বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস থেকে বাদ পড়তে চলেছেন! তবু নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ইকবালের গানেই মুখর হয়ে উঠল!
বাংলার জনরব ডেস্ক : রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ থেকে শুরু করে বিজেপির তাবড় তাবড় নেতারা দাবি করে থাকে ভারত ভাগ বা দেশভাগের অন্যতম কারিগর গীতিকার ইকবাল। তাই দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়া হতে চলেছে ইকবালের জীবনী। এক কথায় গীতিকার ইকবালকে এদেশে ভিলেন তৈরি করার কাজে উঠে পড়ে নেমেছে গেরুয়া শিবির। শুধু গেরুয়া শিবির কেন? সম্প্রতি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেছেন দেশভাগের নেপথ্যে অন্যতম কারিগর ছিলেন এই গীতিকার একবাল তাই তার জীবনী সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়া হতে পারে! এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই সিলেবাস কমিটির প্রস্তাব গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষের সবুজ সংকেতের অপেক্ষা মাত্র।
কিন্তু এত করেও শেষ পর্যন্ত নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রাপ্ত করা গেল না গীতিকার ইকবাল কে। তাঁর কালজয়ী গান’সারে জাঁহা আচ্ছা, হিন্দুস্থান হামারা।’ গানে মুখরিত হয়ে উঠলো নতুন সংসদ ভবন।
#WATCH | 'Sarv-dharma' prayers are underway at the new Parliament building as the inauguration ceremony is led by PM Modi pic.twitter.com/6NyADeDZoM
— ANI (@ANI) May 28, 2023
২৮ মে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। সকালে পুজোপাঠের মাধ্যমে শুরু হয় সংসদ উদ্বোধনের মূল অনুষ্ঠান। যজ্ঞ এবং পুজোর পর সর্বধর্ম প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির হাতে ‘সেঙ্গল’ তুলে দেন তামিলনাড়ুর মঠের অধিনামরা। সেই সেই সেঙ্গল সংসদে প্রতিষ্ঠা করেন প্রধানমন্ত্রী। লোকসভার স্পিকারের আসনের পাশে প্রতিষ্ঠিত হয় এই পবিত্র রাজদণ্ড। বক্তব্যও রাখেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর নতুন সংসদ ভবনে দু’টি শর্ট ফিল্ম দেখানো হয়।
একটি শর্ট ফিল্ম ছিল সংসদ ভবন তৈরির উপর, আরেকটি ছিল সেঙ্গল সংক্রান্ত। নয়া সংসদ ভবনের শর্ট ফিল্মটিতেই ব্য়বহার করা হয়েছে ‘সারে জাঁহা আচ্ছা, হিন্দুস্থান হামারা’ গানটি। নতুন সংসদ ভবন গমগম করে উঠল গানটি। প্রসঙ্গত, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সারে জাঁহা সে আচ্ছা’ গানের গীতিকার পাকিস্তানের ‘জাতীয় কবি’ মহম্মদ ইকবালকে (Muhammad Iqbal) বাদ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেই প্রস্তাব পাস হতে বাকি কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের চূড়ান্ত সম্মতি। তাহলেই পাঠ্যসূচি থেকে বাদ চলে যাবেন ইকবাল। এমতবস্থায় নয়া সংসদ ভবনে বাজল তাঁর লেখা গানই।
শিল্পীর কোন দিন মৃত্যু হয় না শিল্পী বেঁচে থেকে তার অমর কীর্তির মধ্য দিয়ে। এই উপমহাদেশকে গীতিকার ইকবাল এমন কিছু গান উপহার দিয়ে গেছেন যার জন্য তিনি বেঁচে থাকবেন উপমহাদেশের সাধারণ মানুষের মনের মধ্যে। গেরুয়া শিবির বহু চেষ্টা করেও গীতিকার একবালকে ব্রাত্য করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু ঐতিহাসিক নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে দুঃখের হলেও সত্য ইকবালের সেই বিখ্যাত গান সারে জাহা সে আচ্ছা হিন্দুস্তা হামারা সারা বিকল্প কোন গানের সন্ধান পেল না এদেশের তথাকথিত হিন্দুত্ববাদীরা এখানেই। এখানেই ব্রাত্য ইকবালের সাফল্য।