দেশ 

রাহুলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ মমতা অখিলেশ! রহস্য কি? বেঙ্গালুরুর সভায় রাহুলের ঘোষণা ‘লড়াই হবে মোদি বনাম ইন্ডিয়া!’ মোদী বিরোধী জোট কতটা সাফল্য পাবে?

শেয়ার করুন

বাংলার জনরব ডেস্ক : আজ মঙ্গলবার কর্নাটকের রাজধানী শহর বেঙ্গালুরুতে বিজেপি বিরোধী জোটের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পাটনা বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন দেশের ১৭ টি রাজনৈতিক দলের নেতারা এবার বেঙ্গালুরুতে যোগ দিলেন ২৬ টি রাজনৈতিক দলের নেতারা। ফলে বহরের দিক থেকে বিজেপি বিরোধী জোটের বৈঠক বেঙ্গালুরুতে অবশ্যই অনেকটাই সাফল্য পেয়েছে। জোটের বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে ২৬ টি রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এটা মনে রাখতে হবে এই জোট যে হয়েছে এটা কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন জোট। এতদিন যারা কংগ্রেসকে মানতে পারেনি, তার নেতৃত্বকে মেনে নিতে পারেনি সেই সব নেতাদের দেখা গেল রাহুল গান্ধীর পাশে বসে সাংবাদিক সম্মেলন করতে।

Advertisement

দেখা গেল সেই সব নেতারা রাহুল গান্ধীকে পাশে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করছেন এবং রাহুলের প্রশংসা করছেন। মমতা ব্যানার্জির মতো নেত্রীর মুখ থেকে রাহুলের প্রশংসা শুনে রাজনৈতিক মহল খানিকটা বিস্মিত হয়েছে। কয়েক মাস আগে যে রাহুল গান্ধীকে ন্যূনতম সৌজন্যবোধ দেখেননি তৃণমূল নেত্রী, সেই নেত্রী এখন রাহুলের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। আমাদের মনে হয়েছে কংগ্রেস এখানে সাফল্য পেয়েছে। কয়েক মাস আগে সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব ও মমতার সঙ্গে মিশে তৃতীয় ফ্রন্ট গড়ার চিন্তাভাবনা করছিলেন সেই অখিলেশ এখন রাহুলের পাশে। এটাই হয়তো রাহুল গান্ধীর রাজনৈতিক উত্থানের উপযুক্ত সময়।

তাইতো এদিন রাহুল গান্ধী সাংবাদিক সম্মেলনে পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। রাহুলের ভাষায়, ‘‘এই লড়াই বিজেপির বিচারধারা ও ওদের ভাবনার বিরুদ্ধে।ওরা দেশকে আক্রমণ করছে, বেকারত্ব সৃষ্টি করছে। এই লড়াই বিরোধী বনাম বিজেপি নয়৷ দেশের কণ্ঠ ওরা রোধ করতে চাইছে।তাই এটিকে বলা চলে দেশের পক্ষের এক লড়াই। এই কারণেই ‘INDIA’-এর নাম বাছাই করা হয়েছে। মোদি বনাম ‘INDIA’-এ লড়াই। ওদের বিচারধারা বনাম ইন্ডিয়ার লড়াই হবে৷ আমরা বিভিন্ন কর্মসূচির পরিকল্পনা করছি, দেশজুড়ে।’’

সাংবাদিক বৈঠক থেকে এদিন প্রথমে বিস্তারিত ঘোষণা করেন কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে৷ তারপর কথা বলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মমতা এদিন রাহুলের আগেই বিরোধী জোট এনডিএ-এর লড়াইয়ের কথা বলেন৷ বলেন, ‘মোদি বা বিজেপি কি ইন্ডিয়া-কে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে?’ অর্থাৎ লড়াইয়ের সমীকরণ এক নতুন শব্দবন্ধে বাঁধলেন মমতা।

এ দিন সাংবাদিক বৈঠক থেকে একাধিক বিরোধী দলের নেতারাও বার্তা দেন।দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেও একাধিক বার্তা দেন। পাশাপাশি, মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন এর পরের বিরোধীদের মিটিং হতে চলেছে মুম্বইয়ে।সেখানে একটি কর্মসমিতি তৈরি হবে ১১ জনের।সেখানেই পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক হবে।

ওয়াকিবহল মহলের অনেকেরই আশঙ্কা শেষ পর্যন্ত এই জোট হয়তো টিকবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। কারণ পরস্পর বিরোধী বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক দল রয়েছে যারা নিজেদের স্বার্থকে সবচেয়ে বেশি করে মান্যতা দেয়। যেমন রয়েছে সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব, তৃণমূল কংগ্রেস এরা সকলেই দেশের স্বার্থের চেয়ে নিজেদের দলীয় স্বার্থকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেয়। সবচেয়ে ভয় হচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি শেষ পর্যন্ত বিরোধী জোটের দিকে থাকতে পারবেন? সেটাই এখন হাজার কোটি টাকার প্রশ্ন। কারণ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি যেভাবে সামনে এসে গেছে এরপর আমাদের মনে হয় মোদি আর অমিত শাহ এর মমতা ব্যানার্জিকে পকেটে পুড়তে খুব বেশি সময় লাগবে না। তবে ভবিষ্যৎ বলবে মমতা কোন দিকে ঝুকবেন। কারণ এ বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি কংগ্রেসের সঙ্গে আঁতাত করেন তাহলে তৃণমূলের খুব বেশি লাভ হবে বলে আমাদের মনে হয় না। কারণ তৃণমূলের যে কমিটেড ভোট সেই ভোট এখন আর তৃণমূলের হাতে নেই । আর সেই ভোট ফেরানোর জন্যই কংগ্রেসের সঙ্গে আঘাত করার চেষ্টা করছে মমতা। কংগ্রেস আর তৃণমূল যদি আঁতাত হয় তাহলে এই রাজ্যে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে কংগ্রেস, তৃণমূল নয়। বরং তৃণমূলের আসন সংখ্যা অনেকটা কমে যেতে পারে।

 

 


শেয়ার করুন

সম্পর্কিত নিবন্ধ