দেশ প্রচ্ছদ 

Rahul Gandhi: গান্ধী পরিবারের উত্তরসূরী রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রা দেশের সুমহান ঐতিহ্য সংস্কৃতি এবং সংবিধান বাঁচানোর স্বার্থে, এই যাত্রা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সেখ ইবাদুল ইসলাম: গণমাধ্যমের প্রচারে তেমনভাবে নেই রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রা। কিন্তু কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত যে যাত্রার সূচনা করেছেন কংগ্রেস নেতা ও সাংসদ রাহুল গান্ধী তা ভারতবর্ষে এর আগে কোনদিন হয়নি। মহাত্মা গান্ধী ইংরেজদের অপশাসনের বিরুদ্ধে, অন্যায় ভাবে কর চাপানোর প্রতিবাদে ডান্ডি অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন। সেই অভিযানকে কেন্দ্র করে সমগ্র ভারতজুড়ে যে উৎসাহ উদ্দীপনা চোখে পড়েছিল ইতিহাস তার সাক্ষী দেয়। সেই উদ্দীপনার নেপথ্যে ছিল স্বাধীন ভারতের স্বপ্ন। প্রতিটা নাগরিক ভেবেছিল ব্রিটিশের অপসাশন থেকে মুক্ত হলে দেশের প্রতিটা মানুষ স্বাচ্ছন্দে জীবনযাপন করতে পারবে।

কিন্তু দুঃখের হলেও সত্য স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর যখন আমরা হিসাব মেলাতে বসি তখন হিসাব মেলে না। প্রবীনরা বলে থাকেন এর চেয়ে ব্রিটিশরাই ভালো ছিল। ৭৫ বছরের মধ্যে বিগত আট বছর ধরে এদেশে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির বন্ধনকে যেভাবে ভাঙ্গা হয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। দেশ স্বাধীন হয়েছিল ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হয়ে কিন্তু সেই ভাগে সায় ছিল না এদেশের প্রতিটা নাগরিকের। কতকগুলো নেতা নিজেদের স্বার্থকে সিদ্ধি করার জন্য ভারত ভাগে সায় দিয়েছিলেন। এর জন্য তো এদেশের কোটি কোটি মানুষ দায়ী ছিল না। তারপরেও একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে নিশানা বানানো হচ্ছে।

Advertisement

দেশের সার্বিক উন্নয়ন নয় এদেশের সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিরুদ্ধে যত কুৎসামূলক প্রসার চালানো হবে ততই যেন ভোটের সংখ্যা বাড়ছে। বিভেদের প্রচার সবচেয়ে বেশি হচ্ছে, দেশ যেন এক সংকটের মধ্যে বিরাজ করছে। দেশের আসল সমস্যা শিক্ষা স্বাস্থ্য কর্মসংস্থান রুটি কাপড়া মাকানের কথা মানুষকে ভুলিয়ে দিয়ে ধর্মকে সামনে রেখে বিভেদ তৈরি করা হচ্ছে, সেই বিভেদের প্রাচীর যেন দিন দিন বেড়েই চলেছে ফলে উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হওয়ার চেয়ে স্লথ হয়ে যাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে ভারতের সুমহান বার্তাকে সামনে রেখে গান্ধী পরিবারের উত্তরসূরী রাহুল গান্ধী ভারত জোড়ো যাত্রা শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে সেই যাত্রা কেরল, তামিলনাড়ু,কর্ণাটক, অন্ধপ্রদেশ তেলেঙ্গানা পেরিয়ে প্রবেশ করেছে মহারাষ্ট্রে এরপর সেখান থেকে মধ্যপ্রদেশ তারপর উত্তর প্রদেশ হয়ে দিল্লি পেরিয়ে পাঞ্জাব হয়ে পৌঁছে যাবে কাশ্মীরে। এভাবেই ভারতকে এক সূত্রে গাঁথার কাজটি করে চলেছেন গান্ধী পরিবারের উত্তরসূরী রাহুল গান্ধী। আমরা যারা ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলি, আমরা যারা দেশের স্বার্থের কথা বলি, আমরা যারা দেশের মানুষের কথা বলি, আমরা যারা রুটি কাপড়া মাকানের দাবির কথা বলি তাদের সকলের উচিত রাহুল গান্ধীর এই যাত্রায় শামিল হওয়া।

দুঃখের হলেও সত্য মাইলের পর মাইল রাহুল গান্ধী হেঁটে চলেছেন অথচ ভারতবর্ষের বৃহৎ সংবাদমাধ্যমগুলি চুপ করে বসে আছে। শুধু তাই নয় আমাদের কলকাতার কিছু সংবাদ মাধ্যম যারা কথায় কথায় প্রতিদিন সন্ধ্যেবেলায় ঘন্টাখানেক করতে শুরু করে দেন তারাও রাহুল গান্ধীকে নিয়ে নিরব রয়েছে। কিন্তু যারা দেশের জন্য সত্যিকার অর্থে কাজ করতে চান তারা অবশ্যই রাহুল গান্ধীর এই ভারত জোড়ো যাত্রার কথা প্রচার করবে। কারণ রাহুল গান্ধী ভোটের জন্য যাত্রা করছেন না। রাহুল গান্ধীর এই লড়াই, এই পরিশ্রম দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য। রাহুল গান্ধীর এই লড়াই দেশের সংবিধান বাঁচানোর লড়াই। রাহুল গান্ধীর এই পদযাত্রার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে অক্ষুন্ন রাখার জন্য।

কিন্তু দুঃখের হলেও সত্য আমাদের দেশের কিছু সংবাদ মাধ্যম রাহুল গান্ধীর এই ভারত জোড়ো যাত্রাকে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে। দেশের মানুষের সমস্যাগুলোকে সামনে আনার জন্য রাহুল গান্ধীকে ইমরান খানের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে। কারণ রাহুল গান্ধী প্রশ্ন তুলেছেন যুব সম্প্রদায়ের স্বার্থে, দেশের গরীব নিম্নবিত্ত মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের স্বার্থে, রাহুল গান্ধী প্রশ্ন তুলেছেন এদেশের মানুষকে প্রকৃত অর্থে স্বাধীনতার স্বাদ পৌঁছে দেওয়ার স্বার্থে, রাহুল গান্ধী প্রশ্ন তুলেছেন আর্থিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে, তাই তিনি গণমাধ্যমের চোখে খারাপ হয়ে গেছেন।

কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি এই ভারতবর্ষের মানুষ সমস্ত অপপ্রচারের উত্তর দেবেন। আপনারা হয়তো ভাবছেন আমি রাহুল গান্ধীর একজন ফ্যান, তা কিন্তু নয়। কিন্তু রাহুল গান্ধী যে উদ্দেশ্য লক্ষ্য নিয়ে এই যাত্রা শুরু করেছেন এই আন্দোলন শুরু করেছেন,নিরব বিপ্লব তৈরি করার চেষ্টা করছেন তাকে সমর্থন না করলে একজন ভারতবাসী হিসেবে লজ্জিত হব। তাই রাহুলের এই উদ্যোগকে আমরা কুর্নিশ জানাচ্ছি। আগামী দিনে স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে রাহুল গান্ধীর এই উদ্যোগ এই যাত্রা স্বর্ণাক্ষরে করে লেখা থাকবে। এই বিশ্বাস আমাদের রয়েছে।

 

 

 

 

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ