কলকাতা 

Babita Sarkar: বরখাস্ত হওয়া মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতার চাকরিটা পাওয়ার পর কান্নায় ভেঙে পড়লেন ববিতা, টাকাটা শুধু নিজের জন্য নয়, ভাল কাজেও ব্যবহার করব বললেন দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের যোদ্ধা

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : বরখাস্ত হওয়া মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতা অধিকারী চাকরি ববিতা সরকারকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। একইসঙ্গে অঙ্কিতা অধিকারীর ফিরিয়ে দেওয়া সাত লক্ষ ৯৬ হাজার ৪৪২ টাকা সুদ সহ ববিতাকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এর মতে প্রকৃতপক্ষে চাকরিটা পাওয়ার কথা ছিল ববিতা সরকারের কিন্তু নিয়োগে অনিয়ম হওয়ার কারণেই ওই চাকরি পায় অঙ্কিতা অধিকারী। তাই এখনও পর্যন্ত ববিতা সরকার চাকরি পায়নি এই অবস্থায় ববিতা সরকারকে অঙ্কিতার চাকরি ফিরিয়ে দেয়া হলো এবং অঙ্কিতা অধিকারী যেদিন থেকে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন সেদিন থেকেই ববিতা সরকারের চাকরি হলো বলে নির্দেশ দিয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

এই নির্দেশের সঙ্গে সঙ্গে অঙ্কিতার ফিরিয়ে দেওয়া বেতনের প্রথম অংশের টাকা সুদসহ ববিতাকে ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এই রায় শোনার পর ববিতার সরকার কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন এটা আমার কাছে প্রত্যাশিত ছিল না তবে বিচারপতি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার ন্যায্য বলে তিনি মনে করেন। এতগুলো টাকা একসঙ্গে পাওয়ার পর তিনি কী করবেন সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে ববিতার সরকার বলেন এটা কোনো ভালো কাজে আমি ব্যবহার করবো।

Advertisement

নিয়ম মেনে নিয়োগ হলে এত দিনে শিক্ষিকা হিসেবে চার বছর পার করতেন। কিন্তু এসএসসির মেধা তালিকায় নাম ওঠার পরও ববিতা সরকারের সেই সুযোগ হয়নি। গত চার বছরে স্কুলে পড়াতে পারেননি ববিতা। বদলে এক মন্ত্রীকন্যার জন্য প্রাপ্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়ার লড়াই লড়েছেন। শুক্রবার সেই লড়াই থেমে জয়ের মুকুট হাতে এসেছে তাঁর।

শুক্রবার আদালতের নির্দেশের পর হাসিমুখেই সাংবাদিকদের সামনে এসেছিলেন ববিতা। হাত তুলে জয়ের প্রতীকও দেখান। কিন্তু কথা বলতে শুরু করেই কেঁদে ফেলেন। তাঁর কাছে আদালতের নির্দেশের পর প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা। স্বামীকে পাশে নিয়েই দাঁড়িয়েছিলেন শিলিগুড়ির কন্যা, যাঁর লড়াই এখন গোটা বাংলার মুখে মুখে। স্বামীর কাঁধে মাথা রেখে মুখে হাসি চোখে জল নিয়ে ববিতা বলেন, ‘‘ওকে ধন্যবাদ। ও পাশে ছিল বলেই এই দিন দেখতে পেয়েছি।’’

কিন্তু এত দিন তো সেই অর্থে স্কুলে পড়াতে হয়নি তাঁকে। অথচ বেতনের অর্থ হাতে পাচ্ছেন। ববিতাকে প্রশ্ন করা হয়, কেউ এ নিয়ে কিছু বলেনি তাঁকে? ববিতার গাল বেয়ে তখনও নামছে জল। বললেন, ‘‘সময় ফেরত আসে না। আমার বয়স তো আর ফিরবে না। গত চার বছরে আমি রোজ স্বপ্ন দেখেছি যে, স্কুলে পড়াচ্ছি। কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেঙেছে কঠোর বাস্তবে। ভাবতেই পারিনি কখনও এই দিন আসবে। তবু হতাশ হয়ে লড়াই ছেড়ে দিইনি। আজ আদালতের এই রায়ের জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। তবে আমি খুশি। হয়তো আমার বয়স চার বছর পিছোবে না, কিন্তু আদালতের নির্দেশে চার বছর আগের সেই সময় আমার জীবনে ফেরত এসেছে। আমি সেই সমস্ত সুযোগ-সুবিধা পাব, যা চার বছর আগে আমার প্রাপ্য ছিল।’’

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ