কলকাতা দেশ 

অন্ধপ্রদেশে সিবিআই রাজ্যের অনুমতি ছাড়া কোনো তদন্ত করতে পারবে না, সিদ্ধান্ত চন্দ্রবাবু নাইডু সরকারের , মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নাইডু সিদ্ধান্ত সমর্থন করলেন

শেয়ার করুন
  • 6
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : স্বাধীন ভারতের সম্ভবত চন্দ্রবাবু নাইডুই প্রথম যিনি কেন্দ্রের এক এজেন্সীর সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করলেন । অন্ধপ্রদেশ সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই রাজ্যে

সিবিআই কোনও মামলার তদন্ত করতে পারবে না। এ ব্যাপারে রাজ্যের তরফ থেকে যে সাধারণ সম্মতি দেওয়া থাকে তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে অন্ধপ্রদেশ সরকার । সরকারি কোনো কাজে রাজ্যে প্রবেশ করতে গেলে এই কেন্দ্রীয় গোয়ন্দা এজেন্সিকে  আগে থেকে  অন্ধ্র সরকারের কাছে অনুমতি নিতে হবে ।

Advertisement

আসলে সিবিআইকে রাজ্যে প্রবেশের পথ বন্ধ করে প্রকারান্তরে কেন্দ্রকে সমঝে দিয়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।
অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি চন্দ্রবাবু নাইডুর প্রশংসা করে বলেছেন, চন্দ্রবাবু নাইডু রাজ্যে সিবিআইকে ঢোকার পথ বন্ধ করে দিয়ে সঠিক কাজ করেছেন। বিজেপি সিবিআই, ইডি ইত্যাদি সংস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করছে।

জানা গেছে গত ৮ নভেম্বর এদিন অন্ধ্র সরকার এক  বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে  সিবিআইয়ের কাজ রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখা দেখবে। নতুন নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্যে অবস্থিত কেন্দ্রীয় যেকোনও প্রতিষ্ঠানে সন্দেহ মনে হলে তল্লাশি চালাতে পারবে রাজ্যের দুর্নীতিদমন শাখা। অন্ধ্রপ্রদেশের টিডিপি নেতা লঙ্কা দিনাকর বলেছেন, গত কয়েকমাসে সিবিআইয়ের কাজ দেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মোদী সরকারের জন্য সিবিআই নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। বিরোধীদের ফাঁসাতে সিবিআইকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
রাজ্য সরকার সেই পথে হাঁটবে কিনা তা সময়ই বলবে।
কাজেই রাজ্যে প্রবেশের জন্য আগে অন্ধ্র সরকারের কাছে অনুমতি নিতে হবে সিবিআই-কে।

সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এর কারণ হিসেবে বর্তমানে সিবিআই নিয়ে যে বিতর্ক চলছে এবং সুপ্রিম কোর্টে চলা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে, এজেন্সির উপর ভরসাহীনতার কারণ দেখিয়ে সম্মতি প্রত্যাহার করা হয়েছে।

তবে অন্ধ্র সরকারের এ সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের সঙ্গে চন্দ্রবাবু নাইডুর লড়াই ঘোষণা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। চন্দ্রবাবু অ-বিজেপি দলগুলি নিয়ে জোট তৈরির চেষ্টা করছেন।

চন্দ্রবাবু নাইডুর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে  এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়  নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ধিত কোর কমিটির বৈঠকে ভাষণ দিতে গিয়ে  বলেন, “রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও সিবিআইয়ের মতন কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে ধ্বংস করে দিতে চাইছে কেন্দ্র। কিন্তু আমরা তা হতে দেব না।”একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “চন্দ্রবাবু নাইডু তো ভুল কিছু বলেননি। যা পরিস্থিতি চলছে, তাতে আমাদেরও আইন ঘেঁটে দেখতে হবে।”

গত ৮ নভেম্বর অন্ধ্র প্রদেশের স্বরাষ্ট্র দফতরের মুখ্য সচিব এ আর অনুরাধা এ সম্পর্কিত নির্দেশনামা জারি করেছেন। সরকারি নির্দেশ নং ১৭৬-এ বলা হয়েছে, ১৯৪৬ সালের দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এসট্যাবলিশমেন্ট অ্যাক্টের পাঁচ নম্বর ধারায় বর্ণিত বিশেষ ক্ষমতা প্রত্যাহৃত হল।সরকারি নির্দেশে সম্মতি প্রত্যাহারের ফলে সিবিআই এবার অন্ধ্র সরকারের অনুমতি ছাড়া সে রাজ্যে সিবিআই কোনো তদন্ত চালাতে পারবে না, এমনকি করতে পারবে না কোনও তদন্তও।

এর আগে চন্দ্রবাবু নাইডু কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার চক্রান্তের অভিযোগ এনেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এ কাজে লাগানো হচ্ছে সরকারি এজেন্সিগুলিকে। তাঁর অভিযোগ ছিল, রাজ্যের বিরোধী নেতা ওয়াই এস জগনমোহন রেড্ডির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সিবিআই ও আয়কর বিভাগকে কাজে লাগিয়ে তাঁর সরকারকে ফেলে দেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এসট্যাবলিশমেন্ট অ্যাক্টের পাঁচ নম্বর ধারানুযায়ী সিবিআই যেমন দেশের সর্বত্র কাজ করতে পারে, তেমনই ওই একই আইনের ছ নম্বর ধারানুসারে কোনও একটি রাজ্যের অনুমতি ব্যতিরেকে সে রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে না তারা।

 


শেয়ার করুন
  • 6
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

15 − ten =