‘সিবিআইয়ের নাম শুনলে আগে লোকে ভয় পেত, এখন লোকে হাসে, জানে কিছু হবে না’ সিবিআইয়ের সিট প্রধানকে তলব করে মন্তব্য বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের
বাংলার জনরব ডেস্ক : বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এক কথায় ইতিহাস তৈরি করে চলেছেন বিচার ব্যবস্থায়। সমগ্র শিক্ষা দফতর দুর্নীতির দায়ে জেলে রয়েছে। আর সিবিআই তদন্তের নামে যে ভন্ডামি করছে তার মুখোশ খুলে দিচ্ছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কয়েক দিন ধরেই তিনি সিবিআইকে ধমক দিচ্ছিলেন। এবার তো সরাসরি সিবিআই এর বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট এর প্রধানকে তলব করলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টোয় তাঁকে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে।
প্রাথমিকের উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘তদন্ত রিপোর্ট দেখার পর বলতে হচ্ছে সিবিআই তদন্ত সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এটা ছাড়া বিকল্প কিছু বলার নেই।’’ তিনি আরও জানান, সিবিআই ‘ফেল’ করেছে সারা ভারতবর্ষ জানুক। এই মামলায় সিবিআইয়ের পারফরম্যান্স খুবই খারাপ। সাধারণ প্রশ্ন সিবিআই ঠিক মতো করেনি।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তদন্ত নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘‘এই মামলার কিছু হবে না। সিবিআইকে দিলাম…… এর চেয়ে উলুবেড়িয়া থানাকে কেসটা দিলে ভাল হত! কেস ডায়েরিতে অনেক তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এর আগে বহু বার সতর্ক করেছিলাম। আমি এই তদন্তে খুশি নই। এটা আমি বিশ্বাস করি না যে, সিবিআইয়ের আধিকারিকরা বোকা। তাঁরা অত্যন্ত সেয়ানা। সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কি আবার তদন্তের নির্দেশ দিতে হবে? যে কোনও বুদ্ধিমান লোক আসল প্রশ্ন করবে। কী প্রশ্ন করবে সেটাও কি আমাকে বলে দিতে হবে? আমি চিৎকার করতে চাই না। আপনারা বাধ্য করছেন। সিবিআইয়ের এই অফিসাররা লজ্জাহীন। আগে সিবিআই শুনলে লোকে ভয় পেত। এখন লোকে হাসে। জানে কিছু হবে না।’’
এই মামলায় মঙ্গলবার দুপুরে হাই কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়ে ওএমআর শিটের ‘ডিজিটাইজ়ড কপি’। কোনও নথির ডিজিটাইজ়ড কপি বলতে কী বোঝায়, জানতে চান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, পর্ষদ ‘ডিজিটাইজ়ড’ ওএমআর শিটের নাম করে যে সব তথ্য দিচ্ছে, সেগুলি হাতে টাইপ করা। তার সঙ্গে আসল কপির কোনও মিল নেই। অথচ হাতে টাইপ করা ওই তথ্যকেই পর্ষদ ‘ডিজিটাইজ়ড’ বলছে। প্রাথমিকের আসল ওএমআর শিট আগেই নষ্ট করার অভিযোগ রয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর ২টোয় ছিল ফের শুনানি। সেখানে সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি। এর আগে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের তদন্তে সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল নিম্ন আদালত।