জেলা 

কেন্দ্র থেকে বিজেপিকে হটাতে বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিলেন মমতা

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : বিজেপিকে কেন্দ্র থেকে সরানোর ডাক দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার মুশিদাবাদের শমশেরগঞ্জ এ এক সভায় তিনি সরাসরি ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ওয়ান ইজ টু ওয়ান প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তাব পেশ করলেন। ইতিমধ্যেই সমগ্র দেশ জুড়ে বিরোধীরা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কাজে এগিয়ে এলেন বলা যেতে পারে। ইতিমধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার উত্তরপ্রদেশের বিরোধী দলনেতা অখিলেশ যাদবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিচার করলে দেখা যাবে বিরোধী ঐক্য জোটের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে থাকে। শিবসেনার মতো দল যেখানে রাহুল গান্ধীকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা কংগ্রেসকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে। এর ফলে জোটের ক্ষেত্রে অনেকটা ঘোট হয়ে যেতে পারে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা এই ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান কতটুকু সাড়া মিলবেই তা নিয়ে যথেষ্ট

আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন ‘‘সব বিরোধী দল এক হয়ে যান। ওয়ান টু ওয়ান ফাইট হোক। চেষ্টা করব একসঙ্গে কাজ করার।’’ জাতীয় স্তরে সব বিজেপি বিরোধী দলের জোট চেয়ে অতীতেও সরব হতে দেখা গিয়েছিল মমতাকে। তবে তার পর গঙ্গা-যমুনা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। যার জেরে বিরোধী ঐক্যের ছবি অধরাই থেকে গিয়েছে। বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তার আগে বিজেপির বিজয়রথ ঠেকাতে দেশের সব বিজেপি বিরোধী দলকে এক সুতোয় বাঁধার আহ্বান জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।

মোদী বাহিনীকে ক্ষমতাচ্যুত করতে অতীতে বহু বার বিরোধী জোট গড়তে সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা গিয়েছে মমতাকে। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় তৃতীয় বার ক্ষমতাদখলের পর থেকে নতুন করে বিজেপি বিরোধী ঐক্যে শান দিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দিল্লিতে গিয়ে বিজেপি বিরোধী নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন। সেই সময় কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন মমতা। তবে সেই উদ্যোগ সফল হয়নি। এর পর যত সময় এগিয়েছে, কংগ্রেস-তৃণমূলের মধ্যে দূরত্ব তত বৃদ্ধি পেয়েছে। গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচনের সময় প্রকাশ্যে এসে পড়েছিল দু’পক্ষের লড়াই। কিছু দিন আগে মেঘালয়ে গিয়ে তৃণমূলের ‘ইতিহাস’ তুলে ধরে খোঁচা দিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। ফলে সংঘাতের সুর আরও চড়া হয়। বিজেপিকে হারাতে কংগ্রেস ব্যর্থ। তৃণমূলই বিজেপির একমাত্র বিকল্প বলে প্রচার করছে জোড়াফুল শিবির। তার জেরেই বিজেপি বিরোধী জোট ঘিরে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এর পর গত ২ মার্চ মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে উপনির্বাচনে বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থীর জয়ের পর ‘ক্ষুব্ধ’ মমতা জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, তৃণমূল আর মানুষের জোট হবে। একাই লড়বে তাঁর দল। ওই সময়ই কংগ্রেসকে ছাড়া তৃতীয় ফ্রন্ট গঠন নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়েছিল জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে।

তবে এই ছবিটা কিছু দিনের মধ্যেই বদলায়। মোদী পদবি নিয়ে মন্তব্যের জেরে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ করা হয়। এই নিয়ে রাহুলের পাশে দাঁড়িয়ে সরব হন মমতা। রাহুলের নাম না করলেও টুইটারে সনিয়া-পুত্রের পাশে দাঁড়িয়েই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু মমতা নন, দেশের বিভিন্ন বিরোধী নেতাও রাহুলের পাশে দাঁড়ান। এই আবহে গত মার্চ মাসে ধর্মতলায় ধর্না মঞ্চ থেকে মমতার গলায় আবার বিরোধী জোটের কথা শোনা গিয়েছিল। বলেছিলেন, ‘‘সব বিরোধীকে বলব, এমন কোনও বিরোধী দল নেই, যাদের বিরুদ্ধে অত্যাচার হচ্ছে না। কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে! কে বাকি রয়েছে? সবাই বলতে পারে না, চুপচাপ থাকে। সব বিরোধীকে একসঙ্গে লড়তে হবে। বিজেপিকে কুর্সি থেকে হটাতে হবে।’’ শুক্রবারও সেই একই সুর শোনা গেল মমতা-কণ্ঠে। বললেন, ‘‘যে যেখানে শক্তিশালী, সে সেখানে লড়ুক।’’

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ