কলকাতা 

Calcutta High Court: ‘দুর্নীতির সমুদ্র থেকে মানিককে খুঁজে বের করতে হবে সিবিআইকে!৪২৫০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল হতে পারে,শিক্ষা দফতরের কেউ কেউ হয়তো হাতে হাত রেখে এই দুর্নীতি করেছিলেন’ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিস্ফোরক বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বিশেষ প্রতিনিধি: বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় সিবিআইকে তীব্র ভাষায় ভর্ৎসনা করলো বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি এদিন বলেন, প্রায় ৪২৫০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরির চলে যেতে পারে। দুর্নীতি হয়েছে সীমাহীন ভাবে। মানিক ভট্টাচার্যের মিথ্যা বলা অভ্যাস আছে। তাঁর কাছ থেকে সত্য কথাটি বের করতে পারছে না সিবিআই। সিবিআই এর তুলনায় তিনি নিজে ভালো জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবেন এমনকি কলকাতা হাইকোর্টের অনেক আইনজীবী আছেন যারা এই ধরনের জিজ্ঞাসা বাদ করতে পারেন।টেট ২০১৪ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বুধবার তিনি বলেন, “নির্দ্বিধায় মিথ্যা বলার অভ্যাস মানিক ভট্টাচার্যের আছে৷ আদালতের সামনে সেটা প্রমাণিতও হয়েছে।”

সিবিআই সূত্রে খবর, ২০১৪-র টেটের OMR সরবরাহের জন্য কোনও টেন্ডার ডাকা হয়নি, জিজ্ঞাসাবাদে এমনটাই জানিয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য। রিপোর্টে সিবিআইএর দাবি অনুযায়ী মানিক আরও জানিয়েছেন, ২০১২ র টেটের জন্য টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। সেখানেই প্রথম বরাত পায় এস.বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি। ভাল কাজ করায় এবং অন্য কেউ টেন্ডার জমা না দেওয়ায় ফের বরাত দেওয়া হয় এস.বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানিকে।

Advertisement

সিবিআই এর রিপোর্ট দেখে অখুশি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এটা কোনও জিজ্ঞাসাবাদ হয়েছে ? এর থেকে তো আমি ভাল জিজ্ঞাসাবাদ করি। হাইকোর্টের অনেক আইনজীবীও এর থেকে ভাল জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। তদন্ত শেষ করতে হবে তো!”

বিচারপতি আরও বলেন, “এত ভুরি ভুরি অনিয়মের অভিযোগ আসছে। আদালতের কাছে এত তথ্য প্রমাণ আছে যার ভিত্তিতে ২০১৪র টেটের ভিত্তিতে সংগঠিত হওয়া ২০১৬ র নিয়োগপ্রক্রিয়া খারিজ করে দেওয়া যায়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে এটা করলে কিছু বৈধভাবে চাকরি পাওয়া ব্যক্তিরাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। একজনও বৈধপ্রার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমার ভাল লাগবে না৷ এখনো এই দুর্নীতিকে ঢাকতে কিছু দালাল বাজার ঘুরে বেড়াচ্ছে।” Confidential Section নামে একটি সংস্থাকে অভিহিত করে টেন্ডার ছাড়া কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে ।এটা কী হচ্ছে ? – প্রশ্ন করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “দুর্নীতির সব নদী একই সমুদ্রে গিয়ে মিশেছে , সমুদ্র থেকে মানিক বেছে তুলতে হবে। দুর্নীতির সমুদ্রে আপনারা সাহায্য করার পরেও আমি হাবুডুবু খাচ্ছি, সিবিআই তো কিছুই করছে না। তারা তো জানেও না পিছনের দরজা দিয়ে কোন কাজ হয়েছে। এই সরকারের শিক্ষাদফতর কী করে এই দুর্নীতি দেখেও তাদের চোখ বন্ধ করে রাখল সেটা ভেবে আমি বিস্মিত। শিক্ষা দফতরের কেউ কেউ হয়তো হাতে হাত রেখে এই দুর্নীতি করেছিলেন৷”

প্রায় ৪২৫০০ জনের এই প্যানেল থাকবে না বাতিল হবে সে বিষয়ে সব পক্ষের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে আদালত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি। আগামী সপ্তাহে ফের মামলার শুনানি।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ