কলকাতা 

সম্ভাব্য ঈদের দিনেই পরীক্ষা রাখলো ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, মমতার রাজত্বে মুসলিমদের প্রতি তাচ্ছিল্য ধারাবাহিকভাবেই চলছে!

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বিশেষ প্রতিনিধি: বিশ্বের অন্যতম প্রথম সারির উৎসব হচ্ছে ঈদুল ফিতর। সারা পৃথিবীর মুসলমানরা এই দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদা সহকারে পালন করে থাকেন। একমাস ব্যাপী সিয়াম সাধনার পর আসে খুশির ঈদ ।এই ঈদ উপলক্ষে প্রতিটি মুসলিম পরিবারে এক আনন্দময় পরিবেশ লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু দুঃখের হলেও সত্য বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই ঈদের দিনে বা ঈদের পরের দিনে বা সম্ভাব্য ঈদের দিনে পরীক্ষা ও সাক্ষাৎকার গুলি নিয়ে নেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করে থাকে।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করে থাকেন এই রাজ্যের সংখ্যালঘুদের সঙ্গে তিনি আছেন তিনি থাকবেন। কিন্তু তা সত্বেও দেখা যাচ্ছে প্রতিবছরই সম্ভাব্য ঈদের দিনে পরীক্ষা রাখা হয়। সাগরদিঘি বিধানসভার উপনির্বাচনে বিপুল ভোটে হেরে যাওয়ার পর মনে করা হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার অন্তত তার রাজত্বে সম্ভাব্য ঈদের দিনে কোন বিশ্ববিদ্যালয়, কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরীক্ষা বা সাক্ষাৎকারের দিন ঘোষণা করবে না। কিন্তু এটা যে বাস্তবায়ন হবে না এ রাজ্যের সংখ্যালঘু পরিবারের মেধাবী ছেলে মেয়েদেরকে  কোনো রকম ভাবেই এই রাজ্য প্রশাসন যে গুরুত্ব দেন না তা বারবার প্রমাণিত হয়েছে এবারও প্রমাণিত হলো।

শুধু ইফতার মজলিসে গিয়ে কিছু মানুষের সঙ্গে ইফতার করলেই সংখ্যালঘু সমাজের উন্নয়ন হবে না এটা সরকারের কর্তা ব্যক্তিদের মনে রাখা উচিত। রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের মনে রাখা উচিত এই রাজ্যের অনেক মুসলিম ছেলে মেয়ে এখন মেডিকেলে পড়াশোনা করছে। তাহলে কোন উদ্দেশ্য এবং কোন লক্ষ্য নিয়ে ২৪শে এপ্রিল পরীক্ষার দিন ফেলা হলো ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কেন প্রতিবছর এই কাণ্ড ঘটে তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীরব থাকেন কেন তাও জানতে চাই এ রাজ্যের সংখ্যালঘু সমাজ?

নিয়ম মত যদি ২৯ টা রোজা হয় তাহলে ঈদ হবে ২২ শে এপ্রিল আর যদি ৩০ টা রোজা হয় তাহলে ঈদ হবে ২৩ শে এপ্রিল রবিবার। কিন্তু দেখা যাচ্ছে ২৩ এপ্রিল বেলা নটা থেকে কলকাতার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা শুরু হবে। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠেছে যদি ২৩ শে এপ্রিল যদি  ঈদ হয় তাহলে কিভাবে মুসলিম ছেলেমেয়েরা বেলা নটার সময় গিয়ে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা দেবে? পরীক্ষা সূচি করার আগে স্বাস্থ্য দপ্তর কি ভেবে দেখেনি যে এই রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী মুসলিম সমাজের বড় উৎসব ঈদ পালিত হবে ২৩ শে এপ্রিল! কেন পরীক্ষা রাখা হলো এ প্রশ্ন জানতে চাই রাজ্যের সাধারণ মুসলিম সমাজ? নাকি শুধুমাত্র ভোটের জন্যই মুসলিম সমাজের জন্য মায়া কান্না তাদের ছেলেমেয়েদের তাদের উৎসবের প্রতি কোন নজর নেই সরকারে এ প্রশ্নের উত্তর জানতে চাই এ রাজ্যে সাধারন মানুষ!

মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের অনুরোধ আপনি কথায় কথায় বলেন রাজ্যের সংখ্যালঘুদের নব্বই শতাংশ কাজ করে দিয়েছেন। 90% কাজের নমুনা যদি এটা হয় ঈদের দিনে পরীক্ষার করার ব্যবস্থা করা তাহলে আর নতুন করে বলার কিছু থাকে না। মুখ্যমন্ত্রী ভাবুন আর চিন্তা করুন। এই রাজ্যের মুসলিম সমাজ কেন আস্তে আস্তে আপনার কাছ থেকে সরে যাচ্ছে? বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর একটা বিশেষ উৎসবকে মর্যাদা যদি দিতে না পারা যায় তাহলে সেক্ষেত্রে সম্প্রীতির বার্তা অর্থহীন হয়ে পড়ে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী।!


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ