই হোক হামাসের কোন ক্ষতি হচ্ছে না। বরং হামাস যেখানে কব্জা করেছে যেসব এলাকা দখল করে রেখেছে তা এখনো দখল মুক্ত করতে পারেনি ইসরাইল। এই খবর অন্য কোন সংবাদ মাধ্যম দেখাচ্ছে না। কারণ ইসরাইলের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সমগ্র ফিলিস্তিন থেকে মুসলিমদেরকে উচ্ছেদ করা। আর সেই লক্ষ্য যাতে সফল না হতে পারে তার জন্যেই মিশর এখনো বর্ডার খুলে দেয়নি, লেবানন তার সীমান্ত খুলে দেয় নি। ফলে ২৩ লক্ষ মানুষ পানীয় জলের অভাবে কাতরাতে কাতরাতে মৃত্যুবরণ করতে চলেছে নিরব বিশ্ব। নীরব বিশ্ব বিবেক!


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ