গ্রেফতার কালীঘাটের কাকু
বাংলার জনরব ডেস্ক : গ্রেফতার হলেন সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তিনি আজ রাত ১১ টা কুড়ি নাগাদ ইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে (যেখানে ইডির দফতর রয়েছে) হাজিরা দেন সুজয়। ইডি দফতরে প্রবেশের সময় জানিয়েছিলেন যে, তিনি যথেষ্ট ‘আত্মবিশ্বাসী’। প্রায় ১২ ঘণ্টা একটানা জেরা করার পর তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুধু তাই নয় সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকু, প্রকৃতপক্ষে তৃণমূলের সংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি কোম্পানির অন্যতম কর্মচারীও ছিলেন। ওয়াকিবহাল মহলের অভিযোগ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলার প্রধান পান্ডা হলেন এই কালীঘাটের কাকু।
দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা এজেন্সির নজরে ছিল সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র। তিনি নানা অজুহাত খাটিয়ে তদন্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ। তবে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের এই গ্রেফতারিতে তৃণমূল কংগ্রেসের কতটা ক্ষতি হবে তা জানান না গেলেও বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের যে ভাবমূর্তি ক্ষতি হচ্ছে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।
বাইরন বিশ্বাস এর মত কংগ্রেসের বিধায়ককে দলে নিয়ে দলের কি ভালো হবে কি খারাপ হবে সে প্রশ্নে না গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উচিত ছিল দলকে স্বচ্ছ ভাবে পরিচালনা করা। তা না করে সুজয়দের মতো ব্যক্তিদেরকে প্রশ্রয় দিতে গিয়ে দলের চেয়ে ক্ষতি হয়েছে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।
সিবিআই সুজয়কে দু’বার তলব করে। প্রথম বার সিবিআই দফতরে গিয়ে হাজিরা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পরের বার নিজের আইনজীবীকে দিয়ে নথিপত্র পাঠিয়েছিলেন। সেই সময় সুজয় জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার পক্ষে তাঁর কাছে কিছু নথি চাওয়া হয়েছিল। সেগুলি তিনি আইনজীবী মারফত পাঠিয়েও দিয়েছেন সিবিআই দফতরে। একই সঙ্গে সুজয় দাবি করেছিলেন, তাঁর স্ত্রী-কন্যার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথিও তিনি পাঠিয়েছেন আইনজীবীর মাধ্যমে।
গত ২০ মে সুজয়ের বেহালার ফকিরপাড়া রোডের ফ্ল্যাট, বাড়ি, অফিস-সহ বহু জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। ওই দিনই নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। সুজয় এক সময় অভিষেকের অফিসে কাজ করতেন। ‘কাকু’র সঙ্গে সংযোগ রয়েছে এমন ৩টি সংস্থাতেও তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি।
প্রকৃতপক্ষে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র গ্রেফতার হওয়ার পর তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপদ চেয়ে আরো বাড়লো তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। কারণ এই কালীঘাটের কাকু নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে যে যুক্ত তা এজেন্টরাই বলে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কালীঘাটের কাকুর গ্রেফতারিতে চাপে পড়ল তৃণমূল, চাপে পড়ল দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকও