জেলা 

তৃণমূলের অফিসিয়াল প্রধান প্রার্থীকে পরাস্ত করে বিজেপির সাহায্য নিয়ে মোহাম্মদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হলেন শেখ সুফিয়ানের জামাই, ঘুর পথে পঞ্চায়েত দখল বিজেপির, শাসক দল অসহায়

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক কুনাল ঘোষের নেতৃত্বের ব্যর্থতা আরো প্রকট হয়ে ধরা পড়ল। প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূল কংগ্রেস ভালো ফল করলেও শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক চালে নন্দীগ্রামে কুপোকাত হল তৃণমূল কংগ্রেস। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা নন্দীগ্রামের মোহাম্মদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। এই গ্রাম পঞ্চায়েতে বারটি আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় তৃণমূল কংগ্রেস। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন সংখ্যা ১৮টি বিজেপি পায় ছটি, স্বাভাবিকভাবেই মোহাম্মদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গড়ার কথা তৃণমূল কংগ্রেসের।

শাসক দলের নেতৃত্ব ঠিক করে দেয় সেখ শাহনাওয়াজ খানকে মোহাম্মদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হিসেবে কিন্তু আস্থা ভোটের দিনে বিপুল গরিষ্ঠতায় পিছিয়ে থাকা সত্ত্বেও বিজেপি অংশ নেয়। তৃণমূল কংগ্রেসের অন্তর দ্বন্দ্বের সাহায্য নিয়ে শেখ সুফিয়ানের জামাই হাবিবুল ইসলামকে প্রধান পদে নির্বাচিত করে। তৃণমূল কংগ্রেসের মোট ১২ জন পঞ্চায়েত সদস্যের মধ্যে ৬ জন হাবিবুল কে ভোট দেয় আর বাকি ৬ জন তৃণমূলের অফিসিয়াল প্রধান  পদের দাবিদার সেখ শাহনাওয়াজ খানকে দেয়! সুফিয়ানের জামাইকে বিজেপি তাদের ছটি ভোটই প্রদান করে। ফলে বারোটি ভোট পেয়ে শাসকদলের মনোনীত প্রার্থীকে পরাজিত করে বা কুনাল ঘোষের পছন্দের প্রার্থীকে পরাজিত করে শেখ সুফিয়ানের জামাই প্রধান পদ দখল করে কার্যত ঘুর পথে মোহাম্মদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল করল বিজেপি। অথচ সংবাদমাধ্যমগুলো যেভাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে সামনে রাখার চেষ্টা করছে সেটা যে পুরোপুরি মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয় তার বলার অপেক্ষা রাখে না।

Advertisement

তবে বিজেপির সাহায্য নিয়ে এভাবে তৃণমূলের বোর্ড গঠন করার মধ্যে আদৌ বিতর্ক নেই কিছু, এমনই দাবি নির্বাচিত প্রধান শেখ হাবিবুলের। তিনি বলছেন, ”আমি সকলের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি। কে ভোট দিল, কোন দলের সমর্থক আমাকে ভোট দিল, সেটা বড় কথা নয়। ভোটের ফল ১২-৬। আমি প্রধান নির্বাচিত হয়েছি।” বিজেপির তরফে সুযোগ্য মাইতি কোনও বিতর্কে না ঢুকে সাফ জানালেন, ”আমাদের সমর্থনেই উনি প্রধান হয়েছেন।” তবে বিতর্ক থামছে না। সিপিএম জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পরিতোষ পট্টনায়কের দাবি, ”আমরা বরাবরই বলছি, বিজেপি আর তৃণমূলের গোপন আঁতাঁত আছে। এবার সেটাই প্রমাণিত হল।”

স্বাভাবিকভাবে শাসকের মুখ দেখানোর জায়গা আর থাকছে না। নন্দীগ্রামে তৃণমূল কংগ্রেস কতটা সাংগঠনিকভাবে দুর্বল তা মোহাম্মদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পদ নিয়ে স্পষ্ট হয়েছে। একথা আরো স্পষ্ট হয়েছে নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারী যাকে চাইবেন তিনি ক্ষমতার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারবেন। শাসক দল নিরঙ্কুস সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েও দলের নির্বাচিত ব্যক্তিকে প্রধান পদে বসাতে ব্যর্থ হয়েছে।এর নেপথ্যে থেকে কারা কলকাঠি নেড়েছেন সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খতিয়ে দেখতে হবে। আর এখনই তৃণমূল কংগ্রেস যদি সতর্ক না হয় তাহলে আগামী দিনে দলের অভ্যন্তর থেকেই এইসব বিজেপির এজেন্টরা বিজেপির পক্ষে কাজ করবে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।

 


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ