বেসরকারি বিদ্যালয়গুলিতে শিশুদের সুরক্ষায় কাউন্সিলর নিয়োগের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
বিশেষ প্রতিনিধি : বেসরকারি বিদ্যালয়গুলিতে লাগাতর শিশু নির্যাতনের অভিযোগ এক নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে উঠেছে । কলকাতার একটি বেসরকারি স্কুলে তিন বছরের একটি শিশুকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে। পরে শহরের আরও কয়েকটি স্কুলে একই ঘটনা সামনে আসে। প্রথম স্কুলটির ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় নির্যাতিতা শিশুর পরিবার। তাদের অভিযোগ ছিল, স্কুল কর্তৃপক্ষও নিষ্ক্রিয় রয়েছে। শিশুর মেডিকেল রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়া হয়নি। আদালত আজ নির্দেশ দেয় শিশুদের সুরক্ষায় স্কুলগুলিতে কাউন্সিলর (পরামর্শদাতা) নিয়োগের । কাউন্সিলর নিয়োগসহ অন্য নির্দেশিকা লাগু করতে এক বছর সময় পাবে স্কুলগুলি। নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া।
মামলার শুনানির পর বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। স্কুলে যৌন নিগ্রহ রুখতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে এই কমিটি তার নির্দেশিকা তৈরি করবে। সেই নির্দেশিকা দেখে আদালত পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানান তিনি। আজ সেই কমিটির নির্দেশিকা হাইকোর্টে জমা পড়ে।
এরপর বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া নির্দেশ দেন, সব স্কুলকে কমিটির জমা দেওয়া নির্দেশিকা লাগু করতে হবে। তার মধ্যে রয়েছে কাউন্সিলর নিয়োগের বিষয়টিও। কাউন্সিলর, যিনি শিশুদের যৌন নিগ্রহ, ভালো স্পর্শ, খারাপ স্পর্শ সম্পর্কে শেখাবেন। আদালত জানিয়েছে, ৬ মাস পর আদৌ নির্দেশিকাগুলির প্রয়োগ করা হয়েছে কি না বা কতগুলি স্কুলে প্রয়োগ করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখবে তারা। আদালতের নির্দেশ সম্পর্কে আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা তিবরেওয়াল বলেন, “মামলাতে হাইকোর্টের তত্ত্বাবধানে একটি গাইডলাইন বানানো হয়েছে। সেই গাইডলাইন প্রয়োগ করতে বলা হয়েছে।”
- প্রত্যেক স্কুলে একটি স্ট্যান্ডার্ড কমিটি গঠন করতে হবে
- স্কুলকে একজন কাউন্সিলর (পরামর্শদাতা) নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যিনি শিশুদের ভালো স্পর্শ, খারাপ স্পর্শ সম্পর্কে শেখাবেন।
- স্ট্যান্ডার্ড কমিটিতে অভিভাবকদেরও রাখতে হবে
- রাজ্যের সব স্কুল(শিশুদের স্কুল)-কে নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে
- স্কুল নিজেদের দায়িত্ব এড়াতে পারবে না
- স্কুল যখন কোনও কর্মী নিয়োগ করবে তখন তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জমা নিতে হবে
প্রতি এক বছর অন্তর স্কুলগুলিকে তাদের শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীদের আচার আচরণ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি করে হলফনামা জমা নিতে হবে।