ফিলিস্তিন প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ আব্বাসকে ফোন জো বাইডেনের ! কী কথা হলো? জানতে হলে ক্লিক করুন
বুলবুল চৌধুরী : ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষের ওপর বর্বরোচিত ইসরাইলি আক্রমণের বিরুদ্ধে সমগ্র বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। মানবাধিকার রক্ষার স্বঘোষিত অভিভাবক আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যেভাবে ইসরাইলের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাতে তাদের দেশেই প্রশ্ন উঠেছে সত্যিই মানবাধিকার রক্ষায় তারা কি আন্তরিক? হামাস শত্রু হতে পারে তা বলে ফিলিস্তিনির সব জনগণ তো শত্রু নয়! তাই হামাসকে শেষ করার নাম করে গাজার নিরীহ জনতার উপরে আক্রমণ করা কি মানবাধিকার লঙ্ঘন নয় কিংবা যুদ্ধ অপরাধ নয়! যে আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ভোটে জেতার পর বিশ্ববাসীকে বলেছিলেন আমি এমন এক বিশ্ব তৈরি করতে চাই যেখানে সব মানুষের সমান অধিকার থাকবে। তিনি বলেছিলেন মজলুম জনতাকে ইনসাফ পায়ে দেওয়ার দায়িত্ব আমি নেব। কিন্তু গাজার জনতার উপরে যেভাবে একতরফা আক্রমণ করছে ইসরাইল এবং তাকে সাহায্য করছে আমেরিকা। সেটা এককথায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল।
আট দিন ধরে একতরফা আক্রমণ করার পর বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের যে ঝড় উঠেছে তাতে অনেকটাই হয়তো ঘাবড়ে গেছেন আমেরিকার রাষ্ট্রপতি। বিশেষ করে যে দ্রুততার সঙ্গে মুসলিম দেশগুলো ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে এবং ইরান তার সমস্ত বৈরিতাকে দূরে সরিয়ে। তাতে এই যুদ্ধ যদি আগামী দু সপ্তাহ চলে তাহলে মুসলিম দেশগুলো যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদে সামিল হবে সে বিষয়ে সন্দেহ থাকার কোন জায়গা নেই। শিয়া সুন্নির লড়াইয়ে মুসলিম বিশ্বে খানিকটা এক ঘরে ছিল ইরান। সেই ইরানকে এখন নেতৃত্বের আসনে বসিয়ে সৌদি আরব, লেবানন, সিরিয়া, তুরস্ক এবং মিশর যেভাবে পরিস্থিতির পর্যালোচনা করার জন্য বৈঠক করছেন তাতে তো স্বাভাবিকভাবেই আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে নড়েচড়ে বসতেই হবে। তাই শেষ পর্যন্ত নড়ে চড়ে বসলেন।
শনিবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ফোন করলেন ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ আব্বাসকে। টেলিফোন কথোপকথনের যে সংবাদ বাইরে এসেছে তাতে জানা যাচ্ছে, তিনি মাহমুদ আব্বাসকে বলেছেন, গাজার সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হবে এবং তাদেরকে যথাযথ মানবিক সাহায্য করা হবে। তবে মাহমুদ আব্বাস জো বাইডেনকে বলেছেন অবিলম্বে গাজায় বোমা বর্ষণ বন্ধ করতে। তা না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। তিনি বলেছেন অযথা বোমা বর্ষণ করে কোন লাভ হচ্ছে না, হামাসের কোন ক্ষতি হচ্ছে না। এমনকি ইসরাইলের আহ্বান সত্ত্বেও খুব কম সংখ্যক মানুষ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র গেছে। ফলে পরিস্থিতি ইসরাইলের পক্ষেও অনুকূল নয়। মাহমুদ আব্বাসের এই কথা শোনার পর জো বাইডেন কি বলেছেন তা না জানা গেলেও তবে পরিস্থিতি যে ঘোরালো সেটা হয়তো আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বুঝতে পেরেছেন। তাই জানা যাচ্ছে, শনিবার রাতেই ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ফোনে কথা বলেন এবং পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে অবিলম্বে গাজায় মানবিক সাহায্য এবং ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার কথা তিনি বলেন।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য মার্কিন স্বরাষ্ট্র সচিব মধ্যপ্রাচ্য সফরে রয়েছে। অন্যদিকে বৃটেনের এক মন্ত্রীও মধ্যপ্রাচ্যের সফরে গেছেন। একই সময়ে আছেন ইরানের বিদেশ মন্ত্রীও। সবমিলিয়ে জেরুজালেমকে কেন্দ্র করে এবং আল-আকসা মসজিদকে কেন্দ্র করে আগামী দিনে মুসলিম উম্মাহ যে জেগে উঠতে চলেছে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। আর ইসরাইলবিরোধী নেতৃত্ব যদি ইরানের হাতে চলে যায় তাহলে আর যাই হোক ইসরাইলের টিকে থাকাটাই দুষ্কর হয়ে দাঁড়াবে মধ্যপ্রাচ্যে।