কলকাতা 

Partha Chatterjee: পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর পর দল থেকেও সাসপেন্ড করা হলো, মুকুল নেই, সুব্রত নেই, পার্থও নেই দলে মমতা বড্ড একা হয়ে গেল

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : একসময় তিনি ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান। কুনাল ঘোষ থেকে শুরু করে মুকুল রায় সবার বিরুদ্ধে দল থেকে বের করানো সিদ্ধান্ত তিনি নিতেন আজ বৃহস্পতিবার বুমেরাং হয়ে গেল। পার্থ চট্টোপাধ্যায় কে দল থেকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।

আজ সকাল থেকেই বিষয়টি সামনে আসতে শুরু করে। এককালে মমতার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত কুনাল ঘোষ বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ট বৃত্তের নেতা কুনাল ঘোষ জানিয়ে দিয়েছিলেন অবিলম্বে পার্থবাবুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে দলকে। কুনালের আক্রমণাত্মক টুইটের পরেই বিকেলে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়া হয় পার্থকে আর সন্ধ্যাবেলায় দল থেকে সাসপেন্ড করা হলো। সাম্প্রতিক অতীতে তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে এইভাবে দল ব্যবস্থা নিয়েছে তা দেখা যায়নি।

Advertisement

কুনাল ঘোষকে জেলে পাঠানোর পর দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল আর মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর দল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। কিন্তু কোন মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর তাকে সরাসরি দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে এই ঘটনা তৃণমূল কংগ্রেসের আমলে সেভাবে দেখা যায়নি। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত রীতিমতো বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত বলা হলেও এর ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বৃত্ত কমে যাচ্ছে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে।

কারন এই কথা মনে রাখতে হবে মুকুল রায়ের পর পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একেবারে ঘনিষ্ঠ। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রথম ব্যক্তি যদি হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাহলে প্রতিষ্ঠার দিন থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দ্বিতীয় ব্যক্তি ছিলেন মুকুল রায় তৃতীয় তৃতীয় ব্যক্তি ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর পার্থ চট্টোপাধ্যায় দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং মন্ত্রিসভাতেও তিনি দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মত ব্রিলিয়ান্ট রাজনীতিবিদ তৃণমূল কংগ্রেসের থাকলেও তাকেও সেই ভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়নি যতটা গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে।

ঘটনা সূত্রপাত আজ সকালে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ অবিলম্বে পার্থবাবুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেন।কুণালের সেই দাবির অব্যবহিত পরেই জানা যায়, বিকাল ৫টায় তৃণমূল ভবনে দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠক ডেকেছেন অভিষেক। সেটিও কুণালই টুইট করে জানান। এ-ও জানান যে, তাঁকেও ওই বৈঠকে থাকতে বলা হয়েছে।

তৃণমূলের ওই কমিটিতে অভিষেক এবং পার্থ ছাড়াও রয়েছেন রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, রাজ্যের তিন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং প্রবীণ সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সংসদের অভিবেশন চলায় সুদীপ আপাতত দিল্লিতে। তাই তিনি ওই বৈঠকে ছিলেন না। প্রসঙ্গত, পার্থ গ্রেফতার হওয়ার পরে তৃণমূলের প্রথম প্রতিক্রিয়া জানানোর আগে অভিষেকের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ওই তিন মন্ত্রী। সেই বৈঠকটি অবশ্য হয়েছিল অভিষেকের ক্যামাক স্ট্রিটের অফিসে। সংযোজন ছিলেন কুণাল। যেমন তিনি সংযোজিত ছিলেন বৃহস্পতিবারের বৈঠকেও। এ ছাড়াও মন্ত্রী ব্রাত্য বসুকেও ওই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ছিলেন মন্ত্রী মলয় ঘটকও।

দুঃখজনক বিষয় হলো তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্রমশ যেন একা হয়ে পড়ছেন। তার একমাত্র বিশ্বাস ভাজন এবং আস্থাশীল ব্যক্তি ছিলেন মুকুল রায় তিনি কয়েক বছর আগে দল ছেড়ে চলে গেছেন তারপর কোথাও যেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে একা অনুভব করছিলেন। শিল্পপতন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অনেকটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোদ্ধা হিসাবে কাজ করছিলেন। তবে সুব্রত মুখোপাধ্যায় কে খুব বেশি গুরুত্ব না দিলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক বুদ্ধি জন্য অবশ্যই সুব্রত মুখার্জির উপরে আস্থা রাখতেন। সুব্রত মুখোপাধ্যায় আজ আর নেই, পার্থ এখন ইডির হাতে বন্দী। নবান্নের ১৪ তলায় বসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু স্মৃতি রোমন্থন করবেন মুকুল পার্থ সুব্রতের।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ