পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের মুখে জাতভিত্তিক সমীক্ষার পক্ষে সওয়াল করে রাহুল গান্ধী কী বাজিমাত করতে পারবেন?
বাংলার জনরব ডেস্ক : জাতভিত্তিক সমীক্ষা পক্ষে এবার জাতীয় কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী সমিতির সিদ্ধান্ত নিল। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই সিদ্ধান্ত যে জাতীয় কংগ্রেসকে আরো বেশি উজ্জীবিত করবে এবং জনমানষে তাদের সমর্থনকে বৃদ্ধি করবে সে ব্যাপারে অনেকটাই আশাবাদী ওয়াকিবহাল মহল। আজ সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, ‘‘যে রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীরা জাত সমীক্ষার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাঁদের ধন্যবাদ। এই সিদ্ধান্ত কংগ্রেস ওয়াকিং কমিটি সমর্থন করছে।’’
বিহারে আরজেডি-জেডিইউ-কংগ্রেস-বামেদের ‘মহাগঠবন্ধন’ সরকার ইতিমধ্যেই জাতভিত্তিক সমীক্ষায় কাজ অনেকটাই করে ফেলেছে। আদালতের ছাড়পত্র পাওয়ায় প্রকাশ করা হয়েছে অন্তর্বর্তী রিপোর্টও। কংগ্রেস শাসিত দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজস্থানের অশোক গহলৌত এবং ছত্তীসগঢ়ের ভূপেশ বঘেল জানিয়েছেন, ক্ষমতায় ফিরলে তাঁদের রাজ্যেও শুরু হবে জাতভিত্তিক সমীক্ষার কাজ।
এই পরিস্থিতিতে সোমবার রাহুল বলেন, ‘‘রবিবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে জাতভিত্তিক সমীক্ষা নিয়ে আমরা চার ঘণ্টা আলোচনা করেছি। গরিব আমজনতার উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপ ইতিবাচক মাত্রা আনবে। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশের পাশাপাশি কংগ্রেস শাসিত হিমাচল প্রদেশ এবং কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীরাও তাঁদের রাজ্যে জাত সমীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই পদক্ষেপ ঐতিহাসিক।’’
প্রসঙ্গত, ২০২০-র নভেম্বরে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষদের জন্য সরকারি চাকরি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১০ শতাংশ আসন সংরক্ষণের জন্য সুপ্রিম কোর্ট সিলমোহর দেওয়ার পরেই দেশ জুড়ে জাতভিত্তিক জনগণনার দাবি তুলেছিল বিহারের ‘মহাগঠবন্ধন’ সরকার। এরপর দ্রুত শুরু হয় জাতগণনা। গত ৬ বছরের জুন বিহার সরকার জাতগণনার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। কিন্তু সেই পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা দায়ের হয়েছিল পটনা হাই কোর্টে।
বিহারে জাত সমীক্ষার প্রথম পর্ব ৭ থেকে ২১ জানুয়ারি হয়েছিল। ১৫ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় পর্ব ১৫ মে পর্যন্ত চলার কথা ছিল৷ কিন্তু তার আগেই গত ৪ মে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল পটনা হাই কোর্ট। কিন্তু গত ১ অগস্ট জাতসমীক্ষার বিরুদ্ধে পটনা হাই কোর্টে যে জনস্বার্থ মামলাগুলি দায়ের হয়েছিল, তা খারিজ করে দেয় প্রধান বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রন এবং বিচারপতি পার্থসারথির বেঞ্চ। এর পরেই শুরু হয় জাতগণনার দ্বিতীয় পর্ব। গত ২ অক্টোবর তার প্রথম দফার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। গত ৬ অক্টোবর বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সরকারের এই পদক্ষেপে সম্মতি দিয়েছে শীর্ষ আদালতও।
আসলে দেশ জুড়ে যদি জাতভিত্তিক সমীক্ষা রিপোর্ট সামনে আসে তাহলে দেখা যাবে এদেশের ব্রাহ্মণ সমাজ সংখ্যায় খুব কম হয়েও সরকার থেকে শুরু করে রাজনীতির আঙিনায় তাদের সবচেয়ে বেশি প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। এই অবস্থায় সবচেয়ে বড় সংকটে পড়বে বিজেপি দল রাহুল গান্ধী জাত ভিত্তিক সমীক্ষার কথা বলে আসলে এদেশের দলিত মুসলিম এবং আদিবাসীদের কে পাশে পাওয়ার চেষ্টা করছে।
রাহুল গান্ধীর এই সিদ্ধান্ত ভারতবর্ষের জনমানষে ব্যাপক প্রভাব পড়ে তাহলে আগামী দিনে দেশ জুড়ে যে কংগ্রেস ঘুরে দাঁড়াবে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।